নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা : সিরিজের প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে হারের ব্যবধান ৭৭ রানের। ওয়ানডে ফরমেটের ক্রিকেটে যে লড়াকু বাংলাদেশকে দেখতে অভ্যস্ত বিশ্ব, সেই বাংলাদেশকে গতকাল অচেনাই মনে হয়েছে। কি বোলিং, কি ব্যাটিং, কি ফিল্ডিং, কোনটাতেই পাস মার্ক পাচ্ছে না বাংলাদেশ দল। বাংলাদেশের বিপক্ষে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ স্কোরের ( ৩৪১/৭) ইনিংসে দায়টা বোলারদের অনিয়ন্ত্রিত বোলিং। মোসাদ্দেক ছাড়া সবাই ওভার প্রতি ছয়ের বেশি রান খরচা করেছেন। ওভার প্রতি রান খরচায় সবচেয়ে বেশি তাসকিন ( ওভার প্রতি ৭.৭৭)। টিমমেট বোলারদের শর্ট বলের ছড়াছড়িতে রীতিমতো অসন্তুষ্ট অধিনায়ক মাশরাফিÑ‘আমরা একটু বেশিই শর্ট বল করেছি। ওদের শর্ট বলগুলো আমাদের মাথা বরাবর ছিল। সেখানে আমাদের শর্ট বল ছিল ওদের বুক উচ্চতায়, যা ওরা অনায়াসেই খেলতে পেরেছে।’
ছোট মাঠে প্রতিপক্ষের বড় স্কোরে অবদান রেখেছে বাংলাদেশের ফিল্ডাররা। বাংলাদেশ ফিল্ডারদের শরীরি ভাষায় ভীষণ ক্ষুদ্ধ মাশরাফিÑ ‘এটাকে অলস ফিল্ডিংই বলব। ওরা অনেক দুই-তিন নিয়েছে ওরা, যেগুলো চেক দিতে পারতাম। শুধু এখানেই ২০ রানের মতো বেশি পেয়েছে ওরা। ২৮০-৩০০ রান এখানে হবেই। মনে হয়েছে, ফিল্ডিংয়ে আমরা হতোদ্যম ছিলাম। ফিল্ডিংয়ে একটু ভালো করলে বোলাররাও হয়ত একটু অনুপ্রাণিত হতো। বোলিং-ফিল্ডিং ভালো করলে আমরা ৪০ রান কম হতো। শুরুতে দ্রæত উইকট হারানোর পরও আমাদের সুযোগ থাকত। বাড়তি ওই রানই আমাদের ভুগিয়েছে।’
মুশফিকুরের হ্যামেস্ট্রিং ইনজুরি ম্যাচ থেকে ছিটকে ফেলেছে বাংলাদেশ দলকে। তা মনে করছেন মাশরাফিÑ‘মুশফিক ও সৈকত (মোসাদ্দেক) যখন উইকেটে ছিল, তখন এক পর্যায়ে ৮৪ বলে ১৪০ দরকার ছিল। টি-টোয়েন্টি ম্যাচের মতো ব্যাটিং করলে এই টার্গেট কঠিন কিছু ছিল না। ঠিক তখন মুশফিকের চোট সমস্যা করল। না হলে হয়ত আমরা ৩০০-৩১০ পর্যন্ত গিয়ে তার পর কিছু করার চেষ্টা করতাম। তবে ৫৭ বলে ৬২ রানের পার্টনাারশিপে ম্যাচে বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনা সাকিব অমার্জনীয় শট খেলে বড় ভুল করেছেন, তাতেই কস্ট পাচ্ছেন মাশরাফিÑ‘সাকিব শেষ পর্যন্ত থাকলে অন্যরকম কিছু হতে পারত। কারণ এই উইকেট ব্যাটিংয়ের জন্য দারুণ ছিল। ওই সময় সাব্বিরও আউট হয়ে গেছে। দুই বিগ হিটার আউট হয়ে যাওয়ায় কাজটা কঠিন হয়ে যায়।’
ম্যাচে দু’দলের ব্যবধান তৈরি করে দিয়েছে পঞ্চম জুটির ১৫৮ রানের দুই কারিগর ল্যাথাম (১৩৭) এবং মুনরো ( ৮৭)। তা মানছেন মাশরাফিওÑ ‘জানতাম গাপটিল ও মুনরো অনেক মারতে পারে। উইলিয়ামসন ও ল্যাথাম অনেকটা উইকেট আগলে খেলে। সেই ল্যাথামকে আজ অন্যরকম দেখলাম, নিজের সেরা খেলাটা খেলেছে সে। আর মুনরো আমাদের কাছ থেকে ম্যাচ বের করে নিয়ে গেছে।’
এতো কিছুর পরও রান পাহাড়ে চাপা পড়ে হতোদ্যম হয়নি বাংলাদেশ ব্যাটসম্যানরা। তাতেই ইতিবাচক কিছু দেখতে পাচ্ছেন মাশরাফিÑ‘এতো কিছুর পরও ব্যাটিংয়ে আমরা ইতিবাচক থাকতে পেরেছি। শুরুতে দ্রæত উইকেট হারালেও পরে মোটামুটি একটা স্কোর করেছি। ৮১ রানে ৪ উইকেট হারানোর পরও আমরা ২৬০ প্লাস স্কোর করেছি। ইনিংসের মাঝামাঝি সময়ে সাকিব, মুশফিক, শেষ দিকে সৈকতও ভালো করেছে।’
গত জুলাইয়ে সাসেক্সে খেলতে যেয়ে ইনজুরিতে পড়ে কাঁধের টেলিস্কোপ সার্জারিতে পড়ে সব ধরনের ক্রিকেটের বাইরে পাঁচ মাস কাটাতে হয়েছে যে ছেলেটিকে, পুরোপুরি ফিটনেস ফিরে পাওয়ার আগেই মাঠে নেমে সেই মুস্তাফিজুর প্রত্যাবর্তন ম্যাচে দিয়েছে আস্থার প্রতিদান (২/৬২)। তাতেই সামনে আরো ভয়ঙ্কর রূপ ছড়ানোর সম্ভাবনা এই কাটার মাস্টারের মধ্যে দেখছেন মাশরাফিÑ‘ মুস্তাাফিজের ব্যাপারটি আলাদা। অনেক দিন পর এসেছে। আরও তিন চার মাস খেলতে খেলতে আগের অবস্থায় আসবে। এত দিন পর শুরু করা মানে শূন্য থেকে শুরু করা। মোটামুটি ঠিকঠাক ছিল। সময়ের সঙ্গে আরও উন্নতি করবে। আশা করছি খেলতে খেলতেই নিজেকে পুরোপুরি ফিরে পাবে।’
বাংলাদেশের এমন বাজে একটি দিনে বাংলাদেশের প্রথম বোলিং অল রাউন্ডার হিসেবে দারুণ একটি কৃতিত্বে নাম লিখিয়েছেন মাশরাফি। ১১তম ক্রিকেটার হিসেবে ওয়ানডেতে ১৫০০ রান, ২০০ উইকেট আর ৫০টি ক্যাচের বিরল কৃতিত্বে ভারতের কপিল দেব, পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম, শ্রীলঙ্কার সনাথ জয়সুরিয়াও চামিন্দা ভাস , নিউজিল্যান্ডের ক্রিস হ্যারিস, ড্যানিয়েল ভেট্টরী ও ক্রিস কেয়ার্নস , অস্ট্রেলিয়ার শেন ওয়ার্ন, দ.আফ্রিকার জ্যাক ক্যালিস, শন পোলকের পাশে লেখালেন নিজের নাম।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।