বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
ফেসবুকে সামিয়া জাহান নামের একজন নারী সেজে মাদরাসাশিক্ষকের সঙ্গে প্রেম করছিলেন এক যুবক। একসঙ্গে ঘুরে বেড়ানোর কথা বলে সেই শিক্ষককে ডেকে নিয়ে সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং জিরো পয়েন্ট এলাকায় হাত-পা বেঁধে ও শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) বিকেলে গোয়াইনঘাট থানায় সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানায় সিলেট জেলা পুলিশ।
হত্যাকাণ্ডের শিকার মাদরাসার শিক্ষক হলেন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার কালাম বহরপুর গ্রামের বাসিন্দা কাউসার মিয়া (৩৪)। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে একটি মাদরাসায় শিক্ষকতা করতেন। হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত যুবকের নাম শামসুল ইসলাম (২৮)। তিনি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার দাদনচক মিয়াপাড়ার বাসিন্দা।
গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম বলেন, সামসুল ইসলাম হাসান ছয়-সাত মাস আগে সামিয়া জাহান নামে একটি ফেসবুক আইডি খুলে নিহত মাদরাসাশিক্ষক কাউছার আহমদ রাজুকে রিকোয়েস্ট পাঠিয়ে বন্ধুত্ব করেন। এরপর থেকে তাদের মধ্যে নিয়মিত মেসেঞ্জারে চ্যাটিং হতো। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক তৈরি হয়।
বৃহস্পতিবার পহেলা বৈশাখে সামসুল জাফলং বেড়াতে এসে রাজুকে ফেসবুক মেসেঞ্জারে জাফলং আসার জন্য আমন্ত্রণ জানান। সে অনুযায়ী তার সঙ্গে দেখা করতে নিহত রাজু জাফলং আসেন এবং সামসুল তাকে জাফলংয়ের মেঘালয় হোটেলে নিয়ে যান।
ওসি বলেন, হোটেল কক্ষে যাওয়ার পর সামসুল তার সঙ্গে থাকা পিস্তল সদৃশ লাইটার দিয়ে রাজুকে ভয় দেখিয়ে জিম্মি করেন। পরে রাজুর স্ত্রীর কাছে ফোন দিয়ে দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। রাজুর স্ত্রী ওই টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাকে পিস্তলের ভয় দেখিয়ে একটি টমটমে নিয়ে জাফলং জিরো পয়েন্ট সংলগ্ন বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের নির্জন স্থানে নিয়ে যান।
পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, সেখানে সামসুল নকল পিস্তলের ভয় দেখিয়ে রাজুর দুই হাত-পা কাপড় দিয়ে বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন। পরে ফের তিনি জাফলং মেঘালয় হোটেলে চলে যান। স্থানীয় লোকজন রাত পৌনে ১টার দিকে অজ্ঞাত ব্যক্তির হাত-পা বাঁধা মরদেহ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে বিষয়টি তদন্তে নামে। এরপর জাফলং মেঘালয় হোটেল থেকে পুলিশ ভোর ৪টায় সামসুলকে আটক করে।
এসময় তার কাছ থেকে নিজের ব্যবহৃত চারটি মোবাইল ফোন ও নিহত রাজুর দুটি মোবাইল ফোন, একটি পিস্তল সদৃশ লাইটার জব্দ করে পুলিশ। আটকের পর সামসুল হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেন বলেও জানান ওসি।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ জানায়, সামিয়া জাহান পরিচয়ধারী যুবক শামসুল ইসলামের নিজেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য হিসেবে পরিচয় দিয়ে তাকে ভয় দেখান।
এ ঘটনায় গোয়াইনঘাট থানায় হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) শাহরিয়ার বিন সালেহ, গোয়াইনঘাট সার্কেলের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার প্রবাস কুমার সিংহ, গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম নজরুল ইসলাম ও পরিদর্শক (তদন্ত) ওমর ফারুক মোড়ল।
এদিকে অপর একটি ঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে গোয়াইনঘাটের পেকেরখাল এলাকা থেকে মুক্তার হোসেন নামের এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গলায় ছুরিকাঘাতে তিনি নিহত হন। নিহত মুক্তার উপজেলার ভিতরগুল গ্রামের কুটু মিয়ার ছেলে। লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলা প্রক্রিয়াধীন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।