Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

স্মরণীয় পারফরমেন্সের প্রত্যয়ে ভারত যাত্রা

| প্রকাশের সময় : ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : অপেক্ষার অবসান হচ্ছে অবশেষে। ১৭ বছর প্রতীক্ষার পর ভারতের মাটিতে টেস্ট খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল।   আজ সকাল ১১টা ৪০ মিনিটের ফ্লাইটে কোলকাতার ফ্লাইট, সেখান থেকে দুপুর ৩টার ফ্লাইটে হায়দারাবাদের উদ্দেশ্যে উড়াল দিবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। গতকাল বিকেলে নির্বাচকদের দেয়া স্কোয়াড পেয়েছেন হাতে মুশফিকুর রহিম। ঘোষিত দলকে সময়ের সেরা দল বদলে দ্বিধা নেই বাংলাদেশ টেস্ট অধিনায়কেরÑ দল নিয়ে কোচ, নির্বাচকদের সাথে কথা হয়েছে। আমাদের সবার সম্মতিতে দলটি তৈরি হয়েছে। এটাই আমার মনে হয় বেস্ট স্কোয়াড। আমার মনে হয় সবার উচিত এই স্কোয়াডের জন্য শুভকামনা করা।’
নানা ছুঁতোয় এতোদিন বাংলাদেশ দলকে টেস্ট সিরিজে আতিথ্য দেয়নি ভারত। কখনো বা বলা হয়েছে বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানিয়ে অর্থিক ভাবে লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা নেই, কখনো বা বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের টেস্ট ম্যাচে লড়াইয়ের ক্ষমতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করা হয়েছে। যে সব অজুহাতে এতদিন বাংলাদেশ দলকে দেয়া হয়নি আতিথ্য, তার উত্তর দিতে আগামী ৯ থেকে ১৩ ফেব্রুয়ারি হায়দারাবাদে অনুষ্ঠেয় টেস্টে স্মরণীয় পারফরমেন্স করতে চায় বাংলাদেশ। সে অঙ্গীকার রেখেই আজ হায়দারাবাদের উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়ছে বাংলাদেশ দল। এমন প্রত্যয়ই ব্যক্ত করেছেন টেস্ট অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমÑ‘আমার কাছে এটা ঐতিহাসিক ধরনের কিছু মনে হয় না। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট খেলার সময়ে একটু বেশি চাপ থাকে। পাঁচ বছর আগে না যেয়ে বরং এখন ভারত সফর করা   মানে আমাদের ভালো কিছু করার সুযোগ আছে। ভারতের মাটিতে আমরা কেমন খেলি, তা প্রমাণ করার আছে। এটা আমাদের কাছে সাধারণ  একটা টেস্ট ম্যাচ। এমন পারফর্ম করতে চাই, যাতে ভারত আমাদের বারবার আমন্ত্রণ জানায়।’
ব্ংালাদেশে কোচিং অধ্যায় শুরু করেছিলেন হাতুরুসিংহে ২০১৪ সালে  ভারতের বিপক্ষে হোমে ওয়ানডে সিরিজ দিয়ে। সেই ভারতকে ফিরতি ওয়ানডে সিরিজে হারিয়েছে তার শিষ্যরা ২০১৫ সালে। সেবার ফতুল্লায় বৃষ্টিবিঘিœত একমাত্র টেস্টটি হয়েছে ড্র’।  ভারতের মাটিতে এই প্রথম বাংলাদেশ পাচ্ছে টেস্ট খেলার সুযোগ। তাতেই মহাখুশি হাতুরুসিংহে। বিশ্বের নাম্বার ওয়ান টেস্ট দলের বিপক্ষে ইতিবাচক খেলার দর্শন হাতুরুসিংহেরÑ ‘একটি মাত্র টেস্ট ম্যাচের সিরিজ, তাতে তো আমাদের করণীয় কিছুই নেই। একটিই টেস্ট খেলছি এটা ভাবার চেয়ে ইতিবাচক দিকটাই বেশি ভাবছি। প্রথমবার ভারতে টেস্ট খেলার সুযোগ পেয়েছি। এই মানসিকতা নিয়েই আমরা খেলতে যাচ্ছি। অবশ্যই জিতলে ভালো লাগবে আমাদের। তবে ভারত সফরে ভাল খেলাটা খুব কঠিন। দেশের মাটিতে ওরা দারুণ এক  দল। রেকর্ডই সেটাই বলছে। তবে আমরাও আত্মবিশ্বাসী যে ভালো লড়াই করতে পারব। কারণ টেস্টেও আমরা প্রতিনিয়ত উন্নতি করছি।’
হায়দারাবাদ টেস্টে ব্যাটসম্যানদের প্রতি তার নির্দেশনা একটাই, শট নির্বাচনে সতর্ক থাকাÑ‘ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জিং হবে। ঠিকমতো মনস্থির করতে হবে শট নির্বাচনের ব্যাপারে। ওখানে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ আছে, কিছু অনুশীলন সেশন পাব। যতটা পারা যায় প্রস্তুত হওয়ার চেষ্টা করব আমরা। ভারতের কন্ডিশন অনেকটাই বাংলাদেশের মতো। আমরা চেষ্টা করব যত দ্রুত সম্ভব মানিয়ে নিতে। ’ ভারতের স্পিনারদেরও সতর্ককতার সাথে মোকাবেলা করার নির্দেশনা দিয়েছেন শিষ্যদেরÑ‘তাদের অনেক ভালো সব স্পিনার আছে। অশ্বিন অনেক অভিজ্ঞ, র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বর বোলার। আরও দু’জন ভালো স্পিনার আছে তাদের দলে। তবে তার মানে এই নয় যে আমাদের স্পিনাররা ভালো নয়। আমাদের স্পিনাররাও  স্কিলফুল। আমাদের সাকিব আল হাসান আছে, মিরাজ ও তাইজুল আছে। ওরা অভিজ্ঞতায় এগিয়ে থাকলেও  আমরা পিছিয়ে নই।’
ভারতের কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখে গত ২দিন অনুশীলন করেছে বাংলাদেশ দল। ভারতকে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলার পর্যাপ্ত রসদ  হাতে জমা আছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ কোচÑ‘আমাদের দলের খেলোয়াড়দের মধ্যে নানা রকম বৈচিত্র আছে। পেস বোলিং অলরাউন্ডার আছে, স্পিনিং অলরাউন্ডার আছে। ব্যাটিং গভীরতাও অনেক। সুতরাং যে কন্ডিশনই হোক, আমরা সেভাবেই খেলবো। আমরা এখনো দুদিন ধরে ওই কন্ডিশনের মতো অনুশীলন করেছি। ধারণা করছি, আমাদের তুলনায় ওদের উইকেট ব্যাটিং সহায়ক হবে।’
টি-২০ বিশ্বকাপে মাত্র ৩ ম্যাচ খেলে পেয়েছেন মুস্তাফিজুর ৯ উইকেট। টি-২০ বিশ্বকাপের সর্বশেষ আসরের সেরা বোলিংও তার (৫/২২)। যে মাঠে বাংলাদেশ, খেলবে টেস্ট,সেই মাঠে মুস্তাফিজুরের আছে সানরাইজার্স হায়দারাবাদের হয়ে স্মরণীয় বোলিং। সে কারণেই তুরুপের তাসকে হায়দাবাদে নিতে না পারার আক্ষেপ আছে হাতুরুসিংহের। তবে শ্রীলঙ্কা সফরে ফিট মুস্তাফিজুরকে পেতে ভারত সফরে হয়নি এই কাটার মাস্টারকে রাখা, মুস্তাফিজুরের মঙ্গলের জন্য নেয়া হয়েছে এই সিদ্ধান্ত, তা জানিয়েছেন হাতুরুসিংহেÑ‘ওর বড় একটি অস্ত্রোপচার হয়েছে। ফিরতে সময় লাগেই। চোটের পর ফেরার প্রক্রিয়াতেই আছে সে। নিউ জিল্যান্ডে সে ১২৭-১২৮ কিমি গতিতে বল করেছে। আগে ১৪০ করত। তো পুরোপুরি ফিট হতে সময় লাগবে। আমাদের পরিকল্পনায় আছে শ্রীলঙ্কায় পুরো ফিট হিসেবে ওকে পাওয়া।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: স্মরণী

২৫ জানুয়ারি, ২০২২
১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ