নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
শামীম চৌধুরী, হায়দারাবাদ থেকে : বয়স তার ৭৮, অথচ এই বয়সেও সতেজ পি আর মানসিংহ। হায়দারাবাদের প্রবীন ক্রিকেটারদের সংগঠন ‘দি ভ্যাটারান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব হায়দারাবাদ’ এর পক্ষ থেকে প্রেস বক্সে নিজ হাতে বিলি করেছেন বাংলাদেশ-ভারতের ঐতিহাসিক টেস্ট উপলক্ষ্যে প্রকাশিত শুভেনির। ১৯৮৩ সালে কপিল দেবের নেতৃত্বে ভারতের বিশ্বকাপ ট্রফি জয়ী দলের গর্বিত ম্যানেজার পি আর মানসিংহ সত্তর-আশি দশকে বাংলাদেশ ক্রিকেটারদের কাছে চেনামুখ। বাংলাদেশের ক্রিকেট উন্নয়নে সহযোগিতার হাত প্রশস্ত করেছে হাতে গোনা যে তিন-চারটি বিদেশী দল, তার অগ্রভাগেই থাকবে হায়দাবাদের ডেকান বøুজ। ১৯৭৮ সালে অজিত ওয়াদেকারের নেতৃত্বে ডেকান বøুজের বাংলাদেশ সফরের দলের সঙ্গে ছিলেন, ১৯৮৩-৮৪ মওশুমে গুন্ডাপা বিশ্বনাথ কিংবা ১৯৮৯-৯০ মওশুমে সৈয়দ কিরমানির নেতৃত্বে বাংলাদেশ সফর করা হায়দারাবাদ বøুজের ম্যানেজারের দায়িত্বটাও করেছেন পালন। ১৯৮০ সালে হায়দারাবাদের মঈনুদ্দৌলা গোল্ডকাপ ক্রিকেট টূর্নামেন্টে আবাহনী ও আজাদ বয়েজ নিয়েছে অংশগ্রহণ, তখনো বাংলাদেশের এই দু’টি ক্লাবকে আতিথ্য দেয়া হায়দারাবাদ ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের হয়ে করেছেন সহযোগিতা। ১৯৮৪ সালে ঢাকায় অনুষ্ঠিত ত্রি-দলীয় সিরিজেও গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথের নেতৃত্বে হায়দারাবাদ বøুজের ম্যানেজার ছিলেন তিনি। যে টূর্নামেন্টে হায়দারাবাদের প্রধান প্রতিপক্ষ পিআইএ’র নেতৃত্ব দিয়েছেন পাকিস্তান লিজেন্ডারি অধিনায়ক মুস্তাক মোহাম্মদ।
বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসের সঙ্গে জড়িয়ে আছে হায়দারাবাদের নাম, ১৯৯৮ সালে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে জয় সূচিত হয়েছে হায়দারাবাদ থেকেই। আবার হোম এন্ড অ্যাওয়ে টেস্টে বৃত্ত পূরন করেছে বাংলাদেশ ১৬ বছর ২ মাস ২৯ দিন পর, ভারতের মাটিতে প্রতীক্ষিত বাংলাদেশের ঐতিহাসিক টেস্টেও অংশীদার এই হায়দারাবাদ। প্রচলিত অর্থে শুভ্যেনির ম্যাগাজিন বলতে যা বোঝায়, ‘দ্য ভ্যাটারানস ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব হায়দারাবাদ’ এর পক্ষ থেকে বিলিকৃত ম্যাগাজিনটি কিন্তু সে ধরনের কিছু নয়। পুরোটাই ইতিাহাস ভিত্তিক। এবং যে ম্যাগাজিনের বড় অংশ জুড়ে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের উন্নতির ছবি প্রকাশ করে আইপিএলে ধারাভাষ্য প্যানেল থেকে বাদ পড়া হার্ষা ভোগলে হায়দারাবাদের ছেলে। হায়দারাবাদের প্রবীন ক্রিকেটারদের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রকাশিত ম্যাগাজিনে বাংলাদেশের পক্ষে কলম ধরেছেন। লিখেছেনÑ ‘বাংলাদেশ ফাইনালি ইন ইন্ডিয়া’ শিরোনামে একটি অপ্রিয় লেখা। বাংলাদেশের কোচের দায়িত্বে ব্যর্থ মহিন্দর অমরনাথ লিখেছেনÑ ‘বাংলাদেশ ক্রিকেট, দ্য রেভ্যুলেশন’ শিরোনামে। ভারতের বিশিস্ট ক্রিকেট সাংবাদিক বিজয় লোকোপলে, ভি.ভি.এস লক্ষন, সৈয়দ কিরমানি বাংলাদেশের ক্রিকেটের সঙ্গে তাদের স্মৃতিময় অতীত স্মরণ করেছেন। সত্তর, আশি দশকে বাংলাদেশের তুখোড় অলরাউন্ডার ইউসুফ বাবু হায়দারাবাদ বøুজের সঙ্গে বাংলাদেশের সে সময়ে গড়ে ওঠা সম্পর্কের কথা লিখেছেনÑ ‘হায়দারাবাদ বøুজ, দ্য জেনুইন জুয়েলস এই হায়দারাবাদ ক্রাউন’ শিরোনামে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালকদের মধ্যে আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ববি লিখেছেনÑ ‘ইনসিডেন্টলি বাংলাদেশ ওন ইটস ফার্স্ট এভার ওডিআই হেয়ার ইন হায়দারাবাদ’ শিরোনামে একটি লেখা। সত্তর, আশি দশকে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিয়ে হায়দাবাদ যে রেখেছে ভুমিকা, কৃতজ্ঞচিত্তে তা স্মরণ করেছেন এই সংগঠক।
হায়দাবারাদে খেলতে এসে আতিথ্যের পাশে বাংলাদেশের অতীতকে মনে করিয়ে দেয়া এই ম্যাগাজিনটিও বাংলাদেশের ক্রিকেট বিবর্তনের সাক্ষী। আর কে মানসিংহ নামের যে পৌঢ় নিয়েছেন এই উদ্যোগ, হায়দারাবাদের সাবেক এই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারকে ভারত মিডিয়া চেনে অন্যভাবে। ১৯৫০ সাল থেকে ক্রিকেটকে ভালবেসে সেই বন্ধন আর ছাড়তে পারছেন না ১৯৮৩’র বিশ্বকাপ জয়ী ম্যানেজার। ৬ দশকেরও বেশি সময় ধরে যা কিছু স্মারক করেছেন সংগ্রহ, সেই সংগ্রহশালা এখন ক্রিকেট যাদুঘর। হায়দারাবাদে নিজ বাসভবনে ২০০৩ সালে স্থাপন করেছেন এই মিউজিয়াম। বিরল এই উদ্যোগকে উৎসাহিত করতে ক্রিকেট যাদুঘরটি উদ্বোধন করেছেন সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।