পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে সিলেট, চট্টগ্রামসহ দেশের ১৬৬টি চা বাগানের ২৩২টি ফাঁড়ি বাগানে চলমান ধর্মঘট নিরসনে চা শ্রমিক ও বাগান মালিকপক্ষের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বাংলাদেশ শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী। এ জন্য আজ মঙ্গলবার তিনি মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে আসবেন।
এ বিষয়ে বিভাগীয় শ্রম দফতর শ্রীমঙ্গলের উপ-পরিচালক মোহাম্মদ নাহিদুর ইসলাম জানান, মহাপরিচালক শ্রীমঙ্গলে এসে প্রথমে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বসবেন। তাঁদের দাবি দাওয়া নিয়ে বাগান মালিকদের সঙ্গেও কথা বলবেন। এখন যেহেতু ধর্মঘটের কারণে দুই পক্ষের মধ্যে একটা দূরত্ব তৈরি হয়েছে, তাই শুরুতেই দুই পক্ষকে নিয়ে একসঙ্গে বসে সমস্যার সমাধান কঠিন হবে। ইতিমধ্যেই উভয়পক্ষকে মহাপরিচালকের সঙ্গে বসার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছে। শ্রম অধিদফতরের সর্বোচ্চ ব্যক্তি যেহেতু আসছেন বিষয়টি সমাধান হবে।’ গত মঙ্গলবার থেকে চা বাগানের শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩০০ টাকা করার দাবিতে ৪ দিন কর্মবিরতি ও গত শনিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট পালন করছেন চা শ্রমিকেরা।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) নিপেন পাল জানান, ‘যেহেতু মহাপরিচালক আমাদের সঙ্গে বসে চলমান আন্দোলনের একটি সমাধান করতে চাচ্ছেন, আলোচনায় রাজি আছি আমরা। তবে কর্মসূচি অনুযায়ী চলবে আমাদের যৌক্তিক আন্দোলন। আমরা ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল নিয়ে সেখানে যাব।’
তিনি আরো জানান, ‘আমাদের শ্রমিকেরা কী কঠিন অবস্থায় আছে, সেটি অবশ্যই দেখতে হবে সরকার ও মালিকপক্ষকে। চা বাগানের শ্রমিকদের খাদ্যের অভাব, ভালো চিকিৎসার অভাব, ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার অভাব। ঘরে ঘরে শ্রমিকদের কষ্ট। আমরা এর একটি ভালো সমাধান চাই। ২০২২ সালে ডিজিটাল বাংলাদেশে এসে আমরা দাসত্বের জীবন কাটাতে চাই না। আমাদের দাবি নিয়ে সুন্দর সমাধান পেলে আন্দোলন প্রত্যাহার করব আমরা। কিন্তু দাবি না মানা হলে কঠোর আন্দোলনে নামব।’
কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা এই জানান, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির এই সময়ে চা শ্রমিকেরা অনেক কষ্টে দিন যাপন করছেন। ১২০ টাকা মজুরি দিয়ে কিছুই হয় না। আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু মালিকপক্ষ এখন পর্যন্ত আমাদের কোনো আশ্বাস দেয়নি। আমরা বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাতটি ভ্যালি থেকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। আমরা সারাজীবন বঙ্গবন্ধুর আদর্শে চলেছি, নৌকাকে ভোট দিয়েছি। আমাদের এ কঠিন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে ভালো একটি সমাধান চাই।’
তিনি আরো জানান, ‘গত রোববার সন্ধ্যা ৬টায় শ্রম অধিদফতরের একটি চিঠিতে আমাদের জানানো হয় আজ শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক চা শ্রমিকদের সমস্যা নিরসনে বসবেন। আমরা বসবো এবং আমাদের দাবি আদায়ের ধর্মঘটও চলবে।’
তিনি আরো বলেন, ‘গত রোববার চা বাগানে সাপ্তাহিক ছুটি উপলক্ষে আমরা সভা, সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল বন্ধ রেখেছি। গতকাল সোমবার জাতির পিতার মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে সব চা বাগানে শোক দিবস পালন করেছি। এই দুই দিন আমরা চা বাগানে সব কাজ বন্ধ রেখেছি। আজ দেশের সব চা বাগানে বিক্ষোভ মিছিল করা হবে। আগামীকাল বুধবার চা বাগানের শ্রমিকেরা সকাল থেকে প্রতিটি শহরে অবস্থান নেবেন।’
শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক খালিদ মামুন চৌধুরী জানান, ‘চা শ্রমিকদের চলমান সমস্যা সমাধানের জন্য আজ তাদের সঙ্গে বসবো এবং আগামি ২৩ আগস্ট মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ও সচিবসহ চা বাগান মালিকপক্ষকে নিয়ে মন্ত্রণালয়ে বসার সম্ভাবনা রয়েছে।’
এদিকে, দেশের চা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদের। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের দাবির যৌক্তিকতা ও তা মেনে নিতে আহ্বান জানান তিনি।
জি এম কাদের বলেন, যুগ যুগ ধরে চা শ্রমিকরা ন্যায্য অধিকার বঞ্চিত। বিবেকহীন শোষণে ধ্বংস হচ্ছে চা শ্রমিকদের স্বপ্ন। বর্তমান বাস্তবতায় শ্রমিকের দিনে মাত্র ১২০ টাকা মজুরি শুধু অমানবিক নয়, এটি শোষণের নিকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি আরো বলেন, দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন করছে শ্রমিকরা। আসলে, দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বগতির এমন বাস্তবতায় দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরিও যথেষ্ট নয়। শোষণের শিকার চা শ্রমিকরা স্বপ্ন দেখার সাহসও হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি অবিলম্বে চা শ্রমিকদের সব অধিকার নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ : ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই চা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি অবিলম্বে মেনে নেয়ার জন্যে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে পীর সাহেব চরমোনাই আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের যৌক্তিক দাবি মেনে নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান।
পীর সাহেব বলেন, যুগ যুগ ধরে চা শ্রমিকরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। তারা চরম অবজ্ঞা ও অবহেলার শিকার। অনেকদিন আগে চা শ্রমিকরা তাদের মজুরি বাড়ানোর দাবি করে আন্দোলন করলেও কর্তৃপক্ষ তা আমলে নেয়নি। এভাবেই বিবেকহীন শোষণে ধ্বংস হচ্ছে চা শ্রমিকদের স্বপ্ন।
তিনি বলেন, বর্তমান বাস্তবতায় এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের আকাশচুম্বি মূল্যবৃদ্ধির এ সময়ে শ্রমিকের দিনে মাত্র ১২০ টাকা মজুরি শুধু অমানবিক নয়, এটি শোষণের নিকৃষ্ট উদাহরণ। তিনি বলেন, দৈনিক কমপক্ষে ৩০০ টাকা মজুরির দাবিতে আন্দোলন করছে শ্রমিকরা। আসলে, দ্রব্যমূল্য উর্ধ্বগতির সময়ে দৈনিক ৩০০ টাকা মজুরিও যথেষ্ট নয়। চা শ্রমিকদের দৈনিক ৩০০ টাকার দাবি বেশি নয়। অবিলম্বে চা শ্রমিকদের সকল অধিকার নিশ্চিত করতে হবে এবং সেইসাথে তাদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে চা শ্রমিকদের কাজে ফিরিয়ে নিতে কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।