বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
খুলনার খানজাহান আলী থানাধীন মীরেরডাঙ্গা-সেনপাড়ার দুই কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্বে মাঝখানে পড়ে নিহত দরিদ্র পাটকল শ্রমিক লিওন শেখ হত্যার প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে খুনিদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী। একই সাথে খুনিদের দৃষ্টান্দমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। শুক্রবার রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুর পর আজ শনিবার বিকালে লাশ নিয়ে এ অবরোধ করা হয়।
সূত্র জানায়, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নগরীর মীরেরডাঙ্গা ও সেনপাড়া এলাকার দুই কিশোর গ্যাংয়ের দ্বন্দ্বের মাঝে পড়ে গত ২ আগষ্ট দুপুরে গুরুতর আহত হয় মীরেরডাঙ্গা এলাকার মৃত আব্দুস সোবহান শেখের পুত্র, স্থানীয় ওয়েভ জুট মিলের শ্রমিক লিয়ন শেখ (১৮)। ৫ আগস্ট শুক্রবার রাত ৮টায় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে মারা যায়। লিয়ন হত্যার প্রতিবাদ ও খুনিদের গ্রেফতারসহ ফাঁসির দাবীতে আজ শনিবার দুপুর সাড়ে ৩ টা থেকে বিকাল সাড়ে ৫ টা পর্যন্ত খুলনা-যশোর মহাসড়কের ফুলবাড়ীগেট এলাকায় দু ঘন্টা রাজপথ অবরোধ করে লাশ নিয়ে বিক্ষোভ করে এলাকাবাসী। এ সময় খানজাহান আলী থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. কামাল হোসেন খান এবং এস আই হাসানুর রহমান এসে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থার আশ্বাস দিলে বিক্ষোভকারীরা অবরোধ তুলে নেয়। পরে মীরেরডাঙ্গা ও সেনপাড়া এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে তারা।
স্থানীয়রা জানান, সম্প্রতি মীরেরডাঙ্গা টিবি হাসপাতালের নদীর ঘাটে সাইড দেওয়াকে কেন্দ্র করে সেনপাড়া এলাকার ভ্যান চালক মানিকের সাথে ঘাটের আব্দুর রাজ্জাক নামের এক কাঠ ব্যবসায়ীর কথা কাটাকাটি হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মীরেরডাঙ্গা ও সেনপাড়া এলাকার কতিপয় কিশোরের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। গত ২ আগস্ট মীরেরডাঙ্গা এলাকার মৃত সোবহান শেখের পুত্র শিরমণি বাইপাসের ওয়েব জুট মিলের শ্রমিক লিয়ন শেখ দুপুরে খাওয়ার শেষে বাসা থেকে তার আত্মীয়ের সাথে দেখা করতে যাওয়ার পথে সেনপাড়া আনসার ফ্লাওয়ার মিল এর কাছে আসলে কিছু কিশোর তার পথরোধ করে বাড়ী কোথায় জানতে চায়। লিয়ন শেখ মীরেরডাঙ্গা বলার সাথে সাথে তারা রামদা, লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে তাকে ফেলে রেখে যায়। পরে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। গত ৫ আগস্ট রাত ৮টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। এই ঘটনায় নিহতের মামাতো ভাই নুর আলম শেখ বাদী হয়ে ১২ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত আরো ৫/৬ জনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় মামলা করেন (মামলা নং-৫, তাং-৫/৮/২০২২)।
নিহত লিয়নের বড় ভাই নয়ন শেখ জানান, মীরেরডাঙ্গা-সেনপাড়া এলাকার দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের বলি হলেন আমার নিরপরাধ ছোট ভাই। দুই পক্ষের দ্বন্দ্বের বিষয়ে আমার ছোট ভাই লিয়ন কিছুই জানতো না। শুধুমাত্র সে মিরেরডাঙ্গার বাসিন্দা হওয়ার কারনে তাকে সেনপাড়া এলাকার কিশোরেরা কুপিয়ে নির্মম ভাবে হত্যা করেছে। তিনি বলেন, নিহত লিয়নের মাথায় যে কোপটি দেওয়া হয়েছে সেখানে ৮ টি সেলাই দেওয়া হয়েছে। এছাড়া তার পিঠেসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দৌলতপুর থানার এসআই লুৎফুল হায়দার বলেন লিয়ন শেখ হত্যার ঘটনায় নিহতের মামাতো ভাই শুভ শেখ বাদী হয়ে ১২ জনকে আসামি করে দৌলতপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। মামলার অভিযুক্ত আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশি অভিযান অব্যহত রয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।