বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
আন্তর্জাতিক বেনাপোল ইমিগ্রেশন কাস্টমসে দীর্ঘদিন ধরে চলতে থাকা ভ্রমণ কর ফাঁকি ও জাল করোনা সার্টিফিকেট বন্ধে কঠোর অবস্থানে রয়েছে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। জাল ভ্রমন কর জালিয়াতির ঘটনা তদন্তে কাস্টমস’র যুগ্ন কমিশনার আ: রশিদ মিয়াকে প্রধান করে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
বিদেশ ভ্রমন কর জালিয়াতির ঘটনায় ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও ২০/২৫ জনের নামে মামলা করেছে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। দীর্ঘদিন বেনাপোল চেকপোস্টে জাল ভ্রমন কর ও জাল করোনা সার্টিফিকেট তৈরী করতে একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে।
মামলার পর শুক্রুবার রাতে এ ঘটনায় বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ গ্রীন লাইন পরিবহনের ম্যানেজার জসীম উদ্দিন ও শনিবার সকালে একই পরিবহন স্টাফ মোহনকে আটক করে যশোর আদালতে প্রেরণ করে। পলাতক রয়েছে মামলার অন্যান্য আসামিরা।
বেনাপোল চেকপোস্টের অবৈধভাবে গজিয়ে ওঠা প্রায় কম্পিউটার দোকান, মোবাইলের দোকান ও ফটোকপিসহ বিভিন্ন নামের এন্টারপ্রাইজের দোকানে এসব জাল ভ্রমন কর ও জাল করোনা সার্টিফিকেট তৈরী করা হচ্ছে। প্রশাসনের নাকের ডগায় গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠানে জাল জালিয়াতির ঘটনা ঘটলেও বরাবরই তারা ছিল নীরব।
জাল ভ্রমন কর মামলার অন্যান্য পলাতক আসামি হলো হানিফ পরিবহনের বেনাপোল শাখা অফিসের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম, দেশ ট্রাভেলস পরিবহনের ম্যানেজিং পার্টনার হাসান আলী, বড় আঁচড়া গ্রামের মিলন খান, সাদিপুর গ্রামের কামাল হোসেনের ছেলে ইমরান হোসেন, মমিনের ছেলে শামীম হোসেন, বেনাপোল ট্রাভেল পয়েন্টের কর্মচারী ইসমাইল হোসেন ও মনিরুল ইসলাম সহ অজ্ঞাতনামা ২০/২৫ জন।
বেনাপোল পোর্ট থানা পুলিশ জানায়, কাস্টম কমিশনারের নিদের্শে গোপন সংবাদের পেয়ে কাস্টমস এর একটি টিম বৃহস্পতিবার বিকেলে আšতর্জাতিক কাস্টমস চেকপোস্ট বর্হিগমন স্ক্যানিং মেশিনের সামনে ভারতগামী পাসপোর্ট যাত্রীদের ট্রাভেল ট্যাক্স রিসিট অনলাইনে কিউআর কোড স্ক্যান করে যাচাইকালে বেশ ক’টি রিসিট জাল প্রমানিত হয়।
পরে কর্মকর্তারা গ্রীন লাইন পরিবহনের ১৩ জন, হানিফ পরিবহনের ৮জন, দেশ ট্রাভেলস পরিবহনের ৭ জন যাত্রীর ট্রাভেল ট্যাক্স রিসিটি পরীক্ষা করে জাল প্রমান পায়। গ্রীন লাইনের ১৩ জন যাত্রীই জানান যে তাদের বহনকৃত জাল ট্রাভেল ট্যাক্স রিসিটি গুলো গ্রীনলাইন পরিবহনের ম্যানেজার জসীম উদ্দিন, অফিস পিয়ন মোহন মিয়া এবং তাদের অফিস স্টাফগণ তাদের কাছ থেকে ভ্রমন করের টাকা নিয়ে জাল রিসিটি প্রদান করেন।
হানিফ এন্টার প্রাইজের ৮জন যাত্রী জানান, তাদের বহনকৃত জাল ট্রাভেল ট্যাক্স উক্ত পরিবহনের ম্যানেজর নজরুল, অফিস পিয়ন মিলন খান এবং তাদের স্টাফগণ তাদেরকে দিয়েছেন।
পুলিশ আটক দুজনকে জিঞাসাবাদে করলে তারা ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন।
বেনাপোল কাস্টম হাউসের সহকারি রাজস্ব কর্মকর্তা এফ এম আতিকুর রহমান বাদি হয়ে মামলাটি করেন। তিনি জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ পরস্পর যোগ সাজসে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত পাসপোর্ট যাত্রীদের ভ্রমন কর ৫০০ টাকা সহ মোট ৭০০ টাকা যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করে সরকারের রাজস্ব ফাকি দিয়ে আসছিল এই চক্রটি।
সরকারের বিপুল অংকের এই রাজস্ব ফাকির ঘটনায় বিভিণœ গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করলে আরও কোটি টাকার ভ্রমনকর ফাকির ঘটনা ধরা পড়বে বলে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ মনে করেন।
অতিতের দা সরকারী রাজস্ব হাতিয়ে নিয়েছে। তাংক্ষণিক বেনাপোল পোর্ট থানায় বিষয়টি অবগত করলে পুলিশ সদস্যরা আর্ন্তজাতিক চেকপোস্ট কাস্টম বেনাপোলে এসে এ সকল যাত্রীদের কাছ থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের জাল ট্রাভেল ট্যাক্স পে শ্লীপ(বাই ল্যান্ড) এর ২৯ পাতা এবং ১১ জন যাত্রীর বিবৃতি মোট ৫ পাতা গ্রহণ করেন।
পুলিশ ও কাস্টমস যৌথ অভিযানে চেকপোস্টে একটি কম্পিউটার দোকাণ থেকে জাল ট্রেজারী পূরণকৃত চালান ফরম ২ পাতা এবং ১টি হিটাচি ব্রান্ডের এ ইউ জি-২০১০ মডেলের হার্ডডিস্ক, ১টি ডব্লিউ ডি ব্লু ডেস্কটপ হার্ড ড্রাইভ, ১টি ডব্লিউ ডি গ্রীন সাটা এসএসডি, ১টি লেজার সলিড স্টেট ড্রাইভ জব্দ করা হয়।
বেনাপোল কাস্টমস হাউসের যুগ্ন কমিশনার আ: রশিদ মিয়া জানান, সরকারের বিদেশ ভ্রমন কর জাল জালিয়াতির সাতে যারাই জড়িত তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনা হবে। পূর্বে এধরনের জালিয়াতি করে যারা ভ্রমন কর জাল করেছেন সেসব ^ ফাকিবাজদের কাছ থেকে ফাকি দেওয়া টাকা আদায় করা হবে।
বেনাপোল পোর্ট থানার অফিসার ইনচার্জ(ওসি) কামাল হোসেন ভুঁইয়া জানান, ভ্রমন কর জাল করে রাজস্ব ফাকির ঘটনায় কাস্টমসের দেয়া মামলায় জালিয়াত চক্রের ৯ জন আসামিসহ অজ্ঞাত নামা ২০/২৫ জন আসামিকে আটক করা হবে। তবে ইতিমধ্যে ২ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে করোনা জাল সার্টিফিকেট তৈরীর জালিয়াতি চক্রের বিরুদ্ধেও ব্যব স্থা গ্রহন করা হচ্ছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।