শেখ ফজলুল করিমের জীবন ও সাহিত্য
বাঙ্গালী মুসলমানদের লুপ্ত গৌরব ও ইতিহাস ঐতিহ্য নিয়ে যে কয়জন খ্যাতনামা মুসলিম সাহিত্যিক স্মরণীয় বরণীয়
এখানে কবি বলেছেন-‘তোমার-না আসাগুলো ক্রুশবিদ্ধ যীশুর ন্ত্রণা হয়ে ঝরে মনে নিশিদিন।’ সোনালী কাবিন খ্যাত আল মাহমুদের রচনাতেও আমরা বিরহ-কাব্য দেখতে পাই। তাঁর অমর কবিতা ‘সোনালী কাবিন’-এ প্রেমের পাশাপাশি অনাকাঙ্খিত বিরহের সুর স্পষ্ট। এখানে তিনি লিখেছেন-‘সোনার দিনার নেই, দেনমোহর চেয়ো না হরিনী/যদি নাও, দিতে পারি কাবিনবিহীন হাত দু’টি/আত্মবিক্রয়ের স্বর্ণ কোনকালে সঞ্চয় করিনি/আহত বিক্ষত করে চারদিকে চতুর ভ্রুকুটি;/ভালোবাসা দাও যদি আমি দেব আমার চুম্বন/ছলনা জানিনা বলে আর কোন ব্যবসা শিখিনি;/দেহ দিলে দেহ পাবে, দেহের অধিক মূলধন/আমার তো নেই সখি, যেই পণ্যে অলঙ্কার কিনি।’ ২০১৬ সালে তাঁর ‘প্রকৃতি, প্রেম ও বিরহের কবিতা’ নামে একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়। এখানে ‘অরণ্যে ক্লান্তির দিন’ কবিতায় তিনি লিখেছেন-‘কখন যে চাঁদ ওঠে আড়াআড়ি পাহাড়ের ফাঁদে/যেন কার পাথুরে স্তনের কাছে ঝুলে আছে শাদা চাঁদির লকেট। দূরে, অতিকায় পাহাড় চুড়োয়/অপার্থিব আলো জ্বলে শিবের মন্দিরে। আর ভাবি আমার মতন বুঝি জেগে আছে সেখানেও কেউ/অসংসারী, শঙ্কাহীন, মিথ্যে কোন মায়াবী আশায়।’ তারুণ্য ও সংগ্রামের দীপ্ত প্রতীক কবি রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ্ ‘ভালো আছি ভালো থেকো, আকাশের ঠিকানায় চিঠি লিখো’ শিরোনামে যে কালজয়ী গান লিখেছিলেন তা আজো মানুষের হৃদয় দখল করে আছে। তিরিশ থেকে আশির দশকের মধ্যে প্রধান কবিরা বিরহ প্রতিফলনের যে নিজস্বতা দেখিয়েছেন, তারপর থেকে বর্তমান আধুনিক সাহিত্যিকদের মধ্যে এতটা প্রতিফলিত হয়নি। তবে বর্তমান তথা জীবিতদের মধ্যে প্রেম ও বিরহের কবি বলে পরিচিত হেলাল হাফিজ বিংশ শতাব্দীর শেষদিকে কিছু অসামান্য বিরহের কবিতা জন্ম দিয়েছেন। তাঁর প্রথম কবিতা সংকলন ‘যে জলে আগুন জ্বলে’ ১৯৮৬ সাথে প্রকাশ পায়। এরপর তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। তাঁর আরেকটি কাব্যগ্রন্থ ‘বেদনাকে বলেছি কেঁদো না’-তে দুঃখ-বেদনা তথা বিরহকে শিল্পে রূপান্তর করেছেন সুনিপুণভাবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।