মাত্র ৪৮ ঘণ্টায় দেউলিয়া হলো যুক্তরাষ্ট্রের ২য় বৃহত্তম ব্যাংক
চলতি সপ্তাহের বুধবারও আর দশটি সাধারণ ব্যাংকের মতো বাণিজ্যিক ও আর্থিক লেনদেন সম্পন্ন করেছে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক (এসভিপি), যা দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক ব্যাংক
কয়লা না পেলে আর মাত্র দুইদিন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাবে রাজধানী দিল্লিতে। মঙ্গলবার এই মর্মে প্রশাসনকে নোট পাঠিয়েছিল দিল্লিতে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। তারা জানিয়েছিল, তাদের কাছে আর মাত্র দুইদিনের কয়লা আছে। অথচ কয়লামন্ত্রী বলছেন, এ বছর রেকর্ড পরিমাণ কয়লা উৎপাদন হয়েছে। তাহলে এই সমস্যা কেন?
শুধু দিল্লি নয়, গোটা দেশেই বিদ্যুৎ সঙ্কট দেখা দিয়েছে। গোটা ভারতে সব মিলিয়ে ১৩৫টি তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র আছে। যেখান থেকে গোটা দেশের মোট বিদ্যুতের অর্ধেকেরও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়। এই ১৩৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ১১৫টি কেন্দ্র জানিয়েছে, তাদের হাতে দুইদিনেরও কম কয়লা আছে। এমন সঙ্কট এর আগে কখনো হয়নি। কয়লা সঙ্কটের কারণে ভারত প্রচণ্ড বিদ্যুৎ ঘাটতিতে ভুগছে। মার্চ ২০১৬ এর পরে চলতি অক্টোবর মাসেই সবচেয়ে বেশি বিদ্যুৎ ঘাটতি দেখা দিয়েছে। ভারতের কেন্দ্রীয় গ্রিড রেগুলেটর পোসোকোর দেয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
অক্টোবরের প্রথম ১২ দিনে বিদ্যুৎ সরবরাহ চাহিদার তুলনায় প্রায় ৭৫ কোটি কিলোওয়াট ঘন্টা কমেছে। ঘাটতির পরিমাণ ১ দশমিক ৬ শতাংশ, যা গত সাড়ে পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। অক্টোবরের প্রথম ১২ দিনে ঘাটতি ইতিমধ্যেই ২০১৮ সালের নভেম্বরের পর থেকে এক মাসের হিসাবে সর্ব্বোচ্চ পরিমাণে চলে গিয়েছে। এমনকি অক্টোবরের ১৯ দিন বাকি থাকলেও, এই মাসে ঘাটতি ইতিমধ্যেই চলতি বছরের মোট ঘাটতির ২১ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
উত্তরের রাজ্যগুলো যেমন রাজস্থান, পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশ এবং পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য যেমন ঝাড়খণ্ড ও বিহার সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। রাজ্যগুলোতে সরবরাহ ঘাটতির পরিমাণ ছিল ২ দশমিক ৩ শতাংশ থেকে ১৪ দশমিক ৭ শতাংশ। করোনাভাইরাস মহামারীর দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর বর্ধিত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড কয়লার চাহিদা বাড়িয়ে দিয়েছে যার ফলে সরবরাহ সঙ্কট দেখা দিয়েছে, বিহার, রাজস্থান এবং ঝাড়খণ্ডের মতো রাজ্যগুলোকে দিনে অন্তত ১৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করতে বাধ্য করা হয়েছে।
ভারতের বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় বুধবার এক বিবৃতিতে বলেছে, কয়লার ঘাটতির কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর ক্ষমতা কমে গিয়েছে। যার ফলে মঙ্গলবার উৎপাদনের পরিমাণ ১১ গিগাওয়াট থেকে কমে প্রায় ৬ গিগাওয়াটে নেমে এসেছে। ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদনের ৭০ শতাংশেরও বেশি কয়লাভিত্তিক। এর মধ্যে কাঠ-কয়লা থেকে উৎপন্ন হয় ২০৮ দশমিক ৬ গিগাওয়াট বা ৫৪ শতাংশ। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের ওপর ভারতের নির্ভরতা সেপ্টেম্বরে ৬৬ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বেড়ে অক্টোবরে ৬৯ দশমিক ৬ শতাংশ হয়েছে। তথ্য দেখায়, কয়লার ঘাটতির কারণে বায়ু এবং জলবিদ্যুৎ এর মতো অন্যান্য উৎসেও উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে।
কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশী জানিয়েছেন, কোল ইন্ডিয়ার কাছে এখন ২২দিনের কয়লা মজুত করা আছে। ফলে এই বিদ্যুৎ সঙ্কট হওয়ার কোনো কারণ নেই। প্রশ্ন হলো তাহলে সঙ্কট হচ্ছে কেন? বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, কয়লা উৎপাদনে কোনো ঘাটতি নেই। কিন্তু এবছর বৃষ্টির জন্য কয়লা পরিবহনে সমস্যা হয়েছে। সে কারণেই সমস্ত তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর হাতে সময় মতো কয়লা পৌঁছে দেওয়া যায়নি। আর তার থেকেই তৈরি হয়েছে সঙ্কট। কেন্দ্রীয় সরকার নোট দিয়ে তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে জানিয়েছে, প্রয়োজনে তারা কয়লা আমদানি করতে পারে। দ্রুত যাতে তাদের কাছে কয়লা পৌঁছে দেয়া যায়, তার ব্যবস্থাও করা হবে। সূত্র: ট্রিবিউন, এএনআই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।