নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের আগে মোহাম্মদ রিজওয়ানের ফ্লু হয়েছিল—এমনটাই শুধু জানানো হয়। ম্যাচের পর জানা গেল, পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে তাঁকে দুই দিন নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) থাকতে হয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে খেললেন নায়কোচিত এক ইনিংস। দলের হয়ে ৫২ বলে সর্বোচ্চ ৬৭ রান করেছেন। শেষ পর্যন্ত পাকিস্তান ফাইনালের টিকিট না পেলেও রিজওয়ানের দেশপ্রেমের প্রশংসা করছেন সবাই।
রিজওয়ানের এই মানসিকতা পাকিস্তান তো বটেই, গোটা বিশ্বেই বন্দিত। হাসপাতালে যে চিকিৎসকের অধীনে চিকিৎসা নিয়েছেন রিজওয়ান, সে চিকিৎসকই অবাক হয়েছেন পাকিস্তানের এই উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যানের দৃঢ় মনোবল ও দেশপ্রেম দেখে। শরীরের এই অবস্থা নিয়ে কীভাবে খেললেন রিজওয়ান? রীতিমতো চমকে গেছেন ভারতের সেই চিকিৎসক সাহের সাইনালআবদিন।
দুবাইয়ের মেডিওর হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ পালমোনোলজিস্ট সাইনালআবদিনের চিকিৎসাধীন ছিলেন রিজওয়ান। আইসিইউতে থাকাকালে রিজওয়ানে যা বলেছিলেন, তা গণমাধ্যমকে শুনিয়েছেন সাইনালআবদিন, ‘আমি খেলতে চাই এবং দলের সঙ্গে থাকতে চাই।’ রিজওয়ানের আত্মবিশ্বাস দেখে চিকিৎসক রীতিমতো চমকে গেছেন সাইনালআবদিন, ‘গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে দেশের হয়ে খেলার প্রবল ইচ্ছা ছিল রিজওয়ানের। সে শক্তিশালী, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ও আত্মবিশ্বাসী ছিল। সে যেভাবে দ্রুত সেরে উঠেছে, তাতে আমি চমকে গিয়েছি।’ হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার আগে থেকে জ্বর ও কাশিতে ভুগছিলেন রিজওয়ান। সে অনুযায়ী ওষুধ দেওয়া হয়। সাইনালআবদিন বলেন, ‘ভর্তি হওয়ার সময় তার সর্বোচ্চ পর্যায়ের ব্যথা ছিল। তার রোগ নির্ণয় করে শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে আমরা তাকে অবগত করি।’
অবস্থার অবনতি দেখে আইসিইউতে স্থানান্তরিত করা হয় রিজওয়ানকে। সে সময় চিকিৎসকেরা কখনো ভাবতেই পারেননি সেমিফাইনাল ম্যাচে খেলতে পারবেন রিজওয়ান। সাইনালআবদিন বলেন, ‘রিজওয়ানের মারাত্মক সংক্রমণ হয়েছিল। সেমিফাইনালের আগে সুস্থ হয়ে ফিরে খেলার মতো ফিটনেস অর্জন করা অবাস্তব মনে হয়েছিল। এ অবস্থা থেকে সাধারণত যে কারও সুস্থ হতে ৫ থেকে ৭ দিনের বেশি সময় লাগত।’
আইসিইউতে দুই রাত থাকার পর রিজওয়ানের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়। দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠলেও খেলার মতো ফিট হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী ছিলেন না চিকিৎসক, ‘সে খুব মনোযোগী এবং সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাসী বলে মনে হয়েছিল। তার একমাত্র চিন্তা ছিল সেমিফাইনাল নিয়ে। রিজওয়ান দৃঢ়, সাহসী ও আত্মবিশ্বাসী ছিল। সে ৩৫ ঘণ্টা আইসিইউতে ছিল।’ খেলার দিন দুপুরে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পান রিজওয়ান। এর আগে এত দ্রুত কোনো খেলোয়াড়কে হাসপাতালে ছাড়তে দেখেননি ওই চিকিৎসক। সাইনালআবদিন বলেন, ‘খেলার সময় আমরা খেলোয়াড়দের চোট নিয়ে আসতে দেখেছি। তবে এই প্রথম এত গুরুতর অসুস্থতার পরও কোনো খেলোয়াড় এত দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠলেন।’
রিজওয়ান মাঠে যাওয়ার পর চিকিৎসকেরা পাকিস্তান দলের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রাখছিলেন। রিজওয়ান যখন মাঠে ব্যাট হাতে ৪ আর ৬ মারছিলেন, তখন তাঁদের অন্য রকম আনন্দ হচ্ছিল বলেও জানান চিকিৎসক। রিজওয়ানও পরে চিকিৎসকদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন এবং সাইনালআবদিনকে অটোগ্রাফসহ তার একটি জার্সিও উপহার দিয়েছেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।