মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
যুদ্ধবিমান রাফাল চুক্তি নিয়ে ফের মোদি সরকারের বিড়ম্বনা বাড়াল এক ফরাসি সংবাদ মাধ্যম। মিডিয়া পার্ট নামে ওই সংবাদ মাধ্যমের দাবি, ‘আন্তঃসরকার এ চুক্তি রূপায়নে ঘুষ আদানপ্রদান হয়েছে। ভুয়ো ইনভয়েসের অন্তরালে অন্তত ৭৫ লাখ ইউরো উপঢৌকন হিসেবে একজন মিডিলম্যানকে দিয়েছিল দ্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন। তার দায়িত্ব ছিল ভারতের সঙ্গে এই চুক্তি চূড়ান্ত করা।‘ ঘটনাচক্রে দ্যাসল্ট অ্যাভিয়েশন ফরাসি যুদ্ধবিমান রাফালের উৎপাদক সংস্থা।
ভারত এবং ফরাসি সরকারের মধ্যে এ যুদ্ধবিমান আমদানিতে ৫৯ হাজার কোটি টাকার চুক্তি হয়েছে। বিনিময়ে ধাপে ধাপে ৩৬টি রাফাল পাবে ভারতীয় বিমান বাহিনী। এ চুক্তিতে দুর্নীতি এবং স্বজনপোষণের অভিযোগে ফ্রান্সে বিচারবিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।
যদিও এখনও পর্যন্ত দ্যাসল্ট অ্যাভিয়েসন এবং ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের কোনো প্রতিক্রিয়া মেলেনি, তবে ফরাসি সেই সংবাদমাধ্যম দাবি করেছে, ‘দুর্নীতি অভিযোগের তথ্য-প্রমাণ থাকলেও ভারতীয় কোনো তদন্ত সংস্থা হস্তক্ষেপ করেনি’।
এদিকে, গত জুলাই মাসে রাফাল যুদ্ধবিমান দুর্নীতিকাণ্ডের অভিযোগ নিয়ে বড়সড় পদক্ষেপ নিয়েছে ফ্রান্স। এ ঘটনা নিয়ে বিচারবিভাগীয় তদন্ত শুরুর নির্দেশ দিয়েছে সে দেশের ম্যাখোঁ সরকার। ইতোমধ্যেই এক বিচারককে নিযুক্ত করা হয়েছে এ অভিযোগের তদন্তে। ফ্রান্সের আর্থিক অপরাধ দমন সংক্রান্ত বিভাগের তরফে এমনটাই জানানো হয়েছে। ফ্রান্সের থেকে রাফাল যুদ্ধবিমানের জন্য ভারতের সঙ্গে ৫৯ হাজার কোটি টাকার চুক্তিতে ‘দুর্নীতি ও পক্ষপাতিত্বের’ অভিযোগ উঠেছে বারবার। ফরাসি সংবাদমাধ্যম মিডিয়াপার্টের প্রতিবেদন সূত্রে খবর, রাফাল নির্মাতা সংস্থা দ্যাসল্ট অ্যাভিয়েশনের বিরুদ্ধে চুক্তির মধ্যস্থতাকারীকে ১০ লাখ ইউরো পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ফ্রান্সের আর্থিক অপরাধ দমন সংক্রান্ত বিভাগের কাছে এ বিষয়ে তদন্তের দাবি জানানো হয়। ২০১৮ সালে রাফালকাণ্ড নিয়ে তদন্তের দাবি উঠেছিল ফরাসী দরবারে। কিন্তু তথ্যপ্রমাণের অভাবে সে সময় তদন্ত খারিজ হয়েছিল।
এ বিষয়ে কংগ্রেস বহুবার যৌথ সংসদীয় কমিটির (জেপিসি) মাধ্যমে তদন্তের দাবি তুলেছে। তারা বলেছে, ‘রাফাল চুক্তিতে যে দুর্নীতি রয়েছে তা এখন আরো স্পষ্ট। এ রাফালকাণ্ড নিয়ে কংগ্রেসের ও রাহুল গান্ধীর অবস্থান যে ঠিক ছিল তা প্রমাণিত’। সূত্র : ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
ইতালিয় সংস্থার সঙ্গে বিজেপির ‘গোপন চুক্তি’! অভিযোগ রাহুলের
এদিকে ভারতের জি নিউজ জানায়, রাফাল যুদ্ধবিমান নিয়ে ইউপিএ সরকারকে বিঁধেছিল বিজেপি সরকার। কেন্দ্রীয় আসনে আসীন হওয়ার পর রাফাল ইস্যুতে একাধিক আর্থিক তছরুপের অভিযোগ তোলা হয়েছিল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। ফ্রান্সের সঙ্গে রাফাল যুদ্ধবিমান চুক্তিতে দুর্নীতিতে কংগ্রেসের নাম জড়ানোর পর এবার ক্ষমতাসীন বিজেপিকে অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ড ভিভিআইপি হেলিকপ্টার চুক্তিতে ‘দুর্নীতির’ অভিযোগে তোপ।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং তার সরকারকে অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ড এবং এর মূল কোম্পানি ফিনমেকানিকাকে দুর্নীতির অভিযোগে দুষেছে। কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি বলেন, ইউপিএ-২ এর শাসনকালে যখন এই চুক্তি হয়েছিল সেই সময় বিজেপি একে দুর্নীতিগ্রস্ত বলেছিল, অথচ বিজেপি এখন সেই চুক্তি নিয়েই হেলিকপ্টার কিনছে। তবে কি পদ্ম শিবিরের সঙ্গে ‘গোপন চুক্তি’ হয়েছে ইতালিয় মহাকাশযান তৈরি সংস্থার? এবার সেই প্রশ্নই তুললেন সোনিয়া-পুত্র।
এক টুইটে মোদি সরকারকে বিঁধে রাহুল গান্ধী বলেছেন, ‘আগে অগাস্টা দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল, এখন বিজেপি লন্ড্রিতে ধুয়ে ফেলার পরে এটি পরিষ্কার হয়ে গেছে’। এরপর রাহুল গান্ধী ‘#জওচষড়মরপ’ হ্যাশট্যাগ ব্যবহারও করেছেন। প্রসঙ্গত ২০১৪ সালে ১২টি অড-১০১ ঠঠওচ চপার সরবরাহ করার কথা ছিল। সেই সময় এই চুক্তি বাতিল হয়। বিজেপি নেতারা কংগ্রেসকে দুষে বলেছিলেন যে, চুক্তির জন্য ৪৫০ কোটি ঘুষের টাকা শতাব্দীপ্রাচীন দলের নেতারা পায়নি বলেই চুক্তি বাতিল হয়।
কিন্তু এবার বিজেপি সরকারের সেই সংস্থা থেকেই হেলিকপ্টার কেনা নিয়ে পাল্টা বিঁধেছে কংগ্রেস। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেসের প্রধান মুখপাত্র রণদীপ সুরজেওয়ালা সোমবার বলেছেন, এবার কি তবে মোদি সরকার এবং অগাস্টা/ফিনমেকানিকার মধ্যে ‘গোপন চুক্তি’ হয়েছে? তাদের প্রশ্ন ইউপিএ এর আমলে যাকে দুর্নীতিগ্রস্ত বলা হল সেই সংস্থা থেকে কীভাবে চপার কিনছে মোদি সরকার।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে, ইতালিয়ান গ্রুপ ফিনমেকানিকা তার নাম পরিবর্তন করে লিওনার্দো করেছে। কংগ্রেস মুখপাত্র গৌরব বল্লভ অভিযোগ করেছেন যে প্রধানমন্ত্রী মোদি এবং তার সরকার ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-এর অংশ হিসাবে একসময়ের ব্ল্যাক লিস্টেড অগাস্টা ওয়েস্টল্যান্ডকে অন্তর্ভুক্ত করেছে। এমনকি ভারতীয় নৌবাহিনীর জন্য ১০০টি হেলিকপ্টার কেনার জন্য নয়া চুক্তি করার অনুমতিও দিয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।