মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
গতকাল তিন রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। এ নির্বাচন নিয়ে সারা দেশের নজরে ছিল উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং গোয়া। বিজেপি শাসিত উত্তরাখণ্ড এবং গোয়ার সব ক’টি কেন্দ্রেই গতকাল নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আর উত্তরপ্রদেশে দ্বিতীয় দফায় ৫৫টি আসনে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এদিন ভোটযুদ্ধে শামিল ছিলেন উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি, গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী প্রমোদ সাওয়ান্ত, কংগ্রেস নেতা হরিশ রাওয়াত এবং কারাগারে থেকে লড়া এসপি নেতা আজম খান।
উপকূলের ছোট্ট রাজ্য গোয়ায় ৪০টি বিধানসভা কেন্দ্রে ভোটে দাঁড়ান ৩০১ জন। ভোটার ছিল ১১ লাখ। উত্তরাখণ্ডে ৭০টি আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখানে ৬৩২ জন প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারণ করছেন ৮১ লাখ ভোটার। উল্লেখযোগ্য এই রাজ্যে ১৫২ জন নির্দল প্রার্থী হিসেবে লড়েছেন। প্রতিটি রাজ্যে শুধুমাত্র মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত ১০০টি বুথ ছিল। এ বুথের নাম ‘সখী’ বা গোলাপি বুথ। পাশাপাশি কয়েকটি ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে ছিলেন বিশেষভাবে সক্ষম মানুষেরা।
উত্তর প্রদেশে গতকাল ৫৫টি আসনে ৫৮৬ জন প্রার্থী ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হন। দ্বিতীয় দফায় এদিন শাহারানপুর, বিজনোর, মোরাদাবাদ, সম্ভল, রামপুর, আমরোহা, বুদায়ুন, বারেলি এবং শাহজাহানপুরে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়।
উত্তরাখণ্ডে সকাল ৮টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত ১১ হাজার ৬৯৭টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলে। ২০০০ সালে এ রাজ্য গঠিত হয়। তারপর এটা পঞ্চম বিধানসভা নির্বাচন। প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী হরিশ রাওয়াত, যশপাল আর্য, গণেশ গোদিয়াল এবং প্রীতম সিং অন্যতম প্রধান মুখ ছিল এ নির্বাচনে। গত বিধানসভা নির্বাচনে ৭০টির মধ্যে ৫৭টিতে জিতেছিল বিজেপি। কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছিল ১১, ২টি আসনে জিতেছিলেন নির্দল প্রার্থী। এবার লড়াইয়ে হাজির ছিল আম আদমি পার্টি বা আপ। অরবিন্দ কেজরিওয়াল প্রতিটি পরিবারকে বিনামূল্যে ৩০০ ইউনিট পর্যন্ত বিদ্যুৎ ব্যবহারের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে প্রত্যেক মহিলাকে ১ হাজার টাকা দেয়া হবে, প্রত্যেক পরিবারের একজনকে চাকরি এবং বেকার ভাতা হিসেবে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন তিনি।
গোয়ায় ৪০টি বিধানসভা কেন্দ্রে ৬৮ জন নির্দল প্রার্থী ছিলেন। গোয়ায় মুখোমুখি লড়াইয়ে কংগ্রেস বনাম বিজেপি। এনসিপি-শিবসেনা জোট বেঁধে লড়াই করেছে। অন্যদিকে রেভোলিউশনারি গোয়ানস, গোয়েঞ্চা স্বাভিমান পার্টি, জয় মহাভারত পার্টি এবং সম্ভাজি ব্রিগেড ছিল। তৃণমূল কংগ্রেস এই প্রথমবার গোয়া নির্বাচনে প্রার্থী দিয়েছে এবং মহারাষ্ট্রবাদী গোমন্তক পার্টি বা এমজিপির সঙ্গে জোট বেঁধেছে। ছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আপ। বিজেপির প্রমোদ সাওয়ান্ত, কংগ্রেসের দিগম্বর কামাত, তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী চার্চিল আলেমাও ছিল অন্যতম আকর্ষণ।
উত্তরপ্রদেশে ভোট শুরু সকাল ৭টায় এবং চলে সন্ধ্যে ৬টা পর্যন্ত। এই ৫৫টি আসনের মধ্যে ২০১৭-য় বিজেপি ৩৮টি আসন পেয়েছিল। এসপি-র দখলে গিয়েছিল ১৫টি এবং কংগ্রেস ২টি। গত বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ও এসপি গাঁটছড়া বেঁধেছিল। ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন শুরু হয়েছে। ফলাফল ১০ মার্চ।
চার পৌরসভায় তৃণমূলের বাজিমাত
২০২১ সালের ২ মে, সকাল থেকে বেলা যত গড়িয়েছে, ততই স্পষ্ট হয়েছে যে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ওপরই আস্থা রেখেছে বাংলা মানুষ। তারপর সময় যত এগোচ্ছে, সেই আস্থা বাড়ছে, কিন্তু কমছে না। গতকাল সোমবার চার পৌরনিগমের নির্বাচনের ফলাফলে অন্তত সেটাই স্পষ্ট হচ্ছে।
গত শনিবার আসানসোল, চন্দননগর, বিধাননগর ও শিলিগুড়ি, যে চার পৌরনিগমের ভোট হয়েছিল, তার মধ্যে তিনটিতেই ক্ষমতায় ছিল তৃণমূল। শুধু শিলিগুড়ি ছিল বাম-কংগ্রেস জোটের দখলে। তাই এবারের ভোটের ফল কী হয় সেই দিকে তাকিয়ে ছিলেন সকলে। ফল বের হওয়ার পর দেখা গেল তৃণমূল কংগ্রেস শুধু পাস করেনি, বরং লেটার মার্কস পেয়েছে। প্রতিটি পৌরনিগমে গুটিকয়েক আসন ছাড়া সবক‘টিতেই তৃণমূল প্রার্থীরা জিতেছেন। প্রকৃত অর্থে এ পৌরনিগমের ফল দেখিয়ে দিল, এ রাজ্যে বিরোধীরা আনুবীক্ষণিকে পরিণত হয়েছে।
এ পৌরনিগমগুলোতে শেষবার ভোট হয়েছিল ২০১৫ সালে। তখন পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট একেবারে অন্যরকম ছিল। কিন্তু গত সাত বছরে পরিস্থিতি একেবারে বদলে গিয়েছে। বাম-কংগ্রেসকে পেছনে ঠেলে বিজেপিই এখন প্রধান বিরোধী দল। তার ওপর বিধানসভা নির্বাচনে ফলাফলের নিরিখে শিলিগুড়ি ও আসনসোলে বিজেপি শাসকদলের সঙ্গে সমানে টক্কর দিচ্ছিল। কিন্তু ফল বের হতে দেখা গেল, বিধানসভায় যেমন বাংলার মানুষ তৃণমূলের ওপর আস্থা রেখেছিল, এই চার পৌরনিগমের ভোটাররাও সেই পথেই হাঁটলেন। তারাও ঘাসফুল শিবিরকেই জেতালেন। বরং আরও বিপুলভাবে।
আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি ১০৮টি পৌরসভার নির্বাচন রয়েছে। সেই ভোটের দেওয়াল লিখনই সোমবারের ফলে স্পষ্ট হল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, প্রার্থী তালিকা নিয়ে তৃণমূলে যে ডামাডোল তৈরি হয়েছিল, সেটা পুরোটাই থামিয়ে দেবে। বিরোধীরা আরো অস্তিত্ব সঙ্কটে পড়বে। বাকি পৌরসভাগুলিতে কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে লড়াইয়ের মানসিকতা জিইয়ে রাখাটাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ মুরলি ধর সেন লেন, আলিমুদ্দিন স্ট্রিট ও বিধান ভবনের কর্তাদের। সূত্র : ইটিভি বাংলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।