Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

হিজাব ইস্যুতে অন্তর্বর্তী আদেশ : কর্ণাটক হাইকোর্টে ফের শুনানি মঙ্গলবার

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৯ এএম

হাইকোর্টের স্কুল ও কলেজগুলোতে হিজাব বা অন্য কোনো ধর্মীয় পোশাকের অনুমতি না দেয়ার অন্তর্বর্তী আদেশ দেয়া হয়েছে। সেই অন্তর্বর্তী আদেশ এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট।
বর্তমান হিজাব বিতর্কের মধ্যে সোমবার কর্ণাটক হাইকোর্ট স্কুল ও কলেজে হিজাব নিষিদ্ধকে চ্যালেঞ্জ করে আবেদনের শুনানির পরে মঙ্গলবার পর্যন্ত মামলা মুলতুবি করেছে। শুনানির আগে, কর্ণাটক হাইকোর্ট মিডিয়াকে ‘আরো দায়িত্বশীল হতে’ আবেদন জানিয়েছে।
মঙ্গলবার দুপুর আড়াইটায় হাইকোর্ট এ বিষয়ে শুনানি করবে বলে জানা গেছে। এর অর্থ হল, হাইকোর্টের স্কুল ও কলেজগুলোতে হিজাব বা অন্য কোনো ধর্মীয় পোশাকে অনুমতি না দেওয়ার অন্তর্বর্তী আদেশ দেওয়া হয়েছে। সেই অন্তর্বর্তী আদেশ এ বিষয়ে চূড়ান্ত রায় না আসা পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে জানিয়েছে কর্ণাটক হাইকোর্ট।
বর্ষীয়ান আইনজীবী দেবদত্ত কামাত আবেদনকারীর পক্ষে উপস্থিত হয়ে কর্ণাটক হাইকোর্টের কাছে প্রয়োজনীয় তথ্য জমা দেন। কামাত বলেন যে, মুসলিম মহিলাদের কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ে মাথার স্কার্ফ পরার অনুমতি রয়েছে। তিনি যোগ করেছেন যে, ‘এটি এমন একটি ঘটনা যেখানে ছাত্ররা বছরের পর বছর ধরে হেডস্কার্ফ পরে আসছে’। কামাত আরো বলেন, যতদূর পর্যন্ত মূল ধর্মীয় অনুশীলনের বিষয়, তা ২৫ (১) ধারা থেকে আসে।
আইনজীবী কামাত বলেন, ‘যদি মূল ধর্মীয় চর্চা জনসাধারণের শৃঙ্খলার ক্ষতি করে বা আঘাত করে তবে তা নিয়ন্ত্রিত হতে পারে’। এর প্রেক্ষিতে কর্ণাটক হাইকোর্ট কামাতকে জিজ্ঞাসা করেন যে, কোরআনে কি হিজাবকে অপরিহার্য ধর্মীয় অনুশীলন বলে বর্ণনা করা হয়েছে? এর জবাবে কামত বলেন, আমি তা বলছি না।
আবেদনকারীরা যুক্তি দেন যে, কোরআন অনুযায়ী হিজাব পরা ‘ফরজ’ বা কর্তব্য। শিক্ষার্থীরা তাদের ইউনিফর্মের মতো একই রঙের হিজাব পরতে চাইছে। আবেদনকারীরা আদালতের কাছে মেয়েদের হিজাব পরে ক্লাসে যোগ দেওয়ার এবং তাদের শিক্ষা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন। তবে কর্ণাটক সরকারের পক্ষে জানানো হয়েছে, ইসলামে হিজাব অপরিহার্য কিনা তা খুঁজে বের করা প্রয়োজন।
এদিকে, হিজাব নিয়ে রাজ্যের কিছু অংশে অপ্রীতিকর ঘটনার পর গত বুধবার থেকে বন্ধ থাকার পর সোমবার কর্ণাটকের উচ্চ বিদ্যালয়গুলো আবার চালু হয়েছে। ফৌজদারি আইনের ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে উদুপি, দক্ষিণ কন্নড় এবং বেঙ্গালুরু জেলার সংবেদনশীল এলাকায়।
রোববার মুখ্যমন্ত্রী বাসভরাজ বোমাই আত্মবিশ্বাস প্রকাশ করে বলেছেন যে, রাজ্যে শান্তি ও স্বাভাবিক পরিস্থিতি রয়েছে। তিনি আরো বলেন, পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে প্রাক-বিশ্ববিদ্যালয় এবং ডিগ্রি কলেজ পুনরায় খোলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এর আগে শুক্রবার সরকার জানায় যে, উচ্চশিক্ষা বিভাগের অন্তর্গত বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজিয়েট অ্যান্ড টেকনিক্যাল এডুকেশন (ডিসিটিই) অধিদফতরের অধীনস্থ কলেজগুলোর জন্য ঘোষিত ছুটি ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
উদুপি জেলায় সোমবার শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর যে, উচ্চ বিদ্যালয়গুলো আবার খুলেছে। সমস্ত প্রতিষ্ঠানে উপস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। হিজাব পরে স্কুল ক্যাম্পাসে আসা মুসলিম মেয়ে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে প্রবেশের আগেই তা সরিয়ে দেয়। প্রতিষ্ঠানগুলোতেও এদিন নির্ধারিত পরীক্ষা চলেছে। আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে এবং কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে উদুপি শহরে এবং স্কুলের কাছাকাছি পুলিশ কর্মী মোতায়েন করা হয়েছে।
উদুপি জেলা প্রশাসন শান্তি বজায় রাখার জন্য সোমবার থেকে ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জেলার সমস্ত উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রায় ২০০ মিটার ব্যাসার্ধে ১৪৪ ধারা জারি করেছে। উদুপি তহসিলদার প্রদীপ কুরুদেকর, যিনি কয়েকটি স্কুল পরিদর্শন করেছেন, বলেছেন যে, মুসলিম ছাত্ররা ক্লাসে প্রবেশের আগে হিজাব সরিয়ে হাইকোর্টের অন্তর্বর্তী আদেশ মেনে চলছে। সূত্র : এশিয়ানেট নিউজ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ