মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বিধানসভায় বিরোধীদলীয় প্রধান ও বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অনুরোধ করেছেন বাংলাদেশের ধর্মীয় উগ্রপন্থীদের হামলা থেকে ‘সনাতনী জনগণ’কে রক্ষায় জরুরি পদক্ষেপ নিতে। গত বৃহস্পতিবার মোদির কাছে লেখা এক চিঠিতে মি. অধিকারী বলেছেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায় এখন চরম দুরবস্থার মধ্যে রয়েছে। তার ভাষায়, ভ্যান্ডাল বা ‘ধংসোন্মাদ’রা বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মিছিল করে প্রতিমা মণ্ডপ এবং মন্দিরে আক্রমণ চালিয়ে ভাঙচুর করেছে। এসব কারণে বাংলাদেশের হিন্দুদের জন্য এবারের দুর্গা পূজার আনন্দ বিষাদে পরিণত হয়েছে বলে তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেন।
মি. অধিকারী আরো লিখেছেন, এসব ঘটনার পর বাংলাদেশের হিন্দুদের যেসব আত্মীয়স্বজন পশ্চিমবঙ্গে থাকেন তারা চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছেন। তারা বাংলাদেশের আত্মীয়দের নিরাপত্তা দেয়ার ব্যাপারে টেলিফোন করে সমর্থন জানাচ্ছেন। বাংলাদেশের হিন্দুরা প্রায়শই উগ্রপন্থী হামলার শিকার হন বলে পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি প্রধান তার চিঠিতে উল্লেখ করেছেন। বাংলাদেশে দুর্গা পূজার সময় হামলার ঘটনা নিয়ে যেসব ছবি ও ভিডিও প্রচারিত হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের হিন্দুত্ববাদীরা সেগুলো ব্যাপকভাবে শেয়ার করছে।
পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির এই দুই শীর্ষ নেতার উদ্বেগকে অনেকটা ভূতের মুখে রাম নাম হিসেবে দেখছেন সচেতন মহল। বিগত বছরগুলোয় ভারতের বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোয় সংখ্যালঘু তথা মুসলিমদের পিটিয়ে হত্যা, শ্রীরাম জপে বাধ্য করা, বাড়িঘর ভেঙে এলাকাছাড়া করা অনেকটা রুটিনে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের প্রতিবেশি আসামে মন্দির নির্মাণের ছুতোয় মুসলিমদের উচ্ছেদ এবং তা করতে গিয়ে সরাসরি গুলি ও নিহতের লাশে পৈশাচিকতা এখনও তাজা স্মৃতি হয়ে রয়েছে।
‘লাভ জিহাদ, মন্দিরের পানি পানের ঠুনকো অভিযোগে হিন্দুত্ববাদী বিজেপি শাসিত ভারতে কত যুবককে হত্যা-নির্যাতন করা হয়েছে তার লেখাজোখা কোন পরিসংখ্যান নেই। কট্টর হিন্দুত্ববাদী বিজেপি নেতা যোগী আদিত্যনাথের আমলে উত্তরপ্রদেশে এ ধরনের ঘটনা এখন এতটাই ডালভাত হয়ে গেছে যে, এখন মিডিয়াতেও এসব খবর ঠাঁই পায় না বললেই চলে। যে দেশে একজন মানুষের চেয়ে একটি গরুর মূল্য বেশি সেদেশের মানুষের অন্য দেশের বিষয়ে নাক গলানো ভূতের মুখে রাম নাম বলেই মনে হয়।
জনসংখ্যার বিচারে ভারতের সবচেয়ে বড় রাজ্য উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন আগামী বছরের শুরুতেই। ভোটের আগে রাজ্যের নানা প্রান্ত থেকেই খবর আসছে, পরিকল্পিতভাবে মুসলিমদের ওপর সেখানে হামলা চালানো হচ্ছে এবং মারধর করে তাদের ‘জয় শ্রীরাম’ বলতেও বাধ্য করা হচ্ছে। এ ধরনের ঘটনার ভিডিও করে তা ছেড়ে দেয়া হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়াতেও - যাতে মুসলিম সমাজে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
গত মার্চের মাঝামাঝিতে দিল্লির কাছে উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের একটি হিন্দু মন্দিরে ঢুকে পানি খাওয়ার অপরাধে বারো-তেরো বছরের একটি ছেলেকে মাটিতে ফেলে নৃশংসভাবে মারধর করছিল দু’তিনজন যুবক। বাচ্চা ছেলেটির নাম আসিফ, বাবার নাম হাবিব - এটা শোনার পর বেধড়ক মারের পাশে চলতে থাকে অকথ্য গালিগালাজ। প্রথমে মাটিতে ফেলে রড দিয়ে পেটায়, তারপর হাত-পা মুচড়ে দিয়ে লাথি মারতে থাকে।
এর মাসতিনেক পরেই গাজিয়াবাদের কাছে লোনিতে সত্তরোর্ধ্ব বৃদ্ধ আবদুস সামাদকে একটি নির্জন জায়গায় টেনে নিয়ে গিয়ে প্রবল মারধর করা হয়। জোর করে তাকে ‘জয় শ্রীরাম’ বলতে বাধ্য করা হয়, কাঁচি দিয়ে কেটে দেওয়া হয় লম্বা দাড়ি - আর এখানেও ভিডিও ধারণ করা হয় গোটা ঘটনাটির। তিনি বলেন, ওরা শুধু আমাকে শ্রীরাম শ্রীরামই বলায়নি, বারবার বলছিল, করবি আর পাকিস্তানের দালালি’?
পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের যে মুজফফরনগর ও শামলিতে আট বছর আগের দাঙ্গায় শত শত মুসলিম ঘরছাড়া হয়েছিলেন, সেখানেও হালে আবার ফিরে এসেছে সেই দুঃস্বপ্নের স্মৃতি।
গত জুলাইয়ের শুরুতেই উত্তরপ্রদেশের নয়ডাতে একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে সম্পূর্ণ অচেনা লোকজন মেরে অজ্ঞান করে রাস্তায় ফেলে দিয়েছিল প্রবীণ কাজিম আহমেদকেও। লম্বা দাড়ি আর ফেজ টুপি থেকে তাঁকে খুব সহজেই চেনা যায় মুসলিম বলে - আর সে জন্যই তাকে নিশানা করেছিল হামলাকারীরা।
এ ধরনের শত শত নয়, হাজার হাজার ঘটনা যে দেশে যেসব রাজনৈতিক কর্মীদের হাতে হরহামেশা ঘটছে সেই দেশের একজন বিজেপি নেতার শান্তিপ্রিয় প্রতিবেশি দেশের সংখ্যালঘুদের জন্য মায়াকান্নায় বিস্মিত সচেতন মহল। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।