Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিশ্বে পানি সঙ্কটে পড়তে যাচ্ছে ৫শ’ কোটি মানুষ

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৩ মার্চ, ২০২২, ১২:০২ এএম

২০৫০ সালের মধ্যে ৫০০ কোটির বেশি মানুষ পানি পেতে অসুবিধায় পড়তে পারে। জাতিসংঘের চলতি বছরের পানি উন্নয়ন প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। রয়টার্স জানিয়েছে, সোমবার ওই প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে। এর আগে ২০১৮ সালে ৩৬০ কোটি মানুষ বছরে অন্তত এক মাস পানি পেতে অসুবিধায় পড়ার কথা জানা গিয়েছিল। জাতিসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডাবিøউএমও) গত বছরের অক্টোবরে এক রিপোর্টে এ তথ্য জানিয়েছিল। ডাবিøউএমও প্রধান পেটেরি তালাস ওই সময়ে বলেছিলেন, পানি সঙ্কট মোকাবিলায় আমাদের জেগে উঠতে হবে। ডাবিøউএমও ওই সময় জোর দিয়ে বলেছিল যে, গত দুই দশকে ভ‚মিতে সঞ্চিত পানির স্তর, ভ‚পৃষ্ঠে, ভ‚গর্ভে, তুষার এবং বরফে প্রতি বছর এক সেন্টিমিটার হারে হ্রাস পেয়েছে। পানির সংকট আগামী তিন দশকে আরো খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি, খরা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে এই অবস্থার সৃষ্টি হতে পারে বলে জাতিসংঘের ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতিবছর বিশ্বে পানির ব্যবহার এক শতাংশ হারে বাড়বে। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে পানি সরবরাহের প্রচলিত উৎস খাল ও বিল শুকিয়ে ভ‚গর্ভস্থ পানির ওপর চাপ পড়ছে বলেও জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। বিশ্ব পানি উন্নয়ন প্রতিবেদন ২০২২ এ আরো বলা হয়েছে, বর্তমানে বিশ্বের ৯৯ শতাংশ সুপেয় পানির উৎস হলো ভ‚গর্ভস্থ। সেই পানির অবমূল্যায়ন, অব্যবস্থাপনা এবং অপব্যবহারের কারণে এটি ক্ষতির মুখে পড়ছে। ‘বৈশ্বিক পানি সঙ্কটের সমাধান যদি আমাদের অজানা থেকে যায়, সেটা কেমন হবে?’- জানতে চেয়েছেন ইউনেসকো কর্তৃক প্রস্তুত করা প্রতিবেদনটির প্রধান সম্পাদক রিচার্ড কনর। থমসন রয়টার্স ফাউন্ডেশনকে রিচার্ড কনর আরো বলেছেন, ভ‚গর্ভস্থ পানি ব্যবহারে টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে পারলে তা থেকে অনেক সুবিধা পাওয়া যাবে। এদিকে বিশ্বে জনসংখ্যা ক্রমান্বয়ে বেড়ে যাওয়ার কারণে পানি সরবরাহ ব্যবস্থায় ব্যাপক চাপ পড়েছে। সে কারণে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভ‚গর্ভস্থ পানির যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে। ভ‚গর্ভস্থ পানির এতো গুরুত্ব কেন এবং এর সুবিধা কী? বিশ্বের মোট পানির মাত্র ১ শতাংশ সুপেয় পানি। তার মধ্যে বেশির ভাগই পাওয়া যায় মাটির নিচে। সেখানকার পানির গুণমান সাধারণত ভালো। এটি নিরাপদে, সাশ্রয়ী মূল্যে এবং উন্নত পরীক্ষা ছাড়াই ব্যবহার কিংবা পান করা যায়। পৃথিবীর উপরিভাগের পানি সাধারণত খাল-বিল ও লেকে সংরক্ষিত থাকে। পানির এসব উৎস সীমিত। দূষণ ও আবহাওয়া পরিবর্তনের প্রভাবে তীব্র খরার কবলে পড়ছে এসব স্থান। অথচ ভ‚গর্ভস্থ পানি স্বল্প খরচে সহজেই সরু পাইপের মাধ্যমে উপরে তুলে নিয়ে আসা যায়। সারাবিশ্বে দৈনিক ব্যবহৃত পানির অর্ধেকই ভ‚গর্ভস্থ পানি। গ্রামের মানুষের খাবার পানির বিশুদ্ধ সরবরাহ এবং সবচেয়ে সস্তা মাধ্যম মাটির নিচের পানি। গ্রামের সাধারণ জনগণ সরকারি কিংবা বেসরকারি পানি সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত না হয়ে স্বল্প খরচে ভ‚গর্ভস্থ পানি খুব সহজেই তুলে ব্যবহার করে। এভাবে ভ‚গর্ভস্থ পানি তোলা অব্যাহত থাকলে হলে পরিণতি খারাপ হওয়ারও আশঙ্কা রয়েছে। জমি শুকিয়ে পানির সরবরাহ কমে যাওয়ারও শঙ্কা রয়েছে। ২০১৮ সালে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ পানি সঙ্কটের মএখ পড়েছিল ভারত। ভারতের সরকারি একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশ ভারতে ৪০ শতাংশ মানুষ ২০৩০ সালের মধ্যে খাওয়ার পানির নির্ভরযোগ্য কোনো উৎসের সুযোগ পাবে না। আবহাওয়া উষ্ণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে খরা আরো বেশি দেখা দিচ্ছে। ভারতে বৃষ্টির ওপর নির্ভরশীল কৃষকদের জন্য আরো বেশি সমস্যা তৈরি হচ্ছে। ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার কথা ধরলে, সেখানে দ্রæত নগরায়ন হচ্ছে। ফলে অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে জলাধার। ক‚পের বদলে সেখানকার মানুষদের ভ‚গর্ভস্থ পানির ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে। রয়টার্স।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পানি সঙ্কট


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ