প্রাক্তন প্রেমিকের নির্যাতনের শিকার অভিনেত্রী
মালায়ালাম সিনেমার অভিনেত্রী আনিকা বিক্রমন। প্রাক্তন প্রেমিক অনুপ পিল্লাই তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ
এম.এস. হোসেন : একজন অভিনেতার অভিনয় জীবনে চরিত্র থেকে চরিত্রে বিবর্তন হওয়া স্বাভাবিক। তবে তাকে শক্ত ভিত্তি দেয়ার জন্য খুব বেশি চরিত্রের প্রয়োজন পড়ে না। একটি বা দুটি চরিত্রই যথেষ্ট। আমরা আফজাল হোসেন, হুমায়ুন ফরীদি, আসাদুজ্জামান নূর, রাইসুল ইসলাম আসাদ, নাদের চৌধুরী, আজিজুল হাকিমের মতো অভিনেতাদের দেখেছি, তাদের ক্যারিয়ারে একটি কি দুটি চরিত্রই দর্শকদের মনে চির জাগরুক করে তুলেছে। এখনো তাদের অভিনীত সেসব চরিত্র দর্শক মনে রেখেছে, এমনকি সেসব চরিত্রের নামে তাদের ডাকে। এ সময়ে এসে নাটকের মধ্যে এমন কোনো চরিত্র এবং তার সংলাপ দেখা যায় না, যা দর্শক মনে আজীবন গেঁথে থাকবে। অভিনেতা-অভিনেত্রীদের চরিত্রের নামে ডাকবে। সেই ধরনের গল্প এখন হয় না বললেই চলে। তবে মাঝে মাঝে অসংখ্য নাটকের ভিড়ে কিছু নাটকে কাউকে কাউকে এমন বিশেষত্বসম্পন্ন চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায়। যে চরিত্রগুলো দর্শককে ক্ষণিকের জন্য হলেও নাড়িয়ে দেয়। এমন কিছু চরিত্রে অভিনয় করেছেন এ সময়ে অভিনয় শিল্পী হয়ে উঠা শহিদ আলমগীরের মধ্যে। তার অভিনীত বিটিভিতে প্রচারিত রাইফেল মফিজ ধারাবাহিকে মফিজ চরিত্রটি দর্শকের মনে বেশ দাগ কেটেছে। সহজ-সরল মফিজের সারল্যমাখা কথা ও আচরণ হাসির উদ্রেক করলেও, তার মানবিক গুণাবলী দর্শকদের বেশ আকর্ষণ করে। চরিত্রটি যথাথযভাবে তুলে ধরতে পেরেছেন শহিদ আলমগীর। বলা যায়, এ চরিত্রের মাধ্যমে আলমগীরের ক্যারিয়ার শিল্পসত্তার দিকে মোড় নেয়। রাইফেল মফিজের পূর্বে ইমদাদুল হক মিলনের যুবরাজ, গিয়াস উদ্দিন সেলিমের রচনায় ও নজরুল কোরেশির পরিচালনায় শুভরাত্রী, ও নীল ঘুড়ি, সাজ্জাদ হোসেন দুদুলের অস্থির পাখিরা, মোহন খানের দুই শালিকসহ প্রায় শতাধিক নাটকে অভিনয় করলেও রাইফেল মফিজ ধারাবাহিকে মফিজ চরিত্রে এসে যেন তার দীর্ঘ চলার পথের অভিনেতা হওয়ার বাঁক হয়ে দাঁড়ায়। ধারাবাহিকে তার প্রাণবন্ত অভিনয় দর্শকের দৃষ্টি কাঁড়ে। শহিদ আলমগীরও দর্শকের এ চাহিদা উপলব্দি করে নিজেকে সংযত এবং সক্ষম করে তোলার জন্য প্রত্যয়ী হয়ে উঠেন। চরিত্র চিত্রণে সতর্ক হন। তিনি জানেন, তার প্রতি দর্শকের এক ধরনের প্রত্যাশা সৃষ্টি হয়েছে। এ প্রত্যাশা ধরে রাখতে রাইফেল মফিজকে অতিক্রম করতে হবে। তার এ দায়বোধ থেকেই গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসিয়ে দিয়ে বেশি বেশি নাটক তিনি করেন না। বেছে করেন। যা করেন চরিত্র প্রাধান্য দিয়ে করেন। দর্শক মনে দাগ কাটতে পারে এমন চরিত্র। সম্প্রতি এমনই আরেকটি চরিত্রে তিনি অভিনয় করেন। মম রুবেলের রচনায় বর্ণ নাথের পরিচালনায় অভিনয় করেছেন লালু সর্দার নামের ধারাবাহিক। লালু সর্দার হয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারে আরো একটি ভালো নাটক এবং চরিত্র যোগ করলেন শহিদ আলমগীর। লালু সর্দার প্রচার শুরু হলে, দর্শক দেখবেন একজন দায়িত্ববান অভিনেতাকে। এই দুই ধারাবাহিকের মাঝে অভিনয় করেছেন আরো দুটি ব্যতিক্রমী চরিত্রে। এম সাখাওয়াত হোসেন রচনা ও পরিচালনায় ‘চন্দ্র নদীর বাঁকে’ এবং ‘কাপুরুষ’ ধারাবাহিকে দুটি ভিন্ন ভিন্ন চরিত্রে তাকে দেখা যাবে। প্রান্তিক গাঁয়ের কোনো এক ঘাটের মাঝি কিংবা অসহায় হয়ে পড়া কোনো এক যুবক। চরিত্র থেকে চরিত্রে শহিদ আলমগীরের এই যে ভ্রমণ, তা তার অভিনয় জীবনের একটি সেরা সময় বলা যায়। নিজেকে গড়ে তোলার এ সময়টিকে শহিদ আলমগীর ধরে রাখতে পারলে, নিঃসন্দেহে দর্শক অনেক দিন পর একজন ভালো অভিনেতাকে খুঁজে পাবেন। শহিদ আলমগীরের অভিনয় জীবন শুরু হয় ঢাকা পদাতিকের মাধ্যমে। মঞ্চ অভিনয় তার ক্যারিয়ারের যে ভিত গড়ে দেয়, তাই এখন তার ক্যারিয়ারে প্রতিফলিত হচ্ছে। ফলে অল্পসময়ে একটি শক্তিশালী চরিত্রের ভেতরে প্রবেশ করে চরিত্রটি নিখুঁতভাবে তুলে ধরতে পারছেন। শহিদ আলমগীরকে নিয়ে সাম্প্রতিক বেশি কাজ করা পরিচালক এম সাখাওয়াৎ হোসেন বলেন, আজকে মিডিয়াতে অভিনয় না শিখে-সংস্কৃতিম-লে পদচারণা ছাড়াই কিছু অভিনেতার জন্য শহিদ আলমগীর নিঃসন্দেহে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন। একটি নাটকের প্রতি তার আন্তরিকতা, সহশিল্পীদের প্রতি সহযোগিতা নাটকটিকে সুন্দর করে তৈরি করতে অত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা পালন করেন। আমার মতে, শহিদ আলমগীর তার এই নিষ্ঠা ও একাগ্রতা ধরে রাখলে অনেক দিন পর দর্শক একজন ভালো অভিনেতাকে খুঁজে পাবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।