Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

ইসরাইল, লেবানন ও মধ্যপ্রাচ্যে তুরস্কের নয়া কূটনীতি

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২৪ নভেম্বর, ২০২১, ৭:৪৭ পিএম

তুরস্ক তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসোগলু তার সাম্প্রতিক লেবানন সফরের মাধ্যমে দেখিয়েছে যে, মধ্যপ্রাচ্যে প্রতিদ্বন্দ্বীদের মোকাবেলার লক্ষ্যে দেশটি আঞ্চলিক কূটনীতির অংশ হিসেবে একের পর এক আঞ্চলিক প্রতিবেশীর সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

সম্প্রতি তুরস্কের ভূ-রাজনৈতিক এবং ধর্মীয় কোমল শক্তির প্রতিদ্বন্দ্বী সউদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাত বাহরাইন এবং কুয়েতের সাথে মিলিত হয়ে লেবাননের উপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং বৈরুত থেকে তাদের রাষ্ট্রদূতদের প্রত্যাহার করার পর কাভুসোগলু তার সফরের মাধ্যমে লেবাননের সাথে তুরস্কের সম্পর্ক জোরদার করেছেন। কাভুসোগলু ইস্তাম্বুলে একদিনের ইউএই বা সংযুক্ত আরব আমিরাত-তুরস্ক ব্যবসায়িক ফোরামের আগে বৈরুত ভ্রমণ করেন এবং তুরস্কে ইউএই’র ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন জায়েদের সফর ১২ বছরের মধ্যে এই প্রথম। মেডিটেরানিয়ান পার্লামেন্টারি এসেম্বলির পাশাপাশি বৈরুত সফরের কয়েকদিন পর তুর্কি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুলেমান সোয়লু ইউএই’র স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাইফ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের সাথে রোমে সাক্ষাত করেন।

ইউএই ২০১৬ সালে প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়্যেব এরদোগানকে ক্ষমতাচ্যুত করার একটি ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানকে অর্থায়ন করায় এবং রাজনৈতিক ইসলামের প্রতি তুরস্কের সমর্থন, বিশেষ করে মুসলিম ব্রাদারহুডের প্রতি ইউএই’র আপত্তির কারণে তুরস্ক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের মধ্যে বিরোধ রয়েছে। তুরস্ক এবং ইউএই লিবিয়া, সিরিয়া এবং পূর্ব ভূমধ্যসাগরে পরোক্ষভাবে পরস্পরের বিরুদ্ধে সামরিক এবং রাজনৈতিক যুদ্ধ করেছে। অধিকন্তু, ইউএই-সউদি নেতৃত্বে কাতারের ওপর সাড়ে তিন বছরব্যাপী কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার চলাকালীন তুরস্ক কাতারকে সমর্থন করেছে এবং উপসাগরীয় দেশটিতে তার সামরিক উপস্থিতির প্রসারণ ঘটিয়েছে।

একইভাবে, যুক্তরাষ্ট্রের নিরাপত্তা প্রতিশ্রুতি নিয়ে অনিশ্চয়তা, করোনা মহামারী এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অঞ্চলটির সমস্ত রাষ্ট্রের কিছু সমন্বিত অর্থনৈতিক সংস্কার বৈচিত্র্য, এবং স¤প্রসারণের লক্ষ্যে মিশর এবং সউদি আরব মধ্যপ্রাচ্যে তুরস্কের সাথে তাদের মতপার্থক্য কমাতে চাইছে। এই পটভ‚মিতে, কাভুসোগলু বৈরুতে পৌঁছানোর একদিন আগে তেহরানে সফর করেন। তেহরানে তিনি লেবাননের একজন সম্ভাব্য মধ্যস্থতাকারী হিসাবে তার অবস্থানকে শক্তিশালী করতে, আজারবাইজানি-ইরানি সীমান্ত বরাবর ককেশাসে তুর্কি-ইরানি উত্তেজনা প্রশমন এবং সিরিয়ার বিষয়ে ইরানের সাথে কিছু অভিন্ন মতে পৌঁছানোর লক্ষ্যে কাজ করেন, যেখানে তাদের মতভেদ রয়েছে।

এদিকে, গত সপ্তাহে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগে এক ইসরাইলি পর্যটক দম্পতিকে গ্রেফতার এবং পরবর্তীতে মুক্তি দেয়ার ফলে নয় বছরের মধ্যে এরদোগান এবং শীর্ষ ইসরাইলি নেতাদের মধ্যে প্রথম ফোনালাপের সূচনা ঘটে। প্রেসিডেন্ট আইজাক হারজগ এবং প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে ধন্যবাদ জানাতে আলাদাভাবে ফোন করেন। তুরস্কের গুরুতর অর্থনৈতিক সঙ্কটের সময়ে এরদোগান পর্যটকদের ভীত করতে চাননি এবং এই সুযোগ তুরস্ককে ইহুদি রাষ্ট্রটির সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখার ক্ষেত্রে ইউএই’র ভ‚-রাজনৈতিক সুবিধাকে হ্রাস করার সুযোগও করে দিয়েছে। সূত্র: আলজেমেইনার।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কূটনীতি

২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ