Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে চোখের ক্ষীণদৃষ্টি সমস্যা

চক্ষু চিকিৎসাসেবায় এগিয়ে এসেছে ব্র্যাক ও ভিশন স্প্রিং

| প্রকাশের সময় : ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : দেশে ক্ষীণদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষের সংখ্যা উদ্বেগজনকভাবে বাড়ছে। মানুষের চক্ষু চিকিৎসাসেবা দেয়ার উদ্যোগের অংশ হিসেবে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের উদ্যোগে ২০০৬ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত দেশের ৬১টি জেলায় ৪৬ লাখ ৮৭ হাজার ৬৩৯ জনকে চক্ষু পরীক্ষার আওতায় নিয়ে আসা হয়। এর মধ্যে ৩০ লাখ ৭৬ হাজার ৭৮০ জনই ক্ষীণদৃষ্টি সম্পন্ন চিহ্নিত করা হয়েছে। অর্থাৎ এদের মধ্যে শতকরা হিসাবে প্রায় ৬৬ শতাংশই ক্ষীণদৃষ্টিসম্পন্ন। তাই ক্ষীণদৃষ্টি সম্পন্ন এইসব মানুষের চোখের চিকিৎসাসেবায় এগিয়ে এসেছে ব্র্যাক। এরই অংশ হিসেবে ব্র্যাক এইসব মানুষদের মধ্যে ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৭৭৭টি স্বল্পমূল্যে মানসম্পন্ন চশমা প্রদান করেছে।
গতকাল রাজধানীর মহাখালির ব্র্যাক সেন্টারে আয়োজিত ‘১০ লাখ চশমা : উজ্জ্বল হউক দৃষ্টি’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে এই তথ্য তুলে ধরা হয়। ব্র্যাক ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ভিশন স্প্রিং যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজনে করে। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট) এএইচএম এনায়েত হোসেন। সভাপতিত্ব করেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ডা. মুহাম্মাদ মুসা।
চশমা প্রদানের পাশাপাশি চক্ষু পরীক্ষা ও চোখের রোগের জন্য বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে প্রেরণ ও প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে ব্র্যাকের প্রায় ৩২ হাজার ৯১৭ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যসেবিকা উল্লেখযোগ্য অবদান রেখেছেন। তাদের স্বীকৃতি হিসেবে অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যসেবিকাসহ মোট ২৪ জনকে বিশেষভাবে পুরস্কার দেয়া হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যসেবিকারা হলেনÑ জামালপুরের মনোয়ারা বেগম, একই জেলার মিনানুর খাতুন, বাগের হাটের মেরিনা বেগম, একই জেলার মাসুমা বেগম, চাপাইনবাবগঞ্জের টগরী খাতুন, সাতক্ষীরার সাধনা রানী, পাবনার আছিয়া বেগম, গোপালগঞ্জের পূরবী মÐল, নরসিংদীর মোসলেমা বেগম, নড়াইলের সফুরা বেগম। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেকের হাতে একটি করে সনদ ও মোবাইল সেট তুলে দেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্ল্যানিং অ্যান্ড ডেভলপমেন্ট) এএইচএম এনায়েত হোসেন, ব্র্যাকের ভাইস চেয়ার পার্সন ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী, ভিশন স্প্রিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ডা. জর্দান ক্যাসালো
প্রধান অতিথির বক্তব্যে এএইচএম এনায়েত হোসেন বলেন, অন্ধত্ব সমস্যা মোকাবেলায় অনেক সময় ইচ্ছা থাকলেও সরকারের পক্ষে দেশের হাওড় ও বিভিন্ন চরাঞ্চলে কাজ করা সম্ভব হয় না। ব্র্যাকসহ বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থা এসব অঞ্চলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কাজ করে বলে তাদের পক্ষে গরিব মানুষকে সেবা দেয়া সহজতর হয়। তাই ন্যাশনাল আই কেয়ার একটা নৈতিক দায়িত্ববোধ থেকে এই ধরনের কাজে আইনগত অনুমোদনসহ অন্যান্য সহযোগিতা দিয়ে আসছে।
ন্যাশনাল আই কেয়ারের লাইন ডিরেক্টর প্রফেসর ডা. গোলাম মোস্তফা চোখের ক্ষীণদৃষ্টি সমস্যা মোকাবেলা ও এ ধরনের কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতা ও সমন্বয়ের ওপর গুরুত্বারোপ করেন। সভাপতির বক্তব্যে ডা. মুহাম্মাদ মুসা বলেন, অন্ধত্ব বাংলাদেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান সমস্যা। যাদের চোখের সমস্যা দেখা দেয়, তাদের কর্মক্ষমতা অনেক কমে যায়। এ ধরনের প্রকল্প শুরু হওয়ার ফলে মানুষের কর্মক্ষমতা ও আয় বাড়ার পাশাপাশি জীবনযাত্রার মানও বৃদ্ধি পেয়েছে।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, মানুষদেরকে চক্ষু চিকিৎসাসেবার আওতায় আনার উদ্যোগের অংশ হিসেবে ব্র্যাক ২০০৬ সালে ক্ষীণদৃষ্টি সম্পন্নদের জন্য একটি পাইলট প্রকল্প গ্রহণ করে। প্রথমে দু’টি উপজেলায় এটি পরীক্ষমূলকভাবে শুরু হলেও বর্তমানে ৬১টি জেলার ৪৫৬টি উপজেলায় এক কোটি ৬১ লাখ মানুষের মধ্যে কাজ করা হচ্ছে। এই কার্যক্রমকে এগিয়ে নিতে ব্র্যাকের উদ্যোগে ইতোমধ্যে ১০ লাখ ৪৮ হাজার ৭৭৭ জন মানুষের মাঝে তুলনামূলক স্বল্পমূল্যে মানসম্পন্ন চশমা প্রদান করা হয়। আরো বক্তব্য রাখেন ব্র্যাকের ভাইস চেয়ারপার্সন ড. আহমদ মোশতাক রাজা চৌধুরী, ব্র্যাকের স্বাস্থ্য, পুষ্টি ও জনসংখ্যা কর্মসূচির পরিচালক ডা. কাওসার আফসানা, ভিশন স্প্রিংয়ের প্রতিষ্ঠাতা ডা জর্দান ক্যাসালো, প্রেসিডেন্ট ইলা আর গুডইউন প্রমুখ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সমস্যা

২৭ সেপ্টেম্বর, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ