বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
সীতাকুন্ড উপজেলা সংবাদদাতা : ইরিনা ও শারমিন দুই বোন। দু’জনই বাকপ্রতিবন্ধী। ফলে কারো সাথেই কথা বলতে পারে না তারা। তবে কথা বলতে না পারলেও অন্য কোনো কাজেই পিছিয়ে নেই তারা। সব কাজই করে আর পাঁচটি স্বাভাবিক শিশুর মতো। এমনকি পড়াশোনাতেও পিছিয়ে নেই তারা। বাকপ্রতিবন্ধী হলেও মূক (বোবা) স্কুলে না পড়ে তারা পড়ছে সাধারণ স্কুলে! আর তাদের বোঝার ক্ষমতা অন্য প্রতিবন্ধীদের চেয়ে অনেক ভালো হওয়ায় সাধারণ স্কুলে পড়ে তারা অনেক স্বাভাবিক ছাত্রছাত্রীদের পেছনে ফেলে এগিয়ে যাচ্ছে। যা তাদের অবিভাবকের পাশাপাশি বাড়তি উৎসাহ যুগিয়েছে শিক্ষকদের মাঝেও।
জানা যায়, উপজেলার ৮ নম্বর সোনাইছড়ি ইউনিয়নের শীতলপুর এলাকার মো: আবদুল আজিজের দুই জেলে ও তিন মেয়ের মধ্যে দুই মেয়ে ইরিনা আক্তার ও শারমিন আক্তার জন্মগতভাবে বাকপ্রতিবন্ধী। অবিভাবকরা তাদেরকে দক্ষিণ সোনাইছড়িতে অবস্থিত মোস্তফা হাকিম কেজি অ্যান্ড জুনিয়র হাইস্কুলে ভর্তি করান। বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ ও তাদের অবিভাবকরা দেখেন যে, ইরিনা ও শারিমন একে একে প্রতিটি ক্লাস সফলতার সাথে পার হয়ে যাচ্ছে। ফলে শিক্ষকরাও তাদের দিকে বাড়তি যতœ নিতে থাকেন। এভাবেই সবাইকে চমকে দিয়ে এবারের প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষায়ও তারা সাফল্য অর্জন করেছে। সেখানে শিক্ষক-শিক্ষিকারা নিজেরাও বাকপ্রতিবন্ধী অথবা মূকাভিনয় জানায় মূক শিক্ষার্থীদের কোনো অসুবিধা হয় না। শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা পরস্পরের কথা সহজেই বুঝতে পারেন। ফলে তাদের পড়াশুনা সহজ হয়। কিন্তু সাধারণ স্কুলে শিক্ষক ও অন্য ছাত্রছাত্রীদের ভাষা বুঝে তাদের সাথে একত্রে পড়াশোনা করাটা সত্যিই কঠিন। যেভাবে এই দু’বোন এ পরিবেশের মধ্যেও পড়াশুনা করে এগিয়ে যাচ্ছে তা সত্যিই বিস্ময়কর। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মোস্তফা হাকিম কেজি অ্যান্ড জুনিয়র হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ফরিদুল ইসলাম বলেন, ইরিনা ও শারমিন ইশারাতেই সব বুঝতে পারে। আর কিছু না বুঝতে বোর্ডে লিখে দিলে তারা বুঝে নেয়। এভাবেই সকল শিক্ষকরা তাদেরকে পড়াশুনা বুঝিয়ে দেয়। এবারও প্রাথমিক সমাপনি পরীক্ষায় ওরা ভালোভাবেই পাস করে গেছে। ওরা বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় বিদ্যালয়ের প্রতিটি শিক্ষক আন্তরিকতার সাথে তাদের পড়াশোনার দিকে নজর রাখেন বলে জানান প্রধান শিক্ষক। নিজের সন্তানদের সফলতা বিষয়ে বলতে গিয়ে ইরিনা ও শারমিন আক্তারের বাবা মো: আবদুল আজিজ বলেন, ওরা জন্মগত বাকপ্রতিবন্ধী হওয়ায় আমি তাদের পড়াশোনা বা অন্য কোনো বিষয়েই আশাবাদী ছিলাম না। কিন্তু ওরা দু’জনই আমার ভুল ভেঙে দিয়েছে। সম্পূর্ণ সুস্থ ও স্বাভাবিক শিশুদের সাথে পাল্লা দিয়ে অনেককে পেছনে ফেলে প্রাথমিক সমাপনিও সফলতার সাথে শেষ করেছে। এ কারণে যত কষ্টই হোক, ইরিনা ও শারমিনের পড়াশোনা চালিয়ে যাবেন বলে জানান আব্দুল আজিজ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।