নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
বিশেষ সংবাদদাতা : ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে শ্রীলংকার বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচ চলাকালে টিভি ক্যামেরার সামনে অশোভন অঙ্গভঙ্গি, টেলিভিশন পর্দায় ভেসে ওঠায় সাকিবকে পেতে হয়েছিল দৃষ্টান্তমূলক সাজা। ৩ ম্যাচ বহিষ্কারাদেশের পাশাপাশি ৩ লাখ টাকা অর্থদ-ে দ-িত হতে হয়েছিল তাকে ওই নিন্দনীয় ঘটনায়। অর্থদ-ের অংকের দিক থেকে এটাই ছিল এতোদিন সর্বোচ্চ। মাঠের বাইরে শৃঙ্খলা ভঙ্গের ঘটনায় অর্থদ-ের নতুন রেকর্ড এবার গড়েছেন সাব্বির রহমান রুম্মান এবং আল আমিন হোসেন।
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-২০ চলাকালে মাঠের বাইরে বড় ধরনের কেলেঙ্কারির ঘটনা বিসিবি’র নজরে আসায় মঙ্গলবার রাতে বিসিবি’র ডিসিপ্লনারী কমিটি অর্থদ-ে দ-িত করেছে সাব্বির রহমান এবং আল আমিন হোসেনকে। বিপিএলের চলমান আসরে ‘এ’ প্লাস গ্রেডের ক্রিকেটার সাব্বিরের সম্মানী নির্ধারিত ছিল ৪০ লাখ টাকা, তার ৩০ শতাংশ কর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়ায় ১৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা কর্তিত হচ্ছে। যে পরিমাণ অর্থ তার ফ্রাঞ্চাইজি রাজশাহী কিংসকে জমা দিতে হবে বিসিবি’র অ্যাকাউন্টে। সেখানে প্লেয়ার্স ড্রাফটে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ২৫ লাখ টাকায় বিক্রি হওয়া বরিশাল বুলস’র পেসবোলার আল আমিনের সম্মানীর ৫০ শতাংশ কর্তনে অর্থদ-ের পরিমাণ দাঁড়াচ্ছে সাড়ে ১২ লাখ টাকা। বাংলাদেশ ক্রিকেট ইতিহাসে এতো বড় অর্থদ-ের ঘটনা এটাই প্রথম।
তবে ঘটনাটি নারীঘটিত বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানালেও সাব্বির, আল আমিনের প্রকৃত অপরাধ আপাতত গোপনীয় রাখার পক্ষে বিসিবি। ফিক্সিং সংক্রান্ত কোনো ঘটনায় নয়, টিম হোটেলে কড়া নজরদারির মধ্যে অনৈতিক কোনো ঘটনার প্রমাণ পাওয়ায় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে এই দুই ক্রিকেটারের উপর এতোটা কঠোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে গতকাল মিডিয়াকে জানিয়েছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিব ডা. আই এইচ মল্লিকÑ ‘এটা ফিক্সিং সংক্রান্ত কোনো ঘটনা না। এটা পুরোপুরি শৃঙ্খলাভঙ্গের ঘটনা। টিম হোটেলে আমাদের দুই-তিনটি টিম কাজ করে। অ্যান্টি করাপশন ইউনিট, ইনটেলিজেন্স ইউনিটের রিপোর্টের ভিত্তিতে আমরা ওই দুই ক্রিকেটারকে শুনানির মুখে এনে জেরা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এই কঠোর এবং দৃষ্টান্তমূলক সাজা ২ ক্রিকেটারকে দিয়ে প্রকারান্তরে তরুণদের সতর্ক সংকেত দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মল্লিকÑ ‘আমরা ঘটনাটি শনাক্ত করতে পেরে শাস্তি দিতে পেরেছি, এটাই বড় বিষয়। এর মাধ্যমে আমরা একটা বার্তা দিতে চেয়েছি। এই টুর্নামেন্টে কিন্তু অনেক বিদেশি খেলোয়াড় খেলছে। আমাদের জাতীয় দলের খেলোয়াড় খেলছে। উঠতি ক্রিকেটার আছে, যারা ভবিষ্যতে জাতীয় দলে খেলবে। তাই আমরা এসব ব্যাপারে আরও সিরিয়াস। যেহেতু এই টুর্নামেন্টটা আমাদের ট্যালেন্ট তৈরির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্লাটফর্ম। আমরা চাই না এখানে কোনো ঘটনা দেখে ইয়াং খেলোয়াড়রা ভুল পথে পা বাড়াক। সে জন্যই এমন পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। দু’জনের সাথেই ইতোমধ্যে আমাদের অ্যান্টি করাপশন ইউনিট এবং সিইও বসেছেন। তারা অভিযোগ স্বীকারও করেছে। ভবিষ্যতে এই কাজ তারা আর করবে না।’
জুপিটার ঘোষ এবং সানোয়ার হোসেনের পাল্টাপাল্টি অভিযোগে ওই ২ জনকে আপাতত বহিষ্কার করে, তদন্তের আওতায় তাদেরকে আনা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিবÑ ‘জুপিটার আর সানোয়ারের বিষয়টা তদন্ত করে পরের দিনই তাদেরকে সাসপেন্ড করেছি। একটা অডিও টেপও বের হয়েছিলো। এ ব্যাপারে বিসিবি এই ব্যাপারে কোনো ছাড় দিচ্ছে না। ফ্র্যাঞ্চাইজির ব্যাপারেও আমাদের নিয়ন্ত্রণ কঠোর। এখানে নিয়মের ব্যত্যয় হবার কোনো সুযোগ নেই। ঘটনার ২৫ দিন পর জুপিটার কেন ইনফর্ম করবে? তার তো উচিত ছিল এন্টি-করাপশন ইউনিটকে প্রথমেই জানানো। আর সানোয়ার ভাই যেহেতু আগে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের ম্যানেজার ছিলেন, আর আমরা যেহেতু তদন্ত করব, এই জন্য আমরা দুইজনকেই সাসপেন্ড করেই তাদের হেয়ারিং নিচ্ছি। কোনো রকম কালোদাগ যাতে না পড়ে, এ ব্যাপারে আমরা খুবই কঠোর।’
বরিশাল বুলস সম্পর্কে গায়ক আসিফের ফেসবুক মন্তব্য মনো:পূত হয়নি বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের। আসিফের মন্তব্যে বরিশাল বুলস অধিনায়ক মুশফিকুরের পাল্টা জবাবটা বরং পছন্দ হয়েছে বিপিএল গভনিং কাউন্সিলেরÑ ‘আসিফ ভাইয়ের মতো একজন নামকরা গায়কের ফেসবুকের মতো একটা প্লাটফর্মে এরকম কথা লেখা উচিত হয়নি। যেহেতু উনার কাছে কোনো প্রমাণ নেই, তাই ব্যক্তিগত মতটা পাবলিক ফোরামে না বলাই ভালো। সেক্ষেত্রে মুশফিকের রিএকশনটা তো পারফেক্ট। দলের বা ফ্র্যাঞ্চাইজির এম্বাসেডর হলে এই কথাটা বলা উচিত না। তার যদি কিছু বলার থাকে, বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল আছে, এন্টি-করাপশন আছে, মোরওভার আমাদের বিসিবি আছে। তারা তো এইসব কথা এ জায়গাগুলোতে বলবেন। ফেসবুকে একটা কথা বলে দিলে, এটা তো মানুষের মনে সন্দেহ তৈরি করে। ’
রংপুর রাইডার্সের প্লেয়ার্স পেমেন্ট নিয়ে খেলোয়াড়দের ভোগান্তিতে রাখলেও তা নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছুই দেখছেন না বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিলের সদস্য সচিবÑ ‘মুক্তার আলী বা জহুরুল ইসলাম অমি এবং আরো চার-পাঁচ জনকে গতবারের বকেয়া টাকা দেয়নি তারা। সম্ভবত সেই সব খেলোয়াড়েরা একটা লিখিত অভিযোগও দিয়েছে। তাদের মালিকানা কিন্তু বদল হয়েছে। আগে ছিল আই স্পোর্টসের কাছে, তারা বিক্রি করেছে সোহানা স্পোর্টসের কাছে। সোহানা স্পোর্টস যখন দায়িত্ব নেয় তখন তারা আমাদের সাথে লিখিত একটা চুক্তি করে যে তাদের আগের যে পাওনাটা সেটা তারা একটু সময় নিয়ে দিয়ে দিবে। এই আলোকেই তারা কিছু প্লেয়ারের পেমেন্ট করেছে, বাকিদেরকেও করে দিতে হবে। আর বাকিগুলো যদি তারা না করে, আমাদের কাছে তো তাদের ক্যাশ গ্যারান্টি আছে। অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজিরা কিন্তু ব্যাংক গ্যারান্টি দিয়েছে, কিন্তু রংপুরের কিন্তু আমাদের কাছে এক্সট্রা এক কোটি ২৫ লাখ টাকা রাখা আছে। আমরা ওখান থেকে দিয়ে দিবো। তারা যদি পেমেন্ট না করে, টুর্নামেন্টের শেষে আমরা হয়তো তাদেরকে ১৫-২০ দিন সময় দিবো। এর মধ্যে ক্লিয়ার না করলে তাদের যে ক্যাশ গ্যারান্টি আছে, সেখান থেকে দিয়ে দিবো।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।