Inqilab Logo

সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সরিষাবাড়ী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দুরবস্থা

সরিষাবাড়ী (জামালপুরে) থেকে এম এ মান্নান | প্রকাশের সময় : ১৪ জুলাই, ২০১৮, ১২:০২ এএম

জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তীব্র পানি সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে চিকিৎসাধীন রোগীদের। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য রোগীর স্বজনদের ক্ষোভ বাড়ছে। কর্তৃপক্ষের অবহেলাকেই দায়ী করছেন সংশ্লিষ্টরা।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্র জানায়, ৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পানি সরবরাহের জন্য দু’টি পাওয়ার পাম্প রয়েছে। এর মধ্যে একটি তিনবছর ধরে পুরোপুরি বিকল। অন্যটি দিয়ে কোনো রকম পানি সরবরাহ চললেও এক মাস আগে হঠাৎ সেটাও সমস্যা দেখা দেয়। কর্তৃপক্ষ সেটি কোনোরকম মেরামত করে কার্যক্রম শুরু করলেও এক সপ্তাহ আগে পুণরায় তা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে বর্তমানে পানি সরবরাহ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়ে। নিয়মিত পরিস্কার না করায় দুর্গন্ধে সুস্থ মানুষও চলাফেলা দুষ্কর হয়ে পড়েছে। হাসপাতালে ভর্তি ও বর্হিবিভাগের রোগীদের নাকাল অবস্থায় চিকিৎসা সেবা নিতে হচ্ছে। পানির অভাবে হাসপাতালে ল্যাব কার্যক্রমও বন্ধের উপক্রম। আবাসিক বাসিন্দারাও চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
পাওয়ার পাম্পের অপারেটর জিল্লুর রহমান জানান, ‘তিনবছর ধরে একটি পাম্প পুরোপুরি অচল। অন্যটি কোনোরকম চললেও সেটিও এখন নষ্ট। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে বলার পরও কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।’
অভিযোগ রয়েছে, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. কাজী এনামুল হক নিয়মিত অফিস করেন না। তিনি টাঙ্গাইল শহর থেকে মাঝে মধ্যে এখানে আসলেও একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে বসেন। সপ্তাহে ১-২ দিন তিনি এসে ঘন্টাখানেক বসে চলে যান। প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ ও জনবল থাকলেও প্রকৃত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে উপজেলার মানুষ।
এ ব্যাপারে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মমতাজ উদ্দিন রাকিব বলেন, ‘একহাতে সবকিছুই নিয়ন্ত্রণ করেন উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কাজী এনামুল হক। পাওয়ার পাম্প মেরামতের টাকাও তাঁর কাছে। টাকা ছাড় না দেওয়ায় পাম্প মেরামত করা হচ্ছে না।’ বরাদ্দের টাকাগুলো তিনি কৌশলে আত্মসাতের চেষ্টা করছেন বলেও অনেকেই জানান।
হাসপাতালের ল্যাবরেটরি শাখার টেকনিশিয়ান আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ল্যাবের কাজ করতে প্রচুর পানির প্রয়োজন। কিন্তু হাসপাতালে পানি না থাকায় বাইরে থেকে পানি টেনে কাজ করা কষ্টকর ও নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’ চিকিৎসাসেবা নিতে আসা মুক্তিযোদ্ধা আকসেদ আলী জানান, ‘স্ত্রীকে নিয়ে তিনদিন ধরে হাসপাতালে আছেন। বাইরে থেকে পানি এনে জরুরি প্রয়োজন মেটাতে হচ্ছে।’ ভর্তিকৃত রোগী মুসলিম উদ্দিন, চায়না বেগম, রতনাসহ আরো অনেকেই জানান, ‘পানির অভাবে তাদের খুব সমস্যা পড়তে হচ্ছে। বারবার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনো কাজ হচ্ছে না।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা কর্মকর্তা ডা. কাজী এনামুল হক তার কাছে রক্ষিত অর্থ বরাদ্দের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘বিষয়টি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। লিখিত আবেদনের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ ঠিকাদারের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেবে।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ