পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
গত ২২ ফেব্রুয়ারি একনেকের সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেছেন, ‘চলতি অর্থবছরে সার, বিদ্যুৎ ও এলএনজিতে সরকারের ভর্তুকি রয়েছে প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু অর্থবছরের তিন-চতুর্থাংশ সময় পার না হলেও এরই মধ্যে খাত তিনটিতে প্রায় ৭৩ হাজার কোটি টাকা ভর্তুকির চাহিদা তৈরি হয়েছে। আবার বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বিল বকেয়া রয়েছে ১৫ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ, গ্যাসসহ বিভিন্ন খাতে ভর্তুকি দেয়া থেকে পর্যায়ক্রমে সরে আসার কৌশল বের করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।’ এর আগে কৃষিমন্ত্রী বলেছেন, ‘সারে ভর্তুকি বাবদ বাজেটে বরাদ্দ রয়েছে ৯,৫০০ কোটি টাকা। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারে দাম তিন গুণ বাড়ায় সারে ভর্তুকি বাবদ প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকার প্রয়োজন হতে পারে।’ দু’মন্ত্রীর এ বক্তব্য থেকে মনে হয়, সরকার দেশের বিভিন্ন খাত থেকে ভর্তুকি বন্ধ করার উদ্যোগ নিয়েছে। কিন্তু ভর্তুকি বন্ধ কিংবা হ্রাস করা হলে কী অবস্থা দাঁড়াবে তা প্রমাণিত হয়েছে গত নভেম্বরে জ্বালানি তেলের মূল্য বৃদ্ধিতে। এই পণ্য থেকে ভর্তুকি তুলে নিয়ে মূল্য বাড়ানোর সাথে সাথেই পরিবহন ব্যয় ও কৃষি উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। সে বৃদ্ধিকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরা সব পণ্যের মূল্য বাড়িয়েছে। এতে মানুষ চরম বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছে। তারা সরকারের সাফল্যের বয়ান শুনলেই তেলে-বেগুনে জ্বলে উঠছে। নানা কটূক্তি করছে। অথচ, জ্বালানি তেলে যে সামান্য ভর্তুকি ছিল, তা বহাল রেখে মূল্য বাড়ানো না হলে এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতো না। এ অবস্থায় বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি, সার ইত্যাদির উপর থেকে ভর্তুকি তুলে নিলে বা হ্রাস করলে পণ্যমূল্য আরও বেড়ে যাবে। তাতে সাধারণ মানুষের পরিণতি হবে ভয়াবহ! এই ভর্তুকির টাকা জনগণের ট্যাক্স-ভ্যাট থেকেই আসে। দ্বিতীয়ত, এই ভর্তুকি তথা লোকসানের জন্য জনগণ দায়ী নয়। দায়ী সরকারের ভুল নীতি এবং ব্যাপক দুর্নীতি ও অপচয়। এ ব্যাপারে কয়েকটি খাত নিয়ে বিশ্লেষণ করলেই বিষয়টি স্পষ্ট হবে।
দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়াতে বাড়াতে চাহিদার কয়েকগুণ করা হয়েছে। তাও সেটা করা হয়েছে বেসরকারি খাতে। সরকারি খাতের বিদ্যুৎ প্লান্ট বন্ধ রেখে বেসরকারি খাতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর দিকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। কাজ দেওয়া হয়েছে নির্দিষ্ট কিছু প্রতিষ্ঠানকে এবং তাও বিনা টেন্ডারে! এ ব্যাপারে মামলা করা যাবে না বলে আইনও করা হয়েছে। সর্বোপরি সেখান থেকে অত্যন্ত চড়া মূল্যে বিদ্যুৎ ক্রয় করে নিয়ে তা কম মূল্যে বিক্রি করা হচ্ছে। বেসরকারি খাত থেকে বিদ্যুৎ ক্রয় করা না হলেও প্লান্ট বসিয়ে রাখার কারণে বছরে কয়েক হাজার কোটি টাকার অধিক চার্জ দিতে হচ্ছে চুক্তি অনুযায়ী! সিপিডি গত জুনে বলেছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার ৬০% বসিয়ে রেখে ‘ক্যাপাসিটি চার্জ’ দেয়া হচ্ছে। বছরে যার পরিমাণ প্রায় নয় হাজার কোটি টাকা। এভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদনের ব্যয় বেড়েছে অনেক। ফলে লোকসান তথা ভর্তুকির পরিমাণও বেড়েছে, যা কমানোর জন্য বহুবার বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। খবরে প্রকাশ, বিদ্যুতের ইউনিট প্রতি মূল্য ২০১০ সালে ছিল ৩.৭৬ টাকা, ২০২০ সালে তা হয়েছে ৭.১৩ টাকা। অর্থাৎ প্রায় দ্বিগুণ। গত বছরও বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানো হয়েছে। এখন পুনরায় বিদ্যুতের মূল্য বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। কিছুদিন আগে বিপিডিবি বিদ্যুতের পাইকারি মূল্য ৬৪% বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে । সংস্থাটি বলেছে, বিদ্যুতের মূল্য না বাড়ানো হলে প্রতিষ্ঠানটির ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩২,৫০০ কোটি টাকা।
অথচ, সরকারি সব বিদ্যুৎ প্লান্ট চালু রাখা হলে বেসরকারি খাত থেকে চড়া মূল্যে বিদ্যুৎ কিনতে হতো না। ফলে বিদ্যুতের মূল্য দ্বিগুণের বেশি বৃদ্ধি করতে হতো না। দেশেরও ক্ষতি হতো না। এ ব্যাপারে দেশের প্রখ্যাত অর্থনীতিবিদ রেহমান সোবহানের অভিমত হচ্ছে: ‘ব্যবসায়ীদের চাপে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে অত্যধিক মূল্যে বিদ্যুৎ কেনা হচ্ছে। এতে দেশের অর্থনীতির সর্বনাশ হচ্ছে।’ এর আগে দেশের জ্বালানি বিশেষজ্ঞরাও বেসরকারি খাতের বিদ্যুৎ, বিশেষ করে রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের বিদ্যুৎ ক্রয় বন্ধ করার জন্য সরকারের প্রতি বহুবার আহ্বান জানিয়েছেন। সরকার তাদের কথায় বিন্দুমাত্র কর্ণপাত করেনি। বরং রেন্টাল ও কুইক রেন্টালের বিদ্যুৎ ক্রয় করার চুক্তির মেয়াদ পুনরায় বৃদ্ধি করেছে! গত ১০ ফেব্রুয়ারি এক দৈনিকে প্রকাশ, দেশে বর্তমানে বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর মোট উৎপাদন সক্ষমতার পরিমাণ ২৫,২৩৫ মেগাওয়াট। এর মধ্যে সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোর উৎপাদন সক্ষমতাই বেশি। তবুও গত অর্থবছরে বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকেই বেশি বিদ্যুৎ ক্রয় করেছে বিপিডিবি। এর প্রভাবে সংস্থাটির পরিচালন ক্ষতি গত অর্থবছরে বেড়ে দাঁড়িয়েছে দ্বিগুণে। এ ক্ষতি পোষাতে গিয়ে গত অর্থবছরে শুধু বিপিডিবির পেছনেই সরকারের দেয়া ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়ায় রেকর্ড ১১,৭০০ কোটি টাকা। ওদিকে, বাংলাদেশের নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয় ও যুক্তরাজ্যের বোর্নমাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন গবেষক এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলেছেন, ভারতের তামিলনাড়ুর কুদানকুলামের পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের এবং বাংলাদেশের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের নির্মাতা প্রতিষ্ঠান এক। কিন্তু রূপপুর কেন্দ্রের প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টায় উৎপাদন ব্যয়ের প্রাক্কলন করা হয়েছে ৯.৩৬ সেন্ট করে আর কুদানকুলামের কেন্দ্রের প্রাক্কলন করা হয়েছে ৫.৩৬ সেন্ট করে। সে হিসেবে রূপপুরে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় হবে কুদানকুলামের চেয়ে প্রায় ৭৫% বেশি। তাদের এই প্রতিবেদনটি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক জার্নাল স্প্রিঙ্গারে প্রকাশিত হয়েছে।
দেশের বিদ্যুৎ খাতের আরও ভুল নীতি হচ্ছে, বিদ্যুৎ উৎপাদন বাড়ানোর দিকে যেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সেভাবে সঞ্চালন ও বিতরণ ব্যবস্থা বাড়ানোর দিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। তাই পূর্ববর্তী সরকারের সময়ের ব্যবস্থাই রয়ে গেছে। ফলে উৎপাদিত সব বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। উৎপাদন বন্ধ তথা প্লান্ট বসিয়ে রাখতে হচ্ছে। যেমন: পায়রা কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রে উৎপাদন শুরু করেও তা বন্ধ রাখতে হয়েছে সরবরাহ করতে না পারায়! একই অবস্থা রূপপুর পরমাণু কেন্দ্রেরও হবে বলে অনেকের আশঙ্কা। এরূপ আরো অনেক উদাহরণ রয়েছে, যেখানে বিদ্যুৎ প্লান্ট বসিয়ে রাখতে হয়েছে সরবরাহ ব্যবস্থা না থাকায়। আবার নির্বিচ্ছন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ না পেয়ে তথা ব্যাপক লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। দেশে প্রতিদিন বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট। সরবরাহের সক্ষমতা রয়েছে মাত্র ৯ হাজার মেগাওয়াটের মতো। তাই প্রতিদিন ৯ হাজার মেগাওয়াটের কিছু কম উৎপাদন করতে হচ্ছে। এছাড়া, কিছু বিদ্যুৎ ভারত থেকে আমদানি হচ্ছে। সব মিলে দৈনিক ৫-৬ হাজার মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ সরবরাহে ঘাটতি থাকছে চাহিদার তুলনায়। বিদ্যুৎ সরবরাহের এই সংকট ২০২৮ সাল পর্যন্ত চলবে বলে বিদ্যুৎ বিভাগ গত ডিসেম্বরে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সংসদীয় স্থায়ী কমিটিকে। অর্থাৎ এক্ষেত্রে সরকারের ভুল নীতির চরম খেসারত দিতে হচ্ছে জনগণকে। আরও দিতে হবে কয়েক বছর। বিদ্যুৎ খাতে সরকারের আরও ভুল নীতি হচ্ছে, আমদানিকৃত কয়লা দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। অথচ, দেশে বিপুল পরিমাণে উন্নত মানের আবিষ্কৃত কয়লা মজুদ আছে। সেটা উত্তোলন না করে বিপুল অর্থ দিয়ে বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। এতে দেশের মূল্যবান সম্পদ অব্যবহৃত থাকছে, বিরাট অংকের বৈদেশিক মুদ্রার অপচয় হচ্ছে এবং বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। গত ১৩ ফেব্রুয়ারি সিপিডি আয়োজিত সেমিনারে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, স্থানীয়ভাবে গ্যাসের চেয়ে আমদানিকৃত এলএনজি ২৪ গুণ বেশি ব্যয়বহুল। সরকার বিদেশ থেকে চড়া দামে এই গ্যাস কিনে অত্যন্ত কম দামে স্থানীয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের সরবরাহ করায় প্রতি বছর বিশাল অঙ্কের ভর্তুকি প্রদান করতে হচ্ছে। যেমন ২০২০-২১ অর্থবছরে সরকার বিদেশ থেকে প্রতি কিউবিক মিটার এলএনজি ৩১.৫৬ টাকায় আমদানি করে তা স্থানীয় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ৪.৪৫ টাকা করে বিক্রি করেছে। ফলে ভর্তুকি দিতে হয়েছে প্রতি কিউবিক মিটারে ২৭.০৮ টাকা। সিপিডি বলেছে, ৬,৪৬৮ মেগাওয়াট ক্ষমতার যে নতুন ১১টি এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন করা হচ্ছে, তা যৌক্তিক নয়। তাৎক্ষণিকভাবে চাহিদা মেটাতে গৃহস্থালি, শিল্প, হোটেল, রেস্তোরাঁ, পরিবহন ইত্যাদি খাতে আমদানিকৃত এলএনজি ব্যবহার করা যেতে পারে। তথাপিও সরকার এলএনজিভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের দিকে ঝুঁকে পড়েছে। এতে বিদ্যুৎ খাতে ব্যয় বেড়েই চলেছে! অপরদিকে, বিদ্যুৎ খাতে ব্যাপক দুর্নীতি ও অপচয় তো রয়েছেই। এতেও বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে। সিস্টেম লসও অধিক হচ্ছে।
বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যয় বৃদ্ধির বর্ণিত বিষয়ের সাথে জনগণের বিন্দুমাত্র সংশ্লিষ্টতা নেই। সরকারের ভুল নীতির কারণেই এসব হচ্ছে এবং সে কারণেই বিপুল পরিমাণে ভর্তুকি হচ্ছে, যা কমানোর জন্য বারবার বিদ্যুতের মূল্য বাড়াতে হয়েছে এবং ভবিষ্যতে হবে। তাই বিদ্যুতের ভর্তুকি কমানোর আগে সরকারের ভুল নীতিগুলো সংশোধন এবং দুর্নীতি ও অপচয় বন্ধ করতে হবে। সেটা হলে বিদ্যুৎ খাত লাভজনক না হলেও লোকসান হবে না। ভর্তুকি দিতে হবে না। মূল্যও বাড়াতে হবে না। একই অবস্থায় হয়েছে গ্যাসের ক্ষেত্রেও। খবরে প্রকাশ, বিতরণ কোম্পানিগুলো গ্রাহক পর্যায়ে গ্যাসের মূল্য ১১৭% বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এই প্রস্তাবের উপর গণশুনানি হবে ২১-২৪ মার্চ। তাতে এই প্রস্তাব অনুমোদিত হলে দুই চুলায় ব্যয় ৯৭৫ টাকা থেকে বেড়ে ২১০০ টাকা এবং এক চুলায় ৯২৫ টাকা থেকে বেড়ে ২০০০ টাকা হবে। বাণিজ্যিক খাতে বাড়বে আরও বেশি। ফলে গ্যাস সংশ্লিষ্ট সব জিনিসের মূল্য বাড়বে। সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১ জুলাই গ্যাসের দাম বাড়ানো হয়। তাতে আবাসিক খাতে দুই চুলার খরচ ৮০০ টাকা বাড়িয়ে ৯৭৫ টাকা এবং বাণিজ্যিক খাতে গড়ে ৩২.০৮% বাড়ানো হয়।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানিয়েছেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের বিল বাবদ ১৫ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে।কিন্তু এই বিপুল বকেয়ার জন্য সব গ্রাহক দায়ী নয়, দায়ী জ্বালানি খাতের প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট গ্রাহক। কারণ, যথাসময়ে বিল আদায়ের ব্যবস্থা করা হলে কিংবা বিল অনাদায়ের জন্য সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হলে এই বিপুল পরিমাণে বিল বকেয়া থাকতো না। দ্বিতীয়ত, প্রত্যেক গ্রাহককে প্রি-পেইড মিটার দেয়া হলে অটোমেটিক বিলের বকেয়া, আদায়ের ঝামেলা, সিস্টেম লসের নামে চুরি-দুর্নীতি বিদায় নিত। কিন্তু তা হচ্ছে না প্রয়োজনীয় প্রি-পেইড মিটার সরবরাহ করতে না পারায়। এটাও প্রশাসনিক ব্যর্থতা।
দেশে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ শেষ হয়ে আসছে বলে শোনা যাচ্ছে অনেক দিন থেকেই। সিপিডির তথ্য মতে, বর্তমানে ১০ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস রিজার্ভ আছে, যা ২০৩০ সাল নাগাদ প্রতিদিন এক তৃতীয়াংশ করে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। তবুও নতুন গ্যাস কূপ অনুসন্ধান ও খননের দিকে অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়নি। এমনকি, বঙ্গোপসাগরের সীমানা নির্ধারণ হওয়ার পর ভারত ও মিয়ানমার তাদের এলাকায় নতুন গ্যাস কূপ অনুসন্ধান, খনন ও উত্তোলন করে রফতানি করছে অনেক দিন থেকেই। কিন্তু আমরা আমাদের এলাকার গ্যাস কূপ অনুসন্ধান করার টেন্ডারই খুলতে পারিনি! ভোলার আবিষ্কৃত গ্যাস পার্শ্ববর্তী জেলাসমূহে সরবরাহ করা যাচ্ছে না সরবরাহ লাইন না থাকায়। এ ব্যাপারে বিদেশি কোম্পানি প্রস্তাব দিলেও তা অনুমোদন করা হয়নি। সারের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটছে। দেশের সরকারি সার কারখানাগুলো বন্ধ রেখে দ্বিগুণ ব্যয়ে বিদেশ থেকে আমদানি করা হচ্ছে। ফলে ভর্তুকির পরিমাণ অনেক বেড়ে যাচ্ছে, যা কমানোর লক্ষ্যে সারের মূল্য বাড়ানোর পাঁয়তারা করা হচ্ছে। সারের মূল্য বাড়ানো হলে কৃষির উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়ে যাবে। তাতে কৃষি পণ্যের মূল্যও বেড়ে যাবে। অথচ, এর দায় কৃষকের নয়, সরকারের!
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।