নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে বছর এগারো আগে ২০১০ সালে যখন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর বসেছিল তখন খুব কম মানুষই ভেবেছিলেন সেবার কাপ নিয়ে যেতে পারে ইংলিশরা, কিন্তু সত্যিই সবাইকে অবাক করে দিয়ে আহামরি কিছু দল না নিয়েও কাপসমেত লন্ডনে পাড়ি জমিয়েছিলো পল কলিংউডয়ের ইংল্যান্ড। আর বছর পাঁচেক আগে ২০১৬ ইডেনের ফাইনালে শেষ ওভারটা শুরুর আগে খুব কম মানুষই ভেবেছিলেন ওই সময় হারতে পারে ইংল্যান্ড, কিন্তু সেখান থেকে সবাইকে অবাক করে ব্রিটিশদের কাপ জয়ের স্বপ্ন চুরমার হয়ে গিয়েছিলো কার্লোস ব্রাথওয়েটের ব্যাটে। বেন স্টোকসকে শেষ ওভারে টানা চারটি ছক্কা মেরে। আজ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ৭ম আসরের দ্বিতীয ম্যাচে সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষেই মাঠে নামবে ইংলিশরা।
ক্যারিবীয়দের এবার আখ্যায়িত করা হয়েছে বিশ্বকাপের ডার্ক হর্স হিসেবে। আবারও একটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ এসেছে, স্যামি-ব্র্যাথওয়েট-স্যামুয়েলসরা আর মেরুন জার্সিতে নেই কিন্তু ক্যারিবিয়ানরা তাদের সদর্প উপস্থিতি জানান দিতে আসছে গেইল, পোলার্ড, রাসেল, ব্র্যাভো, লুইস, পুরানদের মত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দৈত্যদের নিয়েই। ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবার মরু অভিযানে নামছে তৃতীয়বার কাপ জয়ের দুর্নিবার আশায়।
গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর প্রচুর ম্যাচ হেরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড, বাংলাদেশ সবাই হারিয়েছে তাদের, র্যাঙ্কিয়ে নামতে নামতে এখন তারা ৯ নম্বরে। গত বিশ্বকাপের পরে খেলা ৬৭ ম্যাচের মধ্যে জয় এসেছে মাত্র ২৪টা ম্যাচে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মানেই অন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কারণ এর মধ্যে বেশিরভাগ ম্যাচেই সেরা দল একসাথে খেলেনি ক্যারিবিয়ানদের। শেষ তিনটে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দুবার চ্যাম্পিয়ন ও একবার সেমি ফাইনাল খেলা ওয়েস্ট ইন্ডিজ বড় মঞ্চে সবাই একসাথে খেললে ঠিকই জ্বলে উঠতে জানে। আর জানে বলেই র্যাংকিংয়ে নিচের দিকে থাকা ক্যারিবিয়ানরা এবারেও তাদের সাম্রাজ্য ধরে রাখার জন্য যথেষ্টই এগিয়ে থেকে শুরু করবে।
ক্যারিবিয়ান দলের মূলশক্তি হলো দুধ্বর্ষ সব পাওয়ার হিটারের উপস্থিতি। যথেষ্ট পরিমাণে অলরাউন্ডার উপস্থিত থাকার জন্য দলের ব্যাটিং গভীরতাও যথেষ্টই বেশি। গেইল, লুইস, হেটমায়ার, পুরান, সিমন্স, রাসেল, পোলার্ড, ব্র্যাভোর মত টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের দুর্দান্ত সব পারফরমার ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলে, এঁরা প্রত্যেকেই ফ্রাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টি লিগে ‘হটকেক’ এর মত। এইরকম দুরন্ত ব্যাটিং লাইন আপ দিয়ে বড় রান স্কোরবোর্ডে সাজানো বা বড় রান তাড়া করা দুক্ষেত্রেই ক্যারিবিয়ানরা নিজেদের দিনে অসাধারণ। মিডল ওভার বা স্লগ ওভারে ঝড় তুলতে পোলার্ড ও রাসেল দলের সবচেয়ে বড় ভরসা, পরিস্থিতি অনুযায়ী তাদের কেমন ভাবে ব্যবহার করা হয় তার ওপর খানিকটা নির্ভর করবে ক্যারিবিয়ানদের ভাগ্য।
অন্যদিকে গত কয়েক বছর ধরেই সবচেয়ে ছোট ফরম্যাটে দারুণ ভাবে ধারাবাহিক এউইন মরগ্যানের দল গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর নিজেদের খেলা ৫০ ম্যাচে জয় পেয়েছে ৩০টা ম্যাচে। আর টি-টোয়েন্টি বিশ্ব র্যাংকিংয়ে নম্বর দল হিসেবে খেলতে নামা ইংল্যান্ড মরুর দেশে প্রত্যাশার চাপ সামলে কেমন ধারাবাহিকতা দেখাতে পারে সেদিকে নজর থাকবে গোটা ক্রিকেট বিশ্বের।
মরগানের ইংল্যান্ড দলের মূল শক্তি তাদের পাওয়ার প্যাকড ব্যাটিং লাইন আপ। অধিনায়ক মরগ্যানসহ ওপেনিং এ জেসন রয়, জনি বেয়ারস্টো জুটি থেকে শুরু করে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিশ্বের এক নম্বর ব্যাটসম্যান ডেভিড মালানতো আছেই। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৪২ বলে সেঞ্চুরি করা নতুন তারকা লিয়াম লিভিংস্টোন বা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের অন্যতম সেরা উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান জশ বাটলার ব্যাটিং লাইনআপে থাকায় বিশ্বের যেকোনো বোলিং শক্তির বিরুদ্ধে বড় রান করার ক্ষমতা রাখেন যেকোনো কন্ডিশনে। এরকম ব্যাটিং দিয়ে নিয়মিত বড় স্কোর করা বা বড় রান তাড়া করা ইংল্যান্ডের কাছে আশা করাই যায়। এছাড়া বোলিং ব্রিগেডে ক্রিস জর্ডান, লেগ স্পিনার আদিল রশিদের ওপরও অনেকটাই নির্ভর করবে ইংল্যান্ড।
দু’দলের মুখোমুখি ১৮ লড়াইয়ে জয়ের পাল্লা ভারী ক্যারিবীয়দের। ১১ জয়ের বিপরীতে তারা হেরেছে ৭ ম্যাচে। অবশ্য সবশেষ পাঁচ মুখোমুখি লড়াইয়ে এগিয়ে ইংলিশরা। তাদের তিন জয়ের বিপরীতে উইন্ডিজের জয় দু’টিতে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যেন অপ্রতিরোধ্য ক্যারিবীয়রা। পাঁচ লড়াইয়ের সবকয়টিতেই তাদের জয়জয়কার।
দীর্ঘ পাঁচ বছর পরে আরো একটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, মাঝে প্রথমবার একদিনের ক্রিকেটে বিশ্বসেরা হওয়ার তাজ উঠে গেছে ইংল্যান্ডের মাথায়, ক্রিকেটের ছোট ফরম্যাটেও কী রাজত্ব শুরু করবে ব্রিটিশরা, নাকি ব্রিটিশ স্বপ্ন শেষ মুহূর্তে গিয়ে টেমস নদীর পানিতে ভাসবে।
মুখোমুখি
ম্যাচ উইন্ডিজ ইংল্যান্ড
১৮ ১১ ৭
বিশ্বকাপে ৫ ৫ ০
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।