Inqilab Logo

রোববার, ২৩ জুন ২০২৪, ০৯ আষাঢ় ১৪৩১, ১৬ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

এ যেন অচেনা মেসি!

স্পোর্টস ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৬ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৫ এএম

শৈশবের স্বপ্নের দল বার্সেলোনা ছেড়ে লিওনেল মেসি এখন পিএসজিতে। দুই দশক ধরে একটি ক্লাবে খেলার পর আচমকা দল বদলে ফেলা সহজ না। এর প্রভাব বেশ মোটা দাগেই দেখা যাচ্ছে ফুটবল মাঠে। কাতালুনিয়ার জার্সিতে যা নিয়মিত দেখা যেত, প্যারিসের জার্সিতে তেমনটা খুব কমই দেখা যায়। বার্সেলোনার স্কোয়াড যেমন হোক না কেন, মাঠে তার সঙ্গী হিসেবে যেই থাকুন না কেন, মেসিকে খুঁজে নিতে কখনো চেষ্টা করতে হয়নি কাউকে। তবে পিএসজিতে পরিস্থিতি ভিন্ন। এখনো মাঝেমধ্যেই মেসি-ঝলক দেখা যায়। কিন্তু সেটা আর আগের মতো নিয়মিত নয়। পরিসংখ্যানও সে কথাই বলছে। জানিয়ে দিচ্ছে মৌসুমের প্রথমার্ধে এতটা বিবর্ণ মেসির দেখা মিলছে ১৫ বছর পর।
মেসির ক্যারিয়ারের পালাবদলের মৌসুম ২০০৮-০৯। পেপ গার্দিওলার অধীন আগের চেয়ে অনেক বেশি গোল করায় মনোযোগী হয়েছেন মেসি। ২০০৮-০৯ মৌসুমের পর থেকেই গোলক্ষুধায় ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর সঙ্গে টেক্কা দিয়েছেন। গোল করার কাজটায় এতটাই সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠেছেন যে গোল করায় তার আশপাশে নেই কেউ। পেশাদার ফুটবলে গোলসংখ্যায় রোনালদো তার চেয়ে এগিয়ে আছেন। কিন্তু ম্যাচপ্রতি গোলে চিরপ্রতিদ্ব›দ্বীর চেয়ে এগিয়ে আছেন মেসি। এমন গোলক্ষুধাই ২০১২ সালে অবিশ্বাস্য এক কীর্তি গড়তে সাহায্য করেছে মেসিকে। এক পঞ্জিকাবর্ষে ৯১টি গোল করেছিলেন মেসি।
২০১২ সালের সে কীর্তির পেছনে দুটি ব্যাপার ভ‚মিকা রেখেছিল। প্রথমত ২০১১-১২ মৌসুমের দ্বিতীয়ার্ধে ভয়ংকর রূপ নিয়েছিলেন মেসি। মেসির শেষ অর্ধে ক্লাবের হয়ে ৪৪ গোল করেছিলেন। জাতীয় দলের হয়ে করেছিলেন ১২ গোল। বছরটা শেষও করেছেন একই ছন্দে। ২০১২-১৩ মৌসুমের প্রথমার্ধে অর্থাৎ জানুয়ারির আগেই ক্লাবের হয়ে সব প্রতিযোগিতা মিলে ৩৫ গোল করেছিলেন মেসি। সেই মেসিই কিনা এবার মৌসুমের প্রথমাংশে সব প্রতিযোগিতা মিলে পিএসজির জার্সিতে করেছেন মাত্র ৬ গোল! গার্দিওলার ছোঁয়ায় বদলে যাওয়ার মৌসুমের পর থেকে তো বটেই, এমনকি এর আগের মৌসুমেও এতটা গোল-খরায় ভুগতে হয়নি মেসিকে। ২০০৭-০৮ মৌসুমেও ডিসেম্বরের মধ্যেই ১২ গোল করে ফেলেছিলেন মেসি। এরপর আর কখনো গোলসংখ্যা এক অঙ্কে থামেনি তার।
২০০৭-০৮ মৌসুমের পর শুধু তিন মৌসুমেই শুরুতে গোল করায় একটু ‘আপত্তি’ দেখা গেছে। ২০১৩-১৪ মৌসুমে নেইমারের আবির্ভাবের বছরে ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৪ গোল করেছিলেন মেসি। ২০১৫-১৬ মৌসুমেও মেসির গোল ছিল মাত্র ১২টি। সেবার অবশ্য চোটের কারণে বেশ অনেকগুলো ম্যাচ মাঠের বাইরে ছিলেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড। বার্সেলোনার জার্সিতে ফরোয়ার্ড মেসির সবচেয়ে বাজে শুরুটা ছিল গত মৌসুমে। রোনাল্ড কোমানের অধীন গত মৌসুমে সব প্রতিযোগিতা মিলে মাত্র ১০ গোল করেছিলেন মেসি। এর মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৪ ম্যাচে ছিল ৩ গোল। আর লিগের ১৪ ম্যাচে করেছিলেন ৬ গোল।
নতুন দল পিএসজিতেও মেসির ফর্মটা ভালো যাচ্ছে না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ৫ ম্যাচে দুই পেনাল্টিসহ ৫ গোল করেছেন। আর ফ্রেঞ্চ লিগে ১১ ম্যাচ থেকে মাত্র ১ গোল। ২০০৫-০৬ মৌসুমের পর এই প্রথম কোনো মৌসুমে লিগে এত কম গোল নিয়ে বড়দিনের ছুটি কাটাতে যাচ্ছেন মেসি। পিএসজি সমর্থকদের জন্য আশার খবর হলো, মেসি মৌসুমের দ্বিতীয়ার্ধে সাধারণত প্রথমাংশের চেয়ে বেশি গোল করেন। ২০১৩-১৪ মৌসুমেই যেমন ২৭ গোল করেছিলেন। ২০১৫-১৬ মৌসুমে করেছিলেন ২৯ গোল। গত বছর কোমানের বার্সেলোনার হয়েও জানুয়ারির পর ২৮ গোল করেছেন মেসি। আর এই মৌসুমেই ফ্রেঞ্চ লিগে মেসির গোল অনায়াসে ৭ হতে পারত। ছয়বারই তার শট গোলপোস্টে লেগে ফিরেছে!
আশার উল্টোদিকে শঙ্কাও আছে। ২০১৯-২০ মৌসুমের শুরুতে মাত্র ১৫ গোল করা মেসি দ্বিতীয়ার্ধেও করেছিলেন মাত্র ১৬ গোল। ২০০৭-০৮ মৌসুমের পর সেবারই মৌসুমে সবচেয়ে কম গোল ছিল মেসির। ৩৪ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড এবার তেমন কোনো মৌসুম কাটালে পিএসজির চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের স্বপ্ন এবারও দুরাশা বলেই পরিণত হবে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেসি

৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৩

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ