মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারত-রাশিয়া দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কে এখন কোয়াডের (ভারত, যুক্তরাষ্ট্র, অস্ট্রেলিয়া ও জাপানের জোট) মেঘে ঢাকা পড়তে যাচ্ছে। মস্কোর বক্তব্য, আমেরিকার সহচর হয়ে সমুদ্রপথে নয়াদিল্লি কোয়াড-এর মাধ্যমে চীন ও রাশিয়া-বিরোধী নীতি নিচ্ছে। ভারতের পাল্টা যুক্তি হলো, কোয়াড সকলের জন্য, কারো বিরুদ্ধে নয়।
রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাত নিয়ে ভারত এখন পর্যন্ত ভারসাম্যের কূটনীতি বজায় রেখেছে। আমেরিকা এবং পশ্চিমের সুরে সুর মিলিয়ে ভারত কোনো আন্তর্জাতিক মঞ্চে রাশিয়ার নিন্দা করেনি। বরং ইউক্রেনে হামলা বন্ধের জন্য বার বার আর্জি জানিয়েছে।
সব মিলিয়ে এখনো রাশিয়ার থেকে সস্তায় অশোধিত তেল আমদানির পথ নয়াদিল্লির জন্য সুগম রয়েছে ঠিকই। কিন্তু যুদ্ধ যত দীর্ঘায়িত হচ্ছে, চীনের ওপর রাশিয়ার নির্ভরতা তত বাড়ছে। ফলে পাল্লা দিয়ে অস্বস্তি ও সমস্যা বাড়ছে ভারতের। কূটনৈতিক শিবিরের মতে, আর কত দিন ভারত পশ্চিম বিশ্ব এবং রাশিয়ার সাথে সমান্তরাল লাভজনক কূটনীতি চালিয়ে যেতে পারবে, তা নিয়ে সংশয় আছে।
সম্প্রতি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল মস্কো গিয়ে রাশিয়ার নিরাপত্তা উপদেষ্টা নিকোলাইন পাট্রুশেভের সাথে বৈঠক করেন। ডোভাল তাকে বুঝিয়েছেন, রাশিয়ার অতিরিক্ত চীন-নির্ভরতা ভারতের জন্য প্রবল সমস্যার। দু বছরের বেশি হয়ে গেলও চীনের সাথে সীমান্তে সংঘাত-পরিস্থিতি কাটেনি এবং অনেক চেষ্টা সত্ত্বেও চীনা সেনা পিছু হটছে না। সুতরাং মস্কোর বেইজিং-প্রীতি নয়াদিল্লিকে বাধ্য করবে আমেরিকার দিকে যেতে। ডোভাল আরো বলেছিলেন, ভারতের কৌশলগত মিত্র রাশিয়া এবং পশ্চিম ব্লকের কারণে এই অবস্থান থেকে ভারত পিছু হটতে চায় না।
কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, মস্কোর পক্ষে বেইজিংকে বাদ দিয়ে কোনো পররাষ্ট্রনীতি প্রণয়ন সম্ভব নয়। রোববারই তাসখন্দে এক বক্তৃতায় রাশিয়ার নিরাপত্তা উপদেষ্টাকে বলতে শোনা গেছে, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আমেরিকা এবং তার শরিকেরা নিজেদের ব্লক তৈরির চেষ্টা করছে। তাতে যত বেশি সম্ভব দেশকে ঢোকানোর চেষ্টা করছে তারা। এই নীতি রাশিয়া-বিরোধী এবং চীন-বিরোধী।
আমেরিকা, ভারত, জাপান ও অস্ট্রেলিয়ার এই চতুর্দেশীয় অক্ষ বা কোয়াডের দিকে আগেও রাশিয়া আঙুল তুলেছে। মস্কোর বক্তব্য, কোয়াডকে ব্যবহার করে আমেরিকা সমুদ্রপথে নেটোর সম্প্রসারণ চায়। সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ব্যাঙ্ককের একটি অনুষ্ঠানে জানিয়েছেন, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলই কোয়াড-এর দ্বারা উপকৃত হতে পারে। তার বক্তব্য, 'যদি কোয়াড নিয়ে কারো সন্দেহ হয়ে থাকে, তা হলে তার জন্ম অন্যের স্বাধীনতায় ও পছন্দে ভেটো দেয়ার মানসিকতা থেকে। সামগ্রিক এবং সম্মিলিত উদ্যোগে পানি ঢালার একতরফা চেষ্টা।'
শুধু চীনকে নয়, এই বার্তা রাশিয়াকেও দিতে চেয়েছেন জয়শঙ্কর। বিষয়টি নিয়ে চাপানউতোর বাড়তে থাকলে রাশিয়ার সাথে ভারতের সম্পর্কে তার প্রভাব পড়তে বাধ্য বলে মনে করেন কূটনীতিকদের একাংশ। কারণ কোয়াড থেকে কোনো অবস্থাতেই সরে দাঁড়াবে না ভারত। চীনের সাথে বৃহত্তর ভূকৌশলগত দ্বন্দ্বে আমেরিকাকে ভবিষ্যতে আরো বেশি করে প্রয়োজন পড়বে ভারতের। তা ছাড়া, ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে চীনের একচেটিয়া বাণিজ্যিক এবং কৌশলগত আধিপত্যের প্রয়াসে, অন্য দেশের মতো ভারতেরও ক্ষতি।
সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।