Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পটুয়াখালীতে ব্যবসায়ী শিবু অপহরনের ঘটনায় জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাসহ গ্রেপ্তার ৬।

পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৭ এপ্রিল, ২০২২, ৬:১৮ পিএম

পটুয়াখালীর বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শিবু লাল দাসকে অপহরনের পর ২০ কোটি টাকা মুক্তিপন দাবীর ঘটনায় জড়িত পটুয়াখালী জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগ সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আতিকুর রহমান পারভেজসহ ৬ জনকে প্রাথমিক ভাবে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার দুপুরে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ ঘটনার অভিযানে থেকে ভিডিও কন্ফারেন্সে যোগ দিয়ে সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে ব্রিফিং করেন ।এ সময় তিনি জানান এ ঘটনার মুল হোতা মো. মামুন ওরফে ল্যাড়া মামুনসহ তিন জন মূল পরিকল্পনাকারীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে ।ভিডিও কনফারেন্সরে পটুয়াখালী প্রান্তে পুলিশ সুপার কার্যালয়ের হলরুমে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) মাঈনুল হাসান সাংবাদিকদের সাথে উপস্থিত ছিলেন। এ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল সাজেদুল ইসলাম, সদর থানার ওসিসহ পুলিশের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
গ্রেফতারকৃত আসামীরা হলেন, শামিম আহমেদ, আক্তারুজ্জামান সুমন, মো. আতিকুর রহমান পারভেজ, মো. মিজানুর রহমান সাবু গাজী, মো. বিল্লাল ও সাব্বির হোসেন জুম্মান। এরা সকলেই পটুয়াখালীর শহরের বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দা।
প্রেসব্রিফিং এ বলা হয়, গত ১১ এপ্রিল সোমবার রাতে শহরের নিজ বাসায় যাওয়ার সময় গলাচিপা উপজেলার হরিদেবপুর-শাখারিয়া আঞ্চলিক মহাসড়কের যে কোন স্থান থেকে শিবু লাল দাস ও তার গাড়ী চালক অপহরন হন। রাত ১২ টা ২ মিনিট ও ১টা ৫৯ মিনিটের সময় ভিকটিমের মোবাইল থেকে তার স্ত্রীর ব্যবহৃত মোবাইল নম্বরে কল করে অজ্ঞাতনামা ব্যাক্তি জানায় ভিকটিমকে তাদের নিকট আটক করে রেখেছে একই তারিখ ১২ এপ্রিল দুপুর ২টার মধ্যে ২০ কোটি টাকা মুক্তিপন দিলে ভিকটিমকে তারা জীবিত অবস্থায় তাদের কাছে ফেরত দিবে নতুবা তাদের লাশ পাবেন। পরে পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ এর নেতৃত্বে জেলা পুলিশের সকল টিম সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করে শিবুলাল দাসের গাড়ীটি একটি পেট্রোল পাম্প থেকে উদ্ধার করে। ২৪ ঘন্টার পরে শহরের এসপি কমপ্লেক্স শপিংমলের আন্ডারগ্রাউন্ড থেকে ল্যাড়া মামনুনের গোডাউন থেকে জীবিত অবস্থায় শিবু লাল দাস ও তার ড্রাইভার মিরাজকে উদ্ধার করা হয়। ভিকটিমের ছেলে বুদ্ধদেব দাস বাদী হয়ে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কাজে ভিকটিমের দেয়া তথ্য উপাত্ত, সিসিটিভির ফুটেজ, তথ্য প্রযুক্তির ও প্রচলিত নিয়মে গোপন তথ্যের ভিত্তিতে অত্র ঘটনার মুল পরিকল্পনাকারী নেতৃত্বেদানকারীসহ অপহরন কাজে বিভিন্ন পর্যায়ে অংশ গ্রহনকারীদের সনাক্ত করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থান হতে অভিযান পরিচালনা করে ১৬ এপ্রিল রাত ৮টা ৩৫ মিনিটে ৬ জন আসামীদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিকটিমকে বহনকৃত ব্যাটারী চালিত অটো রিক্সাও উদ্ধার করা হছে।
পুলিশ সুপার লিখিত ব্রিফিংয়ে আরও বলেন, এ ঘটনার মুল হোতা মো. মামুন ওরফে ল্যাংড়া মামুনসহ তিন পরিকল্পনাকারী ঘটনার পর দেশের বিভিন্ন স্থানে পলাতক থাকায় ঢাকা মেট্রোপলিটনের ডিবি টিম ও পটুয়াখালীর জেলার একাধিক টিম দেশের বিভিন্ন জায়গায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করে অপহরনের কাজে জড়িত সকলকে গ্রেফতারে অভিযান চলমান আছে।
ব্রিফিংয়ে আরও জানানো হয়েছে, গোপন তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় ল্যাংড়া মামুনসহ ৩জন অপহরন ঘটনার মূল পপরিকল্পনাকারী। শিবু লাল ও তার চালকে অপহরনের পর হাত, পা, মূখ বেধে গাড়ীতে উঠিয়ে মামুনের কথিত গোপন আস্তানায় এনে শারিরিকভাবে অত্যাচার করে আটক রাখা হয়। পর দিন তাকে গুম করার উদ্দেশ্যে তার গোপন আস্তানা হতে এসপি কমপ্লেক্সে এর নীচতলায় পাকিং এর মামুনের গুদামে রাখা হয়। এ ঘটনায় বিভিন্ন স্তরে ১৫ থেকে ২০ জন অপহরনকারী জড়িত রয়েছে মর্মে জানান যায় এবং অপহরনকারীরা অত্যন্ত দূর্ধর্ষ।


অপর একটি র্নিভরযোগ্য সুত্রে জানা গেছে,-তৎকালিন সময়ে ঢাকায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর ক্রাইম নিয়ন্ত্রন অভিযানে গোলাগুলিতে পা হারায় এই মামুন। পরে ব্যবসায়ী সেজে পটুয়াখালীতে আত্মগোপনে থাকে। এছাড়াও মামুনের বড় ভাই মিজান ওরফে ডেন্টিং মিজান শিশু অপহরন ও দুই কোটি টাকা মুক্তিপনের মামলায় ফেরারী। র‌্যাব-১ এর অভিযানে মিজার আটক হলে ভুয়া জামিননামা দিয়ে ঢাকার আদালত থেকে মুক্ত হয়ে গা ঢাকা দিয়ে আছে। মামুন তার শ্বশুর বাড়ী বড় চৌরাস্তার মালেক মিয়ার সাথে মিজানের যোগাযোগ আছে বলে ওই সুত্রটি নিশ্চিত করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: গ্রেপ্তার


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ