Inqilab Logo

রোববার ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২১ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

রাত জেগে মসজিদ পাহারা দিচ্ছেন ত্রিপুরার মুসলিমরা

১৬ মসজিদে হামলার পরিকল্পনা

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৭ নভেম্বর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

মসজিদে জ্বলছে আগুন। গ্রামবাসীর চিৎকারে সেখানে ছুটে যান ৩৫ বছর বয়সী লিটন মিয়া। তিনি দেখতে পান একদল লোক মসজিদে কেরোসিন ঢালছে। কিন্তু বেশি ক্ষতি হওয়ার আগেই গ্রামবাসী জেগে ওঠায় হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। শুধুমাত্র নামাজ পড়ার কিছু মাদুর এবং লাশ বহনকারী কাঠের খাটটি পুড়েছে। লিটন মিয়া ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে শিপাহিজিলা জেলার নারাউরা গ্রামের বাসিন্দা। নারাউরা গ্রামটি বাংলাদেশের কুমিল্লা জেলা থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সম্প্রতি এই কুমিল্লা জেলাতেই দুর্গা পূজার সময় একটি মন্দিরে মূর্তির পায়ের ওপর মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআন মাজীদ রাখা নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় সংঘর্ষে ছয় জন মারা যান। যার মধ্যে দুইজন হিন্দু রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় হিন্দুদের বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়।

বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে একটি সমাবেশ করে। সে সময়ে তারা ত্রিপুরার মুসলিমদের ওপর হামলাসহ তাদের বাড়িঘর এবং মসজিদে আগুন দেয় বলে অভিযোগ ওঠে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ বা ভিএইচপি মূলত ভারতের রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ (আরএসএস) এর সাথে সংযুক্ত। সংগঠনটি ভারতের হিন্দু আধিপত্যবাদী গোষ্ঠীগুলোর আদর্শিক ফোয়ারা যা ভারতকে একটি জাতিগত হিন্দু রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিসহ ভারতের শাসক ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)-এর বেশিরভাগ শীর্ষ নেতারা আরএসএস কর্মী হিসাবে তাদের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন।

বাংলাভাষী হিন্দু অধ্যুষিত প্রত্যন্ত রাজ্য ত্রিপুরা বর্তমানে মোদির বিজেপি শাসিত। এখানে মোট জনসংখ্যার প্রায় নয় শতাংশ মুসলিম। এ রাজ্যে মোট ৩৭ লাখ মানুষের বসবাস। একের পর এক মসজিদে হামলার কারণে এখানে বসবাসরত মুসলিমদের মধ্যে ভয় এবং উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ত্রিপুরার একটি প্রভাবশালী প্যান-ভারতীয় মুসলিম সংগঠন জমিয়ত উলামা-ই-হিন্দের একটি অংশের প্রধান মুফতি আবদুল মোমিন বলেন, এখানে ১৬টি মসজিদকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এখানে মসজিদগুলোতে রাতে হামলা চালানো হয় বলে কাউকে শনাক্ত করা যাচ্ছে না। পানিসাগরের চামটিলা এলাকার একজন সরকারি কর্মচারী নজরুল ইসলাম বলেন, আজকাল আমরা রাতে ঘুমাই না। আমাদের মধ্যে ছয় থেকে সাতজন ভোর পর্যন্ত গ্রাম পাহারা দিচ্ছে।

উল্লেখ্য, উত্তর ত্রিপুরা জেলায় অবস্থিত পানিসাগর শহরে ২৬ অক্টোবর সবচেয়ে বেশি অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর দেখা গেছে। বাসিন্দা ও পুলিশ বলছে, ভিএইচপির সমাবেশের সময় সহিংসতা হয়েছিল। সূত্র : আল-জাজিরা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ