পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সুষ্ঠু বিচার না হওয়া পর্যন্ত হাতিরঝিল থানা হেফাজতে নিহত সুমন শেখের (২৫) লাশ গ্রহণ করবে না তার পরিবার। এর আগে সুমনের লাশ তার গ্রামের বাড়ি নবাবগঞ্জে নেয়াসহ অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর দেয়ার শর্ত জুড়ে দিয়েছিলো পুলিশ। এ শর্ত না মানায় গত দু’দিন ধরে সুমনের লাশ পড়ে আছে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে। এদিকে পুলিশের দেয়া শর্তের বিষয়টি মিথ্যা দাবি করে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার রুবায়েত জামান বলেন, আমরা শনিবার থেকে লাশ হস্তান্তরের জন্য অপেক্ষা করছি। কিন্তু পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ আসছে না।
গতকাল রোববার সন্ধ্যায় নিহত সুমনের বেয়াই সজিব ইনকিলাবকে বলেন, পুলিশের দেয়া তথ্যমতে, সুমন শেখ শুক্রবার দিবাগত রাত ৩টার পরে থানা হাজতে আত্মহত্যা করেছেন। অথচ পরদিন শনিবার সকাল ১০টায় আমরা সুমনের সঙ্গে দেখা করতে থানায় যাই। পুলিশ তখন আমাদের জানায়, একটু পরে সুমনকে আদালতে নেয়া হবে। তাই এখন দেখা করানো যাবে না। আমরা তখন পুলিশের মাধ্যমের সুমনের জন্য নাস্তা পাঠাই। পুলিশ নাস্তা নেয়ার সময় ১শ’টাকা ঘুষ নেয়। তিনি বলেন, সুমন যদি শুক্রবার রাতে মারা যায়, তাহলে পুলিশ সকালে আমাদের কাছ থেকে কার জন্য নাস্তা নিয়ে গেছে? তিনি বলেন, সব থেকে আশ্চয্যের বিষয় হলো, সুমন রামপুরায় পিওরইট বিপননের যে অফিসে কাজ করতেন শনিবার সকালে ও্ই প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার আমাদের কাছে ৫ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। বিনিময়ে নাকি মামলা হালকা করে দিবেন। সজিব বলেন, সুমনের মৃত্যুর বিষয়টি সবাই জানতো। শুধু আমাদেরকেই জাননো হয়নি। আমরা সুমনের জামিন নিতে আদালতে গিয়ে বেলা ৩টায় জানতে পারি তার আত্মহত্যার ঘটনা। তাও আদালতে দেয়া পুলিশের নথি থেকে।
সুমনের মৃত্যুর জন্য থানা পুলিশের অবহেলা ও নির্যাতন এবং পিওরইট কোম্পানীকে দায়ী করে তাদের বিরুদ্ধে আইনের আশ্রয় নিতে গতকাল রোববার আদালতে গিয়েছিলেন নিহতের স্ত্রী জান্নাত আক্তার। কিন্তু আসামির তালিকায় পুলিশ কর্মকর্তার নাম থাকায় আইনজীবী পাওয়া যায়নি। আজ সোমবারও তারা আদালতে যাবেন। যেভাবেই হোক যাদের কারনে সুমনের মৃত্যু হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনি লড়াই চালিয়ে যাবেন।
এদিকে মর্গ সূত্র জানায়, শনিবার রাত ১টা পর্যন্ত মর্গের সামনে উপস্থিত ছিলেন সুমনের স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যরা। পুলিশও লাশ হস্তান্তরের অপেক্ষায় ছিলো। কিন্তু শেষ পর্যন্ত লাশ নেয়নি তার পরিবার। গতকাল রোববার রাত ৮টা পর্যন্ত নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে লাশ গ্রহনের জন্য কেউ মর্গে আসেনি। এ প্রসঙ্গে নিহতের স্ত্রী জান্নাত আক্তার বলেন, আমরা লাশ নিতে গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশের শর্ত মানতে না পেরে লাশ গ্রহন করিনি। কিন্তু এখন আমরা সীদ্বান্ত নিয়েছি, এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার না হওয়া পর্যন্ত সুমনের লাশ গ্রহন করা হবেনা।
তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার আজিমুল হক বলেন, পিওরইটের একটি চুরির মামলায় গ্রেপ্তার তিন আসামির দেয়া তথ্যেমতে, সুমনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ছয় বছর ধরে ওই প্রতিষ্টানে কাজ করতো সুমন। শুক্রবার বিকেলে গ্রেপ্তারের পর রাতে তার বাসা থেকে তিন লাখ ১৩ হাজার ৭০০ টাকা জব্দ করা হয়। পরে রাখা হয় হাতিরঝিল থানায়। রাত ৩টা ৩২ মিনিটে সুমন তার পরনে থাকা ট্রাউজার দিয়ে গলায় ফাঁস নেন, যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে।
এ ঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার রাতে দায়িত্বে থাকা ডিউটি অফিসার হেমায়েত হোসেন ও সেন্ট্রি মো. জাকারিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
এদিকে নিহতের পরিবারের অভিযোগ, সুমনকে ধরার পরই পুলিশ তাকে মারতে মারতে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নিয়েও নির্যাতন করে। সুমনের মৃত্যুর ঘটনায় বিক্ষুব্ধ স্বজন ও এলাকাবাসী শনিবার হাতিরঝিল থানার সামনে বিক্ষোভ করেন।
সুমন শেখ পশ্চিম রামপুরার ঝিলকানন এলাকায় পরিবার নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকতেন। তাঁর গ্রামের বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জের দাড়িকান্দি এলাকায়। সুমনের বাবার নাম পেয়ার আলী।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।