মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
বাড়ি থেকে বেরোলেই চোখ জ্বলছে। পানি ঝরছে। সঙ্গে বেদম কাশি, হাঁচি। অনেকেরই শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে। ভারতের রাজধানী দিল্লির হাওয়া খারাপ, তাতে নতুনত্ব কিছু নেই। কিন্তু নতুন হল, হাওয়া যে এতটা খারাপ অবস্থায় পৌঁছেছে, তা প্রথমবার হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন রাজধানীর বাসিন্দারা। ইতোমধ্যেই অনির্দিষ্টকালের জন্য দিল্লি ও আশেপাশের স্কুল, কলেজ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অর্ধেক কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করানোর নির্দেশ দিয়েছে ‘কমিশন ফর এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট’ (সিএকিউএম)।
মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাতে জারি করা ৯ পাতার নির্দেশিকায় সিএকিউএম এনসিআর-এর (ন্যাশনাল ক্যাপিটাল রিজিয়ন বা বৃহত্তর দিল্লি) অন্তর্গত রাজ্য সরকারগুলোকে পরামর্শ দিয়েছে, যেন ২১ নভেম্বর পর্যন্ত অন্তত প্রতি কার্যালয়ে ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করানো হয়। এনসিআর এলাকায় পড়ছে দিল্লি, হরিয়ানা, রাজস্থান ও উত্তরপ্রদেশ। বেসরকারি কার্যালয়গুলোকেও বাধ্যতামূলকভাবে অর্ধেক কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করানোর নির্দেশিকা পালন করতে হবে। অফিস-কাছারিতে ওয়ার্ক ফ্রম হোম-ই শুধু নয়, স্কুল-কলেজও ফের ফিরছে অনলাইনে। ঠিক যেমন হয়েছিল করোনা লকডাউন চলার সময়।
সিএকিউএম-এর নির্দেশে দিল্লি তথা এনসিআর এলাকায় সমস্ত ধরনের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। নির্দেশ অমান্য করে কেউ যদি নির্মাণ কাজ চালান কিংবা নির্মাণ সামগ্রী জড়ো করেন, তাহলে বড় অঙ্কের জরিমানার সংস্থান রয়েছে। ব্যতিক্রম সেন্ট্রাল ভিস্তা প্রকল্প।
দিল্লিতে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত বাইরে থেকে ট্রাক ঢোকায় নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে। ব্যতিক্রম কেবল জরুরি পরিষেবা প্রদানকারী ট্রাক। দূষণের আশঙ্কায় রাজধানীর ১১টি তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে মাত্র ৫টি কাজ করছে। বাকি ৬টি বন্ধ। ১৫ বছরের পুরনো পেট্রল গাড়ি ও ১০ বছরের পুরনো ডিজেল গাড়ি পথে বেরোতে পারবে না। অন্যান্য গাড়ির ক্ষেত্রে দূষণের মাত্রা মাপা হবে। এতদিন রাজধানী ও সংলগ্ন এলাকার ভয়াবহ দূষণের মূল কারণ হিসেবে হরিয়ানা, পশ্চিম উত্তরপ্রদেশ, পাঞ্জাবে ফসলের গোড়া জ্বালানোকে দায়ী করা হত। কিন্তু সম্প্রতি রিপোর্টে দেখা গিয়েছে, দিল্লির সামগ্রিক দূষণের মাত্র ৪ শতাংশ অবদান ফসলের গোড়া জ্বালানোর। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টও এ বিষয়ে মন্তব্য করেছে। আদালতে পেশ করা রাজ্য সরকারের রিপোর্ট অনুযায়ী, দিল্লিতে পরিস্থিতি এমনই, এক বার শ্বাস নিলে যে পরিমাণ দূষণ আপনার শরীরে ঢুকছে, তা দৈনিক ২০টি সিগারেটের সমান। ২১ নভেম্বর ফের পরিস্থিতি পর্যালোচনায় বসবে সিএকিউএম। পরিস্থিতির উন্নতি হলে বিধি নিষেধ আলগা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এদিকে দিল্লি এবং সংলগ্ন এলাকায় দূষণ রোধে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ডেডলাইন বেঁধে দিল সুপ্রিম কোর্ট। তারপর দূষণ রোধে প্রশাসনকে সক্রিয় হতে কড়া পদক্ষেপ নেবে শীর্ষ আদালত। এভাবেই কেন্দ্র এবং দিল্লি সরকারকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। গতকাল শুনানিতে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহেতা প্রশ্ন করেন, ‘আমরা কি ২১ নভেম্বর পর্যন্ত অপেক্ষা করতে পারি। এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্ট পূর্বাভাস দিয়েছে, আগামি দু-তিন দিনের মধ্যে হাওয়ার গতি বদলাবে। ততদিনে কিছুটা নিয়ন্ত্রিত হবে দূষণ পরিস্থিতি’।
সেই সওয়ালের পরেই ২১ নভেম্বর পর্যন্ত ডেডলাইন বেঁধে দেয় শীর্ষ আদালত। পাশাপাশি দিল্লি সরকারকে নির্দেশ দিয়েছে, ‘এয়ার কোয়ালিটি ম্যানেজমেন্টের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করতে। তাদের বেঁধে দেয়া বিধি কার্যকর করে বায়ু দূষণকে নিয়ন্ত্রণে আনতে।‘
এদিনের শুনানিতে টিভির বিতর্কসভার প্রতি উষ্মা প্রকাশ করেন শীর্ষ আদালত। বেঞ্চের মন্তব্য, ‘টিভির বিতর্কসভা থেকে বেশি দূষণ ছড়ায়। যারা অংশ নিয়ে থাকেন, প্রত্যেকের নিজস্ব মতামত থাকে। আশপাশের কোনো খবর না রেখেই বিতর্কে বসে পড়েন। আর বিষয় বহির্ভূত মন্তব্য পেশ করেন। যদিও এ ব্যাপারে আমাদের কিছু করণীয় নেই, তাই যেখানে নিয়ন্ত্রণ করার সেদিকেই আমরা নজর রাখছি’। সূত্র : টিওআই, এনডিটিভি, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।