Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

চীনের শূন্য-কোভিড নীতি তিব্বতিদের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২, ৫:৩৪ পিএম

তিব্বতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় চীন তার ‘শূন্য-কোভিড নীতি’ কার্যকর করার জন্য সেখানে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। আর চীনের সেই কঠোর পদক্ষেপ তিব্বতবাসীদের জীবনকে করে তুলেছে বিপন্ন। ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআইর বরাতে দ্য প্রিন্ট এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, শূন্য-কোভিড নীতি ভালোর চেয়ে ক্ষতিই করছে বেশি। তিব্বতে মহামারির প্রাদুর্ভাব ঠেকানো নিয়ে অব্যবস্থাপনা বেইজিংয়ের কোভিড-নীতি বাস্তবায়নের ব্যর্থতাকেই তুলে ধরছে বলে কেন্দ্রীয় তিব্বত প্রশাসনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, প্রাদুর্ভাব রোধে নিজেকে একটি রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতে গিয়ে তিব্বতিদের চিকিৎসা সহায়তা এবং কোভিড পরিচর্যার প্রয়োজনে তাদের নিরাপত্তাকে একেবারেই উপেক্ষা করছে চীন। ভয়াবহ লকডাউন পরিস্থিতির মধ্যে অনলাইনে প্রকাশিত কিছু তিব্বতির পোস্ট ও ভিডিওতে তার প্রমাণ মিলেছে।
এর আগেও সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে এসেছে যে, তিব্বতে সংক্রমিত রোগীদের পাশাপাশি যাদের করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে তাদেরও কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বে তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা খাবার পাচ্ছেন না। লোক বোঝাই বাসের লাইন, তাদের অস্থায়ী আইসোলেশন সেন্টারে নামানোর জন্য গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করা; এই দৃশ্যগুলো তিব্বতের রাজধানী লাসার বাসিন্দারা বর্ণনা করেছেন। করোনভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ন্ত্রণের জন্য তাদের এক মাস ধরে তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে বলে জানায় ওয়াশিংটন পোস্ট।
তিব্বতিরা জনাকীর্ণ কোয়ারেন্টাইন সুবিধা, খাদ্যের অভাব, চিকিৎসা সরবরাহের অভাব এবং অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার বিষয়ে নানা অভিযোগ করেছে। কিছু তিব্বতি জানিয়েছেন, যে তাদের অবস্থা একজন বন্দীর চেয়েও খারাপ। কোভিড লকডাউনের কারণে মানবেতর জীবনযাত্রা নিয়ে প্রতিবাদ করায় কাউকে কাউকে মারধরও করা হয়েছিল।
করোনা আক্রান্ত অঞ্চলে তিব্বতিদেরকে জোরপূর্বক আইসোলেশন কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এতে করে তাদের পরিবারগুলো ওই ব্যক্তিদের ফিরে আসা নিয়ে অনিশ্চয়তার সঙ্গে দিন পার করছে।
এ বছরের ৪ আগস্ট তিব্বতে প্রথম করোনা প্রাদুর্ভাবের কথা জানায় চীন। তিব্বতের লাসা এবং এনগারিতে ২২ জনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। ২০২০ সালের শুরুর দিকে তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে (টিএআর) শূন্য-কোভিড নীতির ঘোষণা দেয় চীন।
সপ্তাহের মধ্যে কমপক্ষে ৩৬২৭ জন লোক করোনা পরীক্ষায় পজেটিভ হয়েছেন, যা ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার ইঙ্গিত দিচ্ছে। নাগচু, চামদো, লোকা এবং নাইংট্রির কাছাকাছি এলাকা থেকে করোনা আক্রান্তের খবর পাওয়ার পর খুব দ্রুত লাসা, শিগাতসে এবং এনগারিতে সরকারের পক্ষ থেকে কঠোর লকডাউন কার্যকর করা হয়।
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণের জন্য সমগ্র শহরসহ লকডাউন চীনে প্রায় সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে তিব্বত থেকে সাহায্যের জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। সেইসঙ্গে জিনজিয়াংয়ের দুটি সীমান্ত অঞ্চল যেখানে চীনা সরকার অত্যন্ত নিপীড়নমূলক নিয়ন্ত্রণ স্থাপন করেছে। সেখানে পরিস্থিতি কতটা মরিয়া পরিস্থিতি হয়ে উঠেছে তা যেন কেউ জানতে না পারে সেজন্য সেখানকার বাসিন্দাদের নীরব থাকতে ভয় দেখানো হয়। অনলাইন ছড়িয়ে পড়া কিছু ভিডিওতে এ পরিস্থিতির বর্ণনা দেন তিব্বতিরা। যদিও পরে সেগুলোর কিছু ভিডিও মুছে ফেলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিপন্ন

২৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৭

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ