Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

শরীয়তপুরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, আইনের শিক্ষার্থীকে কুপিয়ে হত্যা

শরীয়তপুর জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১০ আগস্ট, ২০২২, ১:৩৮ পিএম

দুই পক্ষের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে শরীয়তপুরে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে আব্দুল ওয়াহিদুজ্জামান খান (৩২) নামের এক যুবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে। আর ওই ঘটনায় ১০ ব্যক্তি আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার বিকালে সদর উপজেলার চিকন্দি ইউনিয়নের আবুরা গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। নিহত ওই ব্যক্তি মাদারীপুর বঙ্গবন্ধু ল কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন।

চিকন্দি ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বর্তমান সদস্য আলমাছ খান ও সাবেক সদস্য তমিজ খানের সমর্থকদের মধ্য এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। নিহত ওয়াহিদুজ্জামান সাবেক ইউপি সদস্য তমিজ খানের ভাতিজা। তবে দুই পক্ষই স্থানীয় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত। তমিজ খানের গ্রুপে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচ্চু সরদার ও আলমাছ খানের গ্রুপে রয়েছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন খান ও তার ভাই স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতা ফরহাদ হোসেন খান।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দি ইউনিয়নের বিভিন্ন ওয়ার্ড ও গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আলমাছ খান ও তমিজ খান গ্রুপের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। ওই গ্রæপের সাথে জরিয়ে পরেছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচ্চু সরদার ও সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন খান তার ভাই সেচ্ছাসেবক লীগের জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফরহাদ হেসেন খান।

স¤প্রতি আওয়ামী লীগের একটি সভায় আলমাছ খানের লোকজন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচ্চু সরদারকে লাঞ্চিত করে। এর পর দুই পক্ষর সংঘর্ষ হয়। ওই ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার দুপুরে চিকন্দি বাজারে দুই পক্ষের সমর্থকদের মধ্য কথা কাটাকাটি হয়। তমিজ খানের ভাতিজা মোদাচ্ছের খান বাজার থেকে বাড়ি ফেরার পথে আলমাছ খানের সমর্থকরা ধাওয়া করেন। খবর পেয়ে মোদাচ্ছেরের ছোট ভাই ওয়াহিদুজ্জামানসহ লোকজন ছুটে আসে। তখন দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। দেশি অস্ত্র, রামদা, টেটা, বল্লম নিয়ে দুই পক্ষ সংর্ঘষে জরায়। এ সময় উভয় পক্ষের ১১ ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করা হয়। তাদের উদ্ধার করে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে আনা হয়। সদর হাসপাতালে আনার পর ওয়াহিদুজ্জামান মারা যান। অবস্থা সংকটাপন্ন থাকায় মিন্টু মাদবর (৪২) ও দিদার সিকদারকে (৩৫) উন্নত চিকিৎসার জন্য মঙ্গলবার রাতে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।

ওয়াহিদুজ্জামানের মৃত্যর খবর পেয়ে বিকালে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ছুটে আসে তার আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবরা। হাসপাতালের মেঝেতে বসে দুই বছরের শিশু সন্তান নিয়ে কান্না করছিলেন ওয়াহিদুজ্জামানের ন্ত্রী সুমি আক্তার। তিনি বলেন, আমার শ্বশুর বাড়ির লোকজন স্থানীয় রাজনীতি করে। কিন্তু আমার স্বামী আইন বিষয়ে পড়ালেখার পাশাপাশি বালু সরবরাহের ব্যবসা করতেন। তার সাথে কারো বিরোধ ছিল না। ভাইয়ের ওপর হামলা হয়েছে এমন খবর পেয়ে বাড়ি থেকে ছুটে যায়। তখনই আলমাছ খান ও আক্তার খানের লোকজন তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।

চিকন্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি বাচ্চু সরদার বলেন, আলমাছ খান, আক্তার ও তার ভাই ফরহাদ খান এলাকায় একক আধিপত্য বিস্তার করতে চায়। তারা আমাদের বিভিন্ন ভাবে হেনস্থা করতে ছিল। আজ তাদের সমর্থকরা আমাদের সমর্থক ওয়াহিদুজ্জামানকে কুপিয়ে হত্যা করেছে।
চিকন্দি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তার হোসেন বলেন, আমি আইনজীবী। রাজনীতি করলেও এলাকার মারামারির ঘটনায় জড়িত নই।
সংঘর্ষ ও হত্যাকান্ডের বিষয়ে জানতে চিকন্দি ইউপির ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য আলমাছ খান ও সাবেক সদস্য তমিজ খানকে ফোন করা হলে তারা ফোন ধরেননি।

শরীয়তপুর সদরের পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আক্তার হোসেন বলেন, এলাকার আধিপত্য বিস্তার কে কেন্দ্র করে স্থানীয় দুই পক্ষের সংঘর্ষে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। ১০-১২ জন আহত হয়েছে। এখন এলাকার পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। হত্যার সাথে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বুধবার দুপুর পর্যন্ত এই ঘটনায় কোন মামলা হয়নি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হত্যা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ