Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাশিয়া-ইউক্রেন সংঘাতের মধ্যে শুরু হচ্ছে কোয়াড বৈঠক

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ মার্চ, ২০২২, ৪:১৭ পিএম

রাশিয়া-ইউক্রেন সংকটের মাঝেই হচ্ছে কোয়াড গোষ্ঠীর বৈঠক৷ এই আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর চার সদস্য হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, অস্ট্রেলিয়া ও ভারত। ইতিমধ্যে ইউক্রেন রাশিয়ার হামলার বিরোধিতা করেছে অস্ট্রেলিয়া, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং জাপান। তবে জাতিসংঘে রাশিয়ার পক্ষ নিয়ে কোনও ভোটাভুটিতে অংশ নেয়নি ভারত। তাই এই পর্বে এদিনের কোয়াড বৈঠক গুরুত্বপূর্ণ। এমনটাই মনে করছেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞরা।

কোভিড আবহে গত বছর মার্চে প্রথম কোয়াড বৈঠক করেন চার রাষ্ট্রপ্রধান। কিন্তু এই বছর পূর্ব ইউরোপে পরিস্থিতি উত্তপ্ত। তাই রাশিয়ার পাশাপাশি কোয়াড সদস্যদের সঙ্গে মধুর সম্পর্ক জিইয়ে রাখা নয়াদিল্লির কাছে বড় চ্যালেঞ্জ। গত মাসে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর মেলবোর্নে বাকি তিন দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। সেই বৈঠকে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে চীনকে বার্তা দিয়ে সঙ্কল্প নেওয়া হয়েছিল।

ইন্দো-প্যাসিফিক ভূরাজনীতি মাথায় রেখে তৈরি হয়েছিল কোয়াড। যেখানে অস্ট্রেলিয়া, জাপান, ভারতের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিয়েছে। এবং এই কোয়াড নিয়ে চীন বরাবর অসন্তুষ্ট। সাম্প্রতিককালে কোয়াডের যৌথ নৌমহড়া নিয়েও চীন তীব্র আপত্তি জানিয়েছিল। কিন্তু সেই কোয়াডের মধ্যেও কী এবার বিভাজনের সম্ভাবনা তৈরি হলো? সাম্প্রতিক ইউক্রেন সংকট সেই কূটনৈতিক সম্ভাবনা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছে না। ইউক্রেন নিয়ে জাতিসংঘে এখনো পর্যন্ত দুইটি ভোট হয়েছে। শেষ ভোটাভুটি হয়েছে গত বুধবার। সেখানে ভারত কোনোপক্ষেই ভোট দেয়নি। কূটনৈতিক ভাষায় যাকে অ্যাবস্টেন করা বলে। বস্তুত, চীনও ওই ভোটে অ্যাবস্টেন করেছে। এর আগেও ভারত একই অবস্থান নিয়েছিল।

ভারতের অবস্থান নিয়ে প্রথমবার আমেরিকা বিশেষ মাথা ঘামায়নি। তারা জানিয়েছিল, ভারতের এই অবস্থানের জন্য ভারতের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক খারাপ হবে না। অন্যদিকে রাশিয়া ভারতের অবস্থানকে সাধুবাদ জানিয়েছিল। কিন্তু বুধবারও ভারত একই অবস্থান নেওয়ায় প্রকাশ্যেই খানিক উষ্মা প্রকাশ করেছে আমেরিকা। মার্কিন কূটনীতিবিদ ডোনাল্ড লু প্রকাশ্যেই বলেছেন, আমেরিকা চায় ভারত ইউক্রেন সংকটে স্পষ্ট অবস্থান নিক। কিন্তু ভারত তা নিচ্ছে না।

লুয়ের বক্তব্য, ''ভারত কূটনৈতিকভাবে সব রাস্তাই খোলা রাখতে চাইছে। সে কারণেই একটি নিরপেক্ষ অবস্থানে থাকতে চাইছে। আমেরিকা এবং রাশিয়া দুইজনের সঙ্গেই সম দূরত্ব এবং সম সম্পর্ক রক্ষা করতে চাইছে।'' কেন ভারত এই অবস্থান নিচ্ছে? মার্কিন কূটনীতিকের ধারণা, ইউক্রেনে আটকে থাকা ১৮ হাজার ভারতীয়কে ফেরানোর তাগিদ থেকে ভারত এ কাজ করতে পারে। একইসঙ্গে ভবিষ্যৎ ভূরাজনীতির কথাও মাথায় রাখছে ভারত।

প্রশ্ন উঠছে, কোয়াডে ভারতের বাকি তিন পার্টনারই রাশিয়ার বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছে। কূটনৈতিক ব্লক এখন কার্যত দুইভাগে বিভক্ত-- রাশিয়ার পক্ষে অথবা বিপক্ষে। ভারতের অবস্থান কি কোয়াডের বাকি সদস্যরা রাশিয়ার পক্ষে হিসেবে দেখবে? সেক্ষেত্রেও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলে ভারতের চাপ বাড়বে। ফলে এই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কী বলেন, তার দিকে তাকিয়ে আছে কূটনৈতিক মহল।

তবে সরকারিভাবে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় যে বিবৃতি জারি করেছে, তাতে বলা হয়েছে, কোয়াড বৈঠকের মূল আলোচনার বিষয় ইন্দো-প্যাসিফিক কূটনীতি। অর্থাৎ, ইউক্রেন সংকট নিয়ে ভারত যে এই বৈঠকে কথা বলতে চাইছে না, তা খানিকটা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আবার এই বৈঠকের আগেই গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন কূটনীতিবিদের বক্তব্য স্পষ্ট করে দিয়েছে, আমেরিকা চাইছে কোয়াডেও রাশিয়ার প্রসঙ্গ টেনে আনতে। সূত্র: পিটিআই, এনডিটিভি, এএনআই।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোয়াড বৈঠক
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ