মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
ভারতের জনসংখ্যা হ্রাস পেতে চলেছে। কারণ সেখানে মোট উর্বরতা হার (টিএফআর) বা একজন নারী তার জীবদ্দশায় যে কয়টি শিশুর জন্ম দেন তার গড় সংখ্যা প্রথমবারের মতো প্রতিস্থাপন স্তরের নীচে নেমে গেছে।
আগে ভারতে বড় পরিবারের চল ছিল। কিন্তু বর্তমানে মানুষের চিন্তাধারা বদলেছে। তার প্রভাব পড়েছে মানুষের জীবনযাত্রার উপরও। তাই এখন আর অনেক সদস্যকে নিয়ে একটা পরিবার হচ্ছে না। সন্তান প্রজনের উপর নিয়ন্ত্রণ এসেছে, তাই জনসংখ্যা হার আগের থেকেই অনেকটাই কমেছে। গত কয়েক দশক আগে থাকতেই দেশ জুড়ে প্রজননের উপর নিয়ন্ত্রণের ফলে বর্তমানে ভারতের জনসংখ্যা অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। এনএফএইচএস-এর (ন্যাশনাল ফ্যামিলি হেল্থ সার্ভে) তরফে ২০১৫-২০১৬ সালে করা একটি সমীক্ষায় দেখা গেছিল, টিএফআর (টোটাল ফার্টিলিটি রেট) ছিল ২.২ শতাংশ, যা হ্রাস পেয়ে হয়েছিল ২.০ শতাংশ। এরপর এনএফএইচএস-এর ২০১৯-২১-এর তথ্য থেকে জানা যায়, ভারতের শহরাঞ্চলে প্রায় ১.৬ শতাংশ এবং গ্রামীণ অঞ্চলে ২.১ শতাংশ হারে জনসংখ্যা কমেছে। বুধবার কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রণালয়ের তরফে এই তথ্য জানানো হয়েছে। জাতিসংঘের জনসংখ্যা বিভাগের মতে, মহিলাদের ২.১ শতাংশ হাতে কম সন্তান ধারণের অর্থই হল একটি দেশের জনসংখ্যা হ্রাসের অন্যতম কারণ। ইন্টারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর পপুলেশন সায়েন্সের ডিরেক্টর ডাঃ কে. এস. জেমসের মতে, টিএফআর ২ শতাংশ হওয়ার অর্থই হল দেশের দীর্ঘমেয়াদী জনসংখ্যা এখন স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এখন প্রত্যেক পরিবারে ২ জন করে সন্তানের পরিকল্পনা করা হচ্ছে। এর ফলে যেমন মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের উন্নতি হবে, তেমনি দেশের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার কমে যাবে।
ভারতের পাবলিক হেলথ ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক কে. শ্রীনাথ রেড্ডি টিএফআর ২ শতাংশে নেমে যাওয়ার প্রেক্ষিতে ৩টি কারণ তুলে ধরেছেন। যার মধ্যে আছে, দেশের উন্নয়ন, যার জন্য এই জনসংখ্যা হ্রাস পাওয়া একটি অন্যতম চ্যালেঞ্জ। দ্বিতীয়ত, জনস্বাস্থ্য এবং শিক্ষায় আরও বেশি করে বিনিয়োগ, এবং সব শেষে পরিবেশের সুরক্ষার উপর জোর দেওয়া প্রয়োজন। তিনি আরও জানান, দেশের জনসংখ্যায় ২.১ টিএফআর-এর পতনের অর্থই হল দেশ ক্রমেই জনসংখ্যার স্থিতিশীলতার দিকে এগোচ্ছে। মনে করা হয়েছিল, ২০২৪ থেকে ২৮-এর মধ্যে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হয়ে উঠবে ভারত। কিন্তু এখন তা হওয়ার আশঙ্কা প্রায় নেই বলেই মত প্রকাশ করেন অধ্যাপক রেড্ডি। অধ্যাপক রেড্ডি আরও জানিয়েছেন, এই জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে আমাদের দেশের প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর চাপ পড়ছিল। যদি আমরা এই জনসংখ্যাকে স্থিতিশীল রাখতে পারি তাহলে পরিবেশকেও রক্ষা করতে পারব। সমীক্ষায় দেখা গেছে ২ শতাংশের উপর টিএফআর রয়েছে মোট ৫টি রাজ্যে। এই ৫টি রাজ্য হল বিহারে (৩), মেঘালয় (২.৯), উত্তরপ্রদেশ (২.৪) এবং ঝাড়খন্ডে (২.৩) এবং মণিপুরে (২.২)।
ভারতের দুটি রাজ্য মধ্যপ্রদেশ ও রাজস্থানের গড় টিএফআর ১.৬। মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, অন্ধপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড এবং ত্রিপুরায় টিআরএফ গড়ে ১.৭ শতাংশ। দেশের আরও ৬টি রাজ্য কেরল, তামিলনাড়ু, তেলেঙ্গানা, অরুণাচল প্রদেশ, ছত্রিশগড় এবং ওড়িশায় গড় টিআরএফ হল ১.৮ শতাংশ। এছাড়াও হরিয়ানা, অসম, গুজরাট, উত্তরাখণ্ডে এবং মিজোরামে টিআরএফ ১.৯ শতাংশ। এনএফএইচএস তাদের প্রথম সমীক্ষায় এই সকল রাজ্যগুলিকে নিয়ে বুধবার এই ফল প্রকাশ করে। সমীক্ষার দ্বিতীয় পর্যায়ে আরও ১৪ টি রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে অন্তর্ভুক্ত করে ফল প্রকাশ করবে বলে জানানো হয়েছে।
জনসংখ্যা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হিসেবে মনে করা হচ্ছে, পরিবার পরিকল্পনা, মেয়েদের বিবাহের বয়স এবং নারীর ক্ষমতায়নের জন্যই এটি সম্ভব হয়েছে। পপুলেশন ফাউন্ডেশন অফ ইন্ডিয়ার নির্বাহী পরিচালক পুনম মুত্রেজার মতে, মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাকরণ বৃদ্ধি পেয়েছে। এ থেকেই বোঝা যায় পরিবার পরিকল্পনার দায়িত্ব নিচ্ছেন মেয়েরা। তিনি আরও জানিয়েছেন, পুরুষরাও যদি পরিবার পরিকল্পনার দায়িত্ব নেয়, সে বিষয়ে সরকারের উচিৎ তাদেরকে আরও সচেতন করা। আধুনিক প্রজন্মের মধ্যে গর্ভনিরোধকের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। যার জেরে জনসংখ্যা হ্রাস পাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। সূত্র : টিওআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।