Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

ভারতের রাজধানীর দিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত মন্ত্রী পর্যায়ের জেআরসি বৈঠক শুরু হয়েছে। প্রায় তিন বছর পর ভারত সফরে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগামী ৫ সেপ্টেম্বরে দিল্লিতে যাচ্ছেন। আসন্ন সফরের আগে ঢাকা একান্ত ভাবে চাইছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সুষমা স্বরাজ ভবনে বিকালে দীর্ঘ প্রতীক্ষিত বাংলাদেশ ও ভারত যৌথ নদী কমিশনের (জেআরসি) মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে ভারতের জলশক্তি মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শাখাওয়াৎ ও বাংলাদেশের পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক নিজ নিজ প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বাংলাদেশের পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম বৈঠকে ইউস্থিত ছিলেন।
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়, এ বৈঠকে বাংলাদেশ দীর্ঘ-প্রতীক্ষিত তিস্তার পানি ও উন্নয়ন প্রকল্পের ইস্যুটি উত্থাপন করবে। এছাড়া ছয়টি অভিন্ন নদী— মনু, মুহুরী, খোয়াই, গোমতী, ধরলা ও দুধকুমার নিয়ে একটি কাঠামো চুক্তিও চূড়ান্ত করা হবে। গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন সম্পর্কিত ইস্যুগুলো নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হবে।
বৈঠক সূত্র জানায়,এ আগে গত মঙ্গলবার জেআরসি’র সচিব পর্যায়ের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। দু’দেশের কর্মকর্তারা এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে পানি বণ্টন ও অন্যান্য ইস্যু নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। চলতি বৈঠকে দু’পক্ষ দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত কিছু ইস্যুর নিষ্পত্তি করবে। বৈঠকে সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোর নিষ্পত্তি করা হবে। আগামী মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরকালে এসব দলিলপত্র চুক্তি সই হতে পারে। বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি দেওয়া হতে পারে বলে জানা গেছে। গতকালের বৈঠকে গঙ্গার পানি বণ্টনের ওপর যৌথ সমীক্ষা চূড়ান্ত এবং কুশিয়ারা নদী থেকে পানি প্রত্যাহারের ব্যাপারে একটি চুক্তি চূড়ান্ত করা হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বৈঠকে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের নদীর পানি প্রবাহের উপাত্ত বিনিময়ের বিষয়ের ওপরও একটি সমঝোতা স্মারক চূড়ান্ত হবে।
ভারতীয় গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, গত মঙ্গলবার পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার এবং ভারতের জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব পঙ্কজ কুমারের মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে দুই দেশের পানি সংক্রান্ত ইস্যুতে আলোচনা হয়। এর মধ্যে তিস্তা, ছয়টি অভিন্ন নদী- মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতী, মুহুরী ও দুধকুমার ছিল। আলোচনায় ছিল কুশিয়ারা ও গঙ্গা ইস্যুও। জেআরসিতে সচিব পর্যায়ের বৈঠকের একটি ছবি প্রকাশ করে গত বুধবার এক টুইট বার্তায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (দক্ষিণ এশিয়া) রকিবুল হক লিখেছেন, বৈঠকে তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি, পানি খাতে সহযোগিতাসহ অভিন্ন নদীর সমস্যা নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
যৌথ নদী কমিশনের তথ্য বলছে, মন্ত্রী পর্যায়ে বৈঠকে কুশিয়ারার পানি বণ্টন ইস্যু সমাধানে পৌঁছানো নিয়ে চূড়ান্ত আলোচনা হতে পারে। আর আগামী সেপ্টেম্বরের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরে কুশিয়ারা নিয়ে একটি সমঝোতা স্মারক বা এমওইউ সই হতে পারে। সাম্প্রতিক বর্ষায় দুই দেশের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত বিভিন্ন নদীর পানি বেড়ে তীরবর্তী অঞ্চলে বন্যা প্রসঙ্গও থাকবে আলোচনার টেবিলে।
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিভিন্ন নদীর জলসম্পদ বণ্টন, সেচ এবং বন্যা ও এই জাতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ যৌথভাবে মোকাবিলা করতে ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে সমঝোতার মধ্য দিয়ে গঠিত হয় যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি)। সবশেষ ২০১০ সালে জেআরসি বৈঠক হয়েছিল।
এর আগে মমতাকে শেখ হাসিনা চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন, তিনি ভারতে আসছেন এবং তিনি আশা করেন সেই সফরে তাঁর সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর দেখা হবে। পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রসঙ্গে মমতার প্রশংসাবাক্যের জন্য হাসিনা মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদও জানিয়েছিলেন তার চিঠিতে। মমতাকে লেখা চিঠিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, আপনার সৌহার্দ্য এবং অভিনিবেশ আমায় মুগ্ধ করেছে। বাংলাদেশের মানুষ পশ্চিমবঙ্গের মানুষের সঙ্গে একাত্ম বোধ করে। বিদেশ মন্ত্রী সূত্রের বক্তব্য, এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে দিল্লিতে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি ঠিকই, কিন্তু রাজনৈতিক স্তরে কোনও যোগাযোগ হয়েছে কি না, তা সরকারি কর্তারা বলতে পারছেন না। রাজনৈতিক সূত্রের বক্তব্য, সব মিলিয়ে হাসিনার ভারত সফরের সময়ে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি আসার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ভারত থেকে বাংলাদেশ ফেরার পরেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিউ ইয়র্কে যাওয়ার কথা রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সম্মেলনে যোগ দিতে।



 

Show all comments
  • Sharafat Ahmad Shahin ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:২৯ এএম says : 0
    বর্তমানে ভারত একটি ব্ল্যাকমেইলার বন্ধু রাষ্ট্র।
    Total Reply(0) Reply
  • Azharul Haque ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:২৯ এএম says : 0
    বাংলাদেশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার কসবা ও ভারতের ত্রিপুরার কমলাসাগর এবং ফেনী ছাগলনাইয়া শ্রীনগর সীমান্ত হাট দুটি চালু করা হোক।
    Total Reply(0) Reply
  • Samsu Zoha ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:২৯ এএম says : 0
    আবারও একটা পানি চুক্তি করা হোক, যে চুক্তির ফলে বর্ষা মৌসুমে আরও বেশি পানি আসবে, আর শুকনো মৌসুমে নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • Riyazuddin Raju ২৬ আগস্ট, ২০২২, ৮:২৯ এএম says : 0
    এই নদীর অভিশাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে একদিন ভারত কে
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ২৬ আগস্ট, ২০২২, ১১:০৫ এএম says : 0
    আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির পা চাটা গোলাম ইন্ডিয়ার কাছে কিছুই পাবে না আমাদের দেশটাকে ওরা ধ্বংস করে দিয়েছে ইন্ডিয়া আমাদের দেশটাকে পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে ইন্ডিয়া যা ইচ্ছে তাই করছে আল্লাহ তুমি আমাদেরকে বাঁচাও এই আমাদের প্রিয় মাতৃভূমির পা চাটা গোলাম ইন্ডিয়ার কাছে কিছুই পাবে না আমাদের দেশটাকে ওরা ধ্বংস করে দিয়েছে ইন্ডিয়া আমাদের দেশটাকে পুরোপুরি দখল করে নিয়েছে ইন্ডিয়া যা ইচ্ছে তাই করছে আল্লাহ তুমি আমাদেরকে বাঁচাও এই পা চাটা গোলামদের কাছ থেকে এবং কোরআন দিয়ে দেশ শাসন করা ও তাহলে ইন্ডিয়া আমাদের পায়ের তলে থাকবে থাকবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ-ভারত যৌথ নদী কমিশনের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক শুরু
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ