মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের বিরোধী দল ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস’ বা আইএনসি বিশ্বের বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রাচীন রাজনৈতিক দল। এর সভাপতি ৭৪ বছর বয়সী সোনিয়া গান্ধী প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর স্ত্রী, যিনি ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের পুত্র এবং নাতি। রাজীব এবং সোনিয়ার ৫১ বছর বয়সী পুত্র রাহুল গান্ধী আইএনসির মূল নেতা এবং তাদের ৪৯ বছর বয়সী কন্যা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী দলটির সাধারণ সম্পাদক।
গান্ধীরা মহাত্মা গান্ধী নয়, ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর বংশধর। তাদের আইএনসি কয়েক দশক ধরে ভারতীয় রাজনীতিতে আধিপত্য বিস্তার করেছে। তারা ক্ষমতার অপব্যবহারের (১৯৭০-এর জরুরি অবস্থা) এবং মহা সংস্কারের (উল্লেখ্যভাবে ১৯৯১ সালে ভারতের অর্থনৈতিক উদারীকরণ) জন্য সমালোচিত ও আলোচিত। দলটি অভ্যন্তরীণ সংস্কার সাধনে এবং নতুন নেতৃত্ব খুঁজতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০১৪ এবং ২০১৯ সালে নির্বাচনী পরাজিত হয়। ভোটে বিজয়ী হওয়া তো দূরের কথা, গান্ধী পরিবারই এখন আইএনসি’র সবচেয়ে বড় বোঝা হয়ে দাড়িয়েছে।
গান্ধীর বৃত্তে অনৈতিকতা এবং আত্ম-প্রসাদে পরিপূর্ণ। আরও খারাপ, দলের পদগুলিতে তাদের অটল উপস্থিতি প্রতিভানদের সামনে এগোনো এবং কাজের স্পৃহাকে বিকর্ষিত করে। গান্ধী শাসিত আইএনসিতে উচ্চাভিলাষীরা ধরনের কোনো ভবিষ্যৎ দেখে না। তাই তাদের দলত্যাগ করাটা সাধারণ বিষয়ে পরিণত হয়েছে।
গান্ধীদের মূল লক্ষ্য কি, এখন আর তা স্পষ্ট নয়। তাদের নেতৃত্বে কংগ্রেসের সাম্প্রতিক ইশতেহারটি সমাজতান্ত্রিক যুগের হ্যান্ডআউট, সরকারী-খাতে কর্মসংস্থান এবং ঋণ মওকুফের দাবীতে ভারপুর ছিল। দু:খজনকভাবে সেখানে প্রবৃদ্ধি বাড়ানোর বা বেসরকারী-খাতে কর্মসংস্থানের নীতিগুলির উপর খুব একটা আলোকপাত করা হয়নি। কিন্তু আইএনসি ও গান্ধীদের বিপরীতে ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির জন্য একটা সুস্পষ্ট দৃষ্টিভঙ্গি প্রস্তাব করে, যদিও তা উদারপন্থী বা অ-হিন্দুদের কাছে অগ্রহনযোগ্য।
যেকোনো দেশের মতো ভারতেও সরকারকে জবাবদিহি করাতে একটি শক্তিশালী বিরোধী দলের প্রয়োজন। এটি ছাড়া নাগরিক এবং সুশীল সমাজকে রাস্তার প্রতিবাদে নামতে হয়, যা দেশে অস্থিতিশীলতা ডেকে আনে। মোদির জন্য সাম্প্রতিক সবচেয়ে বড় নেতিবাচ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল, যখন কৃষকরা এক বছর ধরে দিল্লির বাইরে তার কৃষি সংস্কারেরম বিরুদ্ধে বিক্ষাভ করেছিল।
ভারতের মতো একটি বিশাল, বৈচিত্র্যময় এবং এখনও-দরিদ্র দেশ একটি স্বৈরাচারী কেন্দ্রীয় সরকার দ্বারা পিড়ীত। বিজেপি রাজ্য পর্যায়ে প্রচুর প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হয়েছে, কিন্তু কংগ্রেস তার একমাত্র চলনসই জাতীয় প্রতিপক্ষ হিসেবে টিকে রয়েছে। ভারতের জাতীয় নির্বাচনে এটি এখনও দলটি ২০ শতাংশ ভোট টানতে সক্ষম, যদিও তা সংসদের মাত্র ১০ শতাংশ আসন সুরক্ষিত করে, যা বিজেপির অর্ধেকেরও বেশি ভোটের সমান, কিন্তু পরবর্তী বিরাধী দলের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি। এখানে অনেক ভালো ফলাফল আনতে হবে।
আইএনসির মুখপাত্র রাহুলকে ব্যাপকভাবে একজন ভদ্র মানুষ হিসেবে দেখা হয়। কিন্তু তিনি দল ও ভারতকে পিছিয়ে রেখেছেন। তার স্থলাভিষিক্ত করার জন্য কোন সুস্পষ্ট প্রার্থী নেই। রাহুল তার যোগ্য লেফটেন্যান্টদের পদোন্নতির ক্ষেত্রে কতটা ব্যর্থ, এটি তারই ইঙ্গিত। এই কারণে, গান্ধীদের পদত্যাগ করতে হবে, তাদের তোষামোকারীদের সাথে নিয়ে। রাহুল চলে গেলে, কংগ্রেস তার কেন্দ্র এবং শাখা সংস্কারের কঠিন প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে এবং নিজেকে এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পরিণত করতে পারে, যা সেরা এবং উজ্জ্বলদের আকর্ষণ করে এবং তাদের দ্রুত ক্ষমতায়ণ করতে পারে।
আগামী সাধারণ নির্বাচনের প্রায় তিন বছর বাকি। সমস্ত ভারতীয়দের প্রতিনিধিত্ব করতে সক্ষম একটি বড়-তাঁবুর জাতীয় দল হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে কংগ্রেসের এখনো খুব বেশি দেরি হয়ে যায়নি, যেমনটি এর প্রতিষ্ঠাতাদের উদ্দেশ্য ছিল। গান্ধিদের সামনে এখন একটিই বিকল্প রয়েছে: হয় তারা পদত্যাগের মতো সম্মানজনক কাজটি করবে, অথবা তারা কংগ্রেসকে বিলুপ্তির দিকে নিয়ে যাবে। পরেরটি মোদিকে তার ইচ্ছামতো ভারত সংস্কারের অবাধ স্বাধীনতা এনে দেবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।