Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণেই শান্তি ও সফলতা নিহিত খুৎবা পূর্ব বয়ান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১২ নভেম্বর, ২০২১, ৫:২১ পিএম

“আল্লাহ তায়ালার কাছে মনোনীত দ্বীন হলো একমাত্র ইসলাম”। আল্লাহ তায়ালা আরো ইরশাদ করেন, আল্লাহ রাসূলের (সা.) মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণেই শান্তি ও সফলতা নিহিত রয়েছে। আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন। রাজধানীর বিভিন্ন মসজিদে উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষীত হয়েছে। বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের ভারপ্রাপ্ত খতিব ও পেশ ইমাম মুফতি মুহাম্মদ মুহিব্বুল্লাহিল বাকি আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন ,“আল্লাহ তায়ালার কাছে মনোনীত দ্বীন হলো একমাত্র ইসলাম”। আল্লাহ তায়ালা আরো ইরশাদ করেন, আল্লাহ রাসূলের (সা.) মধ্যে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ। আল্লাহ তায়ালার মনোনীত দ্বীন ইসলাম, রাসূলে পাক (সা.) একমাত্র পরিপূর্ণ আদর্শ এতে সন্দেহ করলে সে নিজেকে মুসলমান পরিচয় দিলেও মুসলমান হবে না। কেউ ইসলাম ও রাসূলে পাক (সা.) কে বাদ দিয়ে দুনিয়া ও আখিরাতের শান্তি, সফলতা তালাশ করলে তার শান্তি ও সফলতা অর্জন হবে না বরং সে ব্যক্তি হয়তো ইসলাম ও রাসূলের অনুসারী দাবি করে মুনাফিকি করছে অথবা সেই ব্যক্তি রাসূল (সা.) ও ইসলাম সম্পর্কে পরিপূর্ণ অজ্ঞ।

খতিব বলেন, ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণেই শান্তি ও সফলতা নিহিত রয়েছে। বর্তমান বিশ্বের মুসলমানদের দিকে তাকালে দেখা যাবে বহু মুসলমান ইসলাম ও রাসূল (সা.) এর অনুসরণ ছেড়ে দিয়েছে বা ইসলামকে খন্ডিত ভাবে অনুসরণ করছে। যার কারণে শান্তি ও সফলতা থেকে বঞ্চিত হয়েছে এবং হতাশার মধ্যে আছে। মনে মনে ধারণা করছে মুসলমান হওয়ার কারণেই তাদের এই পরিণতি। অথচ মুসলমানের এই পরিণতির কারণ হলো ইসলাম ও রাসূল (সা.) এর অনুসরণ ছেড়ে দেয়া বা খ-িতভাবে অনুসরণ করা। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন "হে ঈমানদারগণ! তোমরা পরিপূর্ণভাবে ইসলামে প্রবেশ কর!"। অন্য আয়াতে আছে “তোমরা কি আল্লাহ তায়ালার কিতাবের অংশ বিশেষের উপর ঈমান এনেছো এবং অংশ বিশেষকে অস্বীকার করেছে। এরকম খন্ডিত বিশ্বাসের শাস্তি হলো দুনিয়াতে লাঞ্ছনা বঞ্চনা কিয়ামতের দিন কঠিন আযাবের দিকে ঠেলে দেয়া হবে। ইসলামকে খন্ডিতভাবে অনুসরণ করার কারণে কোরআনে মুসলমানের যেই পরিণতির কথা বলা হয়েছে মুসলমান সেই পরিণতি ভোগ করতেছে।
সুতরাং ইহকালে পরকালে শান্তি ও সফলতা অর্জন করতে চাইলে ইসলাম ও রাসূল পাক (সা.) কে পরিপূর্ণ ভাবে অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে তৌফিক দান করুন আমীন। ঢাকা উত্তরা ৩নং সেক্টর মসজিদ আল মাগফিরাহ এর খতিব মুফতি ওয়াহিদুল আলম খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, হজ ও উমরাহ করা মুসলমানদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। শুধু আল্লাহকে খুশি করার উদ্দেশ্যে হজ ও উমরাহ করা এমন একটি ইবাদত, যার বিনিময়ে পরকালে জান্নাত তো নিশ্চিত হবেই। দুনিয়াতেও তার সুফল পাওয়া যায়। হযরত উমর (রা.) হজের সফরে উমরাহ করতে নিরুৎসাহিত করতেন। কেননা উমরাহ এর একটি ভিন্ন গুরুত্ব আছে। উমরাহকে ছোট হজ বলা হয়।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, তোমারা আল্লাহ তায়ালার জন্য হজ ও উমরাহ পুর্নভাবে পালন করো।(সূরা বাকারা ১৯৬ আয়াত) নবী কারীম (সা.) বলেন, এক উমরাহ থেকে আর এক উমরাহ,তার মাঝের গোনাহ গুলোর কাফফারা (ক্ষমা) হয়ে যায়। আর হজে মাবরুরের প্রতিদান জান্নাত ছাড়া অন্য কিছু না। (বুখারী মুসলিম তিরমিজি ও নাসাঈ শরিফ)। নবী কারীম (সা.) বলেন, বৃদ্ধ দুর্বল ও মহিলাদের জিহাদ হলো হজ করা (নাসাঈ শরিফ)। নবী কারীম (সা.) বলেন, তোমরা পরপর হজ ও উমরাহ করো, কেননা হজ ও উমরাহ অভাব-অনটন এবং গোনাহ নিশ্চিহ্ন করে দেয়, যেমন আগুনের হাপর লোহা স্বর্ন ও রুপার ময়লা দূর করে দেয়। আল্লাহ তায়ালার বড় দয়া যে তিনি মহামারির কারণে বিগত দুটি বছর পর পুনরায় ক্বাবা শরিফ ও রাসূল (সা.) এর রওজা শরিফ যিয়ারতের সুযোগ করে দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে হারামাইন শরিফাইন যিয়ারতের তৌফিক দান করুন। মিরপুরের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল মামুর জামে মসজিদ এর খতিব মুফতি আব্দুর রহীম কাসেমী আজ জুমার খুৎবা পূর্ব বয়ানে বলেন, ইসলাম একমাত্র শান্তির ধর্ম। ইসলামি অনুশাসন ও বিধানাবলীর মধ্যেই মানব জাতির কল্যাণ নিহিত। ইসলামের কল্যাণময়ী বিধানের প্রতি অবহেলার কারণে প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের অশান্তি আর অস্থিরতা সীমাহীন ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে। মানুষ যেন পৃথিবী নামক স্থলকে বসবাসের অনুপযোগী মনে করতে শুরু করছে। কারণ শ্রেষ্ঠজীব মানুষের বেঁচে থাকার জন্য খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থান এর বিকল্প নেই। কিন্তু নিত্য প্রয়োজনীয় এ সব জিনিসপত্রের, মূল্য ঊর্ধ্বগতির পরিপ্রেক্ষিতে জনজীবন অতিষ্ঠ। দ্রব্যমূল্যের পাগলা ঘোড়া ঊর্ধ্বশ্বাসে ছুটছে তো ছুটছেই। দৈনন্দিন পারিবারিক চাহিদা মেটাতে পরিবার প্রধানরা হিমশিম খাচ্ছেন। মধ্যবৃত্ত, নি¤œবৃত্ত এবং অসচ্ছল জনসাধারণ কষ্টের গ্লানি সহ্য করতে না পেরে কেউবা অসৎ পথ গ্রহণ করছে আবার কেউবা আত্মহত্যা করছে। আবার কেউবা নিজের দুগ্ধপোষ্য সন্তানকে বিক্রি করে পাগল হয়ে পথে পথে ঘুরছে। অথচ ইসলাম মানুষের কল্যাণে লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধি রোধ করার নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু আল্লাহর বিধানের প্রতি অবহেলা, গুটিকয়েক অসৎ মানুষের কালোবাজারি, পণ্যদ্রব্য মজুদদারি, মধ্যস্বত্বভোগীদের অনৈতিক হস্তক্ষেপ, অসাধু বাজার সিন্ডিকেট সুদ ঘুষের ছড়াছড়ি ও চাঁদাবাজির কারণে দ্রব্যমূল্যের ব্যাপক বৃদ্ধিতে পুরো জনগোষ্ঠি অস্থির। খতিব বলেন, দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধগতি আল্লাহর পক্ষ থেকে এক প্রকার শাস্তি। এর থেকে পরিত্রাণের জন্য সকলকে আল্লাহর কাছে তওবা করতে হবে। আল্লাহর বিধান পালনে ব্রত হয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাসহ সকলে ঐক্যবদ্ধভাবে কালোবাজারি, পণ্যদ্রব্য মজুদদারি, সিন্ডিকেটসহ অনৈতিক কায্যকালাপ দমনে সোচ্চার হতে হবে। তাহলেই আল্লাহ তায়ালা দ্রব্যমূল্যে হ্রাসসহ সর্বক্ষেত্রে জন জীবনে শান্তি দান করবেন। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, তোমাদের উচিৎ মানুষকে কল্যাণের দিকে আহবান করা। যারা ( মানুষকে ) সৎ কাজের আদেশ দেয় এবং অসৎ কাজ থেকে বারন করে তারাই সফলকাম। (সূরা আল ইমরান : আয়াত নং ১০৪ ) । রাসূল (সা.) বলেন , তোমাদের মধ্যে যখন কোন অন্যায় অসাধু কাজ প্রত্যক্ষ করবে তখন তা শক্তি দিয়ে প্রতিহত করবে। সম্ভব না হলে যবান দিয়ে প্রতিবাদ করবে। তাও সম্ভব নাহলে অন্তরে কৌশল অবলম্বন করে সংশোধনের চেষ্টা করবে। ( ইবনে মাজা, হাদিস নং ৪০১৩। রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুসলমানের খাদ্যশস্য মজুদ রাখে, আল্লাহ তার উপর দারিদ্র্যতা চাপিয়ে দেন।’ (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৫৫)। আল্লাহ আমাদের সকলকে ন্যায়ের পথে চলা ও যথাযত দায়িত্ব পালনের তৌফিক দান করেন। আমীন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: খুৎবা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ