বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
গত ১ অক্টোবর মাস শুরু হয়েছে। আজ ১৭ অক্টোবর। এই ১৭ দিনে নারায়ণগঞ্জ জেলায় দুর্ঘটনায় অন্তত ১৩ জন প্রাণ হারিয়েছে। এর মাধ্যে সড়কে মৃত্যু হয়েছে ১০ জনের আর ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে নৌ দুর্ঘটনায়। নারায়ণগঞ্জে প্রায় প্রতিদিনই এমন দূর্ঘটনা ঘটছে। সাথে বাড়ছে মৃত্যুর মিছিল। কোনোভাবেই যেন রোধ করা যাচ্ছে না।
পুলিশ বলছে, ট্রাফিক আইন অমান্য করা বেপোরয়া গাড়ি চালানো আর যত্রতত্র রাস্তা পারাপার এর অন্যতম কারণ।তবে, যাত্রী অধিকার সংরক্ষন ফোরাম বলছেন, ‘নির্ধিষ্ট কিছু কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটছে। এর প্রতিকারে সরকার যথাযথ ব্যবস্থা না নেওয়ায় দুর্ঘটনা থামানো যাচ্ছে না।’
এসব দুর্ঘটনায় শুধু যে মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে, তাই নয়। প্রতিটা মৃত্যুর সাথে সাথে পথে বসছে অধিকাংশ পরিবার।
গত ৯ অক্টোবর কাঁচপুর ব্রিজে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে মাইক্রোবাসের সংঘর্ষে ৫জন নিহত হয়েছিল। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন। ১১ অক্টোবর ফতুল্লার দেওভোগ এলাকায় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় এক মাঝ বয়সী নারীর মৃত্যু হয়। ১২ অক্টোবর আড়াইহাজারে যাত্রীবাহি বন্ধন পরিবহনের বাসের সাথে সিএনজির মুখোমুখি সংঘর্ষে মৃত্যু হয় আরও ২ জনের। একই দিন রূপগঞ্জে কাভার্ড ভ্যানের সাথে ধাক্কা লেগে বাইসাইকেল চালক এক যুবক নিহত হয়েছে আর আড়াইহাজারে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কায় নিহত হয়েছে মোটরসাইকেল আরোহী।
সর্বশেষ ১৪ অক্টোবর শীতলক্ষ্যা নদীতে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়ার কারণে ইঞ্জিন চালিত নৌকা ডুবে মৃত্যু হয় ৩ যুবকের।
অর্থাৎ চলতি মাসে সড়কে প্রাণ হারিয়েছে ১০জন ও নৌ-পথে প্রাণ হারিয়েছে ৩জন।
মৃত্যুর এই মিছিল নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. সোহান সরকার বলেন, সড়ক দুর্ঘটনা দেশের অন্যতম একটি সমস্যা। এর অন্যতম কারণ হলো ট্রাফিক আইন অমান্য করা, বেপোরয়া গাড়ি চালানো, যত্রতত্র রাস্তা পারাপার হওয়া। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি সারাধণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে। যাদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নাই, তাদের আইনের আওতায় আনতে। দুর্ঘটনার এড়াতে চালক এবং যাত্রী দুইজনেরই সচেতন হতে হবে। ট্রাফিক আইন মানতে হবে।
তবে, ভিন্ন মত প্রকাশ করে যাত্রী অধিকার সংরক্ষন ফোরামের আহ্বায়ক রফিউর রাব্বি বলেন, সড়ক দুর্ঘটনার কারণ দীর্ঘদিন ধরেই বলা হচ্ছে, এটা তো আর নতুন কিছু না। এতে আইনের দুর্বলতাও আছে। সরকারের অনিচ্ছার কারণে এই আইন গুলো তারা বদলাচ্ছে না। দুর্ঘটনার পরে অপরাধী সাব্যস্ত হলেও তাদের বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে না। এই জন্য গণপরিবহনের মালিকরা তাদের নিজস্ব লোক দিয়ে পরিচালনা করছে। সরকার যদি জনগণকে নিরাপত্তা দিতে চায়, তাহলে সরকারকে এইসব আইন যথাযথ প্রয়োগ করা হবে।
একের পর এক নৌ-দুর্ঘটনা ঘটতে থাকায় জনমনে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, নারায়ণগঞ্জে কেন এত নৌ-দুর্ঘটনা ঘটে। নৌ-দুর্ঘটনায় প্রতি বছরই অনেক মানুষ আহত, নিহত ও নিখোঁজ হচ্ছেন। বড় ধরনের নৌ-দুর্ঘটনা ঘটলে কিছুদিন হৈচৈ হয়, গণমাধ্যমগুলোও এ নিয়ে কিছুদিন সরগরম থাকে। কিন্তু প্রতিকার আর পাওয়া যায় না। সচেতন মহল বলছে, নদীর পাড় গুলো সংকুচিত হওয়ায় ও অবৈধ দখলের কারণে এই দুর্ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। অন্যদিকে নৌ প্রশাসন বলছে সচেতনতা, দায়িত্বের অবহেলা না করা ও আইন মানলে কমতে পারে নৌ-পথে দুর্ঘটনা।
বিভিন্ন সময় নৌ-পথে নিরাপত্তার দাবিতে আন্দোলন করা তরিকুল সুজন বলেন, নৌ-দুর্ঘটনা অন্যতম কারণ হলো, নদীর দুইপাশে ঘিরে যে অবৈধ স্থাপনা তৈরী হয়েছে, অবৈধ দখল করা হয়েছে। নৌ-পথ অনেকটা সংকোচিত হয়েছে। ওভার লোড হয়ে নৌ চলাচল করে কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা গ্রহন করে না। সেখানে ব্যাক্তিগত প্রভাব ও ক্ষমতার অপব্যবহার হয়। দুর্ঘটনা এড়াতে নৌপথ প্রশস্ত করতে হবে, ওভারলোপ যানবান আটকাতে হবে। নারায়ণগঞ্জে যে পরিমান মানুষ, সে পরিমান নৌ পরিবহন বাড়াতে হবে
তবে, বিষয়টি নিয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা নৌ-পুলিশের পুলিশ সুপার (এসপি) মিনা মাহমুদা বলেন, নৌ-দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হলো অসচেতনতা, দায়িত্বের অবহেলা এবং আইন না মানা। দুর্ঘটনা এড়াতে সকলকে সচেতন হতে হবে এবং আইন মানতে হবে। কিছুদিন আগে ২দিন আগেই একটি দুর্ঘটনা আপনারা দেখলেন, এখানে অসচেতনতা অভাবেই হয়েছে। আমরা কিন্তু অবহেলা বা অসেতনতার বিষয়ে সব সময় সোচ্চার থাকি। আমরা মামলা দিচ্ছি যারা আইন অমান্য করছে। সামনে শীত আসছে কুয়াশার মধ্যে বিভিন্ন দুর্ঘটনা ঘটে। আমাদের আইন যথাযথ পালন করলে এমন দুর্ঘটনা হবে না বলে আশা করি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।