নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
প্যারিসে ফুটবল রোমাঞ্চের যে ধরফড়ানি উঠেছিল বুকে, সেটি থামেনি এখনও। চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ফাইনালের সেই উত্তাপ ইউরোপিয়ান ফুটবলে এখনো বিদ্যমান। এর মধ্যেই আবারও আরেক রোমাঞ্চকর ম্যাচের ক্ষণগণনা শুরু হয়ে গিয়েছে। অপেক্ষা আর মাত্র কয়েকটা ঞন্টার। বাংলাদেশ সময় আজ দিবাগত রাত পৌনে ১টায় ইংল্যান্ডের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হবে কোপা আমেরিকাজয়ী আর্জেন্টিনা ও ইউরোজয়ী ইতালি। বৈশ্বিক সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে ম্যাচটির একটি আদুরে নামও হয়ে গিয়েছে- ‘লা ফিনালিসিমা’।
ইউরো ও কোপা আমেরিকাজয়ী দুই দলের ম্যাচ আয়োজন নিয়ে বহু আগেই চুক্তি হয়েছিল দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল ও ইউরোপের ফুটবলের নিয়ন্ত্রক উয়েফার। সে ম্যাচই বাস্তবতার আলো দেখছে আজ। এর মাধ্যমেই ২৯ বছর পর আবারও ফুটবলপ্রেমীরা দেখতে যাচ্ছেন ‘কনমেবল-উয়েফা কাপ অব চ্যাম্পিয়ন্স’ প্রতিযোগিতার তৃতীয় কিস্তি। লড়াইটা নিঃসন্দেহে মুখরোচক। মাঠের এক প্রান্তে দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন, অন্য প্রান্তে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন।
দুই মহাদেশের দুই চ্যাম্পিয়নের মুখোমুখি হওয়ার ম্যাচকে ‘লা ফিনালিসিমা’ বলা হলেও একসময় এই ম্যাচের নাম ছিল আর্তেমিও ফ্রাঞ্চি কাপ। এটি একটি অফিশিয়াল প্রতিযোগিতা, যা ইউরোপিয়ান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা এবং দক্ষিণ আমেরিকান ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল বন্ধুত্বের অংশ হিসেবে যৌথভাবে আয়োজন করেছে এর আগে। ১৯৮৫ সালে তখনকার ইউরো চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স এবং কোপা আমেরিকাজয়ী উরুগুয়ের মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে এ প্রতিযোগিতা মাঠে গড়ায়। এরপর ১৯৯৩ সালে দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হয় আর্জেন্টিনা ও ডেনমার্ক। তখন আর্জেন্টিনা ছিল কোপা আমেরিকা চ্যাম্পিয়ন এবং ডেনমার্ক ইউরো জিতেছে। আগেরবার ইউরোপের দল জিতলেও এবার জেতে দক্ষিণ আমেরিকার আর্জেন্টিনা।
তবে সেবার আলবিসেলেস্তিদের হয়ে ডিয়েগো ম্যারাডোনা ও গ্যাব্রিয়েল বাতিস্তুতার মতো তারকা খেললেও গোল পেতে বেশ ভালোই সংগ্রাম করতে হয়েছিল। নেস্তর ক্রাভিওতোর আত্মঘাতী গোলে প্রথমে আর্জেন্টিনা পিছিয়ে পড়লেও ক্লদিও ক্যানিজিয়ার গোলে সমতা আসে। ৯০ মিনিট ও অতিরিক্ত সময়ের পর ম্যাচ অমীমাংসিত থাকলে ম্যাচ গড়ায় পেনাল্টি শুটআউটে। সেখানে আবার ম্যারাডোনা-বাতিস্তুতা লক্ষ্যভেদ করতে পারলেও মিস করেন ক্যানিজিয়া। তাতে ক্ষতি হয়নি অবশ্য। টিম ভিলফোর্ট ও বিয়ার্নে গোল্ডবেকের পেনাল্টি মিস করার কারণে শিরোপা জিতে যায় আর্জেন্টিনা। এরপর এই প্রতিযোগিতা স্থগিত হয়ে যায়। শুধু ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার বিজয়ী দলই নয়, সব মহাদেশের শিরোপাজয়ী দলকে নিয়ে একটা টুর্নামেন্ট আয়োজনের লক্ষ্যে জন্ম নেয় কনফেডারেশনস কাপ।
২০১৯ সালে সে প্রতিযোগিতাও বাতিল করে দেওয়া হয়। এ কারণে আবারও ‘কনমেবল-উয়েফা কাপ অব চ্যাম্পিয়নস’ চালু করার উদ্যোগ নেয় দুই অঞ্চলের ফুটবল নিয়ন্ত্রক দুই সংগঠন। তারই ফসল আজকের ‘লা ফিনালিসিমা’। তবে এবার ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকছে না ম্যাচের ভেন্যু। বøকবাস্টার এই ম্যাচ আয়োজনে এগিয়ে এসেছে ইংল্যান্ড। আর তাতে ফের বর্তমানে এসে দাঁড়িয়েছে ২৯ বছর আগের ইতিহাস। দীর্ঘ প্রায় তিন দশক বিরতির পর আবারও এ ম্যাচে মুখোমুখি হচ্ছে দুই মহাদেশের দুই চ্যাম্পিয়ন। তাতে সবচাইতে আলোচিত নামটি লিওনেল মেসি। যাকে ধরা হয় ম্যারাডোনার যোগ্য উত্তরসূরী। ম্যাচটি নিয়ে রোমাঞ্চিত দু’দলের ফুটবলাররাও। প্রস্তুতি নেওয়ার ফাঁকে কথা বলেছেন বর্তমান সময়ের সেরা ফুটবলার নল মেসিকেও। আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেসি বলেছেন, ‘ম্যাচটা দারুণ হবে! ওরা ইউরোপের চ্যাম্পিয়ন। বিশ্বকাপে থাকলে ফেবারিট ধরা হতো। দুর্ভাগ্য যে খেলার সুযোগ পায়নি। ফুটবলীয় কারণেই তারা বাদ পড়েছে। বিশ্বকাপের ড্রয়ে কেউ তাদের মুখোমুখি হতে চাইত না।’
তার কথায় অবশ্য ইতালির কষ্ট বাড়বে। ২০২২ কাতার বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব থেকেই যে বাদ পড়েছে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। তাইতো এই ম্যাচে তাদের প্রতিও সমান সমীহ রাখছেন রেকর্ড সাতটি ব্যালন ডি’অর জয়ী তারকা, ‘তাদেরও একই রকম মনে করা উচিত। অর্থাৎ জেতার জন্য মাঠে নামা উচিত। এটা তো অফিশিয়াল ম্যাচ, যা আয়োজন করছে ফিফা। খেলোয়াড়েরা ভক্ত ও দেশের জন্য নিজেদের ঝুলিতে আরেকটি কাপ যোগ করতে চায়।’ ইতালির বিপক্ষে ১৯৮৭ সাল থেকে হারেনি আর্জেন্টিনা। ইংল্যান্ডে ২০১৮ সালে সর্বশেষ মুখোমুখিতে ২-০ গোলে জিতেছিল আর্জেন্টিনা। তবে ইতালিকে নিয়ে কথা বলতে গিয়ে মেসি ঘুরেফিরে তাঁদের বিশ্বকাপে অনুপস্থিতির প্রসঙ্গই বেশি টানলেন, ‘এটা অবিশ্বাস্য যে ওরা ইউরো জিতলেও বিশ্বকাপে নেই। আবারও বাদ পড়ল বিশ্বকাপ থেকে। অর্থাৎ বিশ্বকাপের সঙ্গে ইতালির সম্পর্কটা লজ্জার।’
তবে কথার লড়াইয়ে না ভিজে চলুন ওয়েম্বলির রোমাঞ্চের খোঁজে। এরপরই বোঝা যাবে মেসি-ডি মারিয়া, না জর্জিনিও-কিয়েল্লিনি, কাদের হাতে শোভা পাবে আন্তর্জাতিক এই শিরোপা!
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।