বিএনপির মানববন্ধন আজ, পাল্টা কর্মসূচি আওয়ামী লীগ
সারা দেশের মহানগর ও জেলা পর্যায়ে আজ মানববন্ধন করবে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আর এ
রাজশাহী মহানগরীতে ভুয়া ফেসবুক আইডি খুলে অভিনব কায়দায় যুবতীকে বিয়ে এবং চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে সাত লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগে এক প্রতারককে আটক করেছে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
গ্রেফতারকৃত হলো দিনাজপুর জেলার নবাবগঞ্জ থানার বাঘাডুবি ভবানীপুর গ্রামের মোঃ জাকারিয়া আনসারীর ছেলে এম ওয়াদুদ জিয়া জুয়েল (৩০)। সে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্যবস্থাপনা বিভাগে বিবিএ এবং এমবিএ সম্পন্ন করেছে।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের দিকে সিমা (ছদ্মনাম) এর সাথে আমিনুল ইসলাম নামের এক যুবকের ফেসবুকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ হলেও তাদের মধ্যে সাক্ষাৎ হয়নি।
আসামী জুয়েল ভুক্তভোগী সিমা (ছদ্মনাম) এর প্রেমিকের ফেসবুক আইডি হ্যাক করে নিজেই প্রেমিক সেজে সিমার সাথে প্রেমের অভিনয় শুরু করে। তার কিছুদিন পরে প্রতারক জুয়েল আরো একটি ভূয়া ফেসবুক আইডি খুলে নিজেকে সিমার প্রেমিকের ঘনিষ্ঠ বন্ধু পরিচয় দিয়ে প্রেমিকের সাথে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে সিমার বাসায় যায়। সেখানে নিজের ল্যাপটপ হারানোর অজুহাত দেখিয়ে তার মায়ের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকার চেক নেয়।
পুনরায় আসামী জুয়েল আরেকটি আইডি থেকে সিমাকে মেসেঞ্জারে বলে তোমার প্রেমিক ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ঢাকা স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি আছে। তার চিকিৎসার জন্য অনেক টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে তার কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা গ্রহণ করে। এদিকে সিমা ও তার পরিবার আমিনুলের সাথে দেখা করার জন্য ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হলে আসামী জুয়েল সিমাকে জানায় আমিনুল মারা গেছে, আসার প্রয়োজন নেই। আমরা লাশ নিয়ে আমিনুলের গ্রামের বাড়ি যাচ্ছি।
এর কিছুদিন পরে প্রতারক জুয়েল আরো একটি ভুয়া আইডি খুলে আমিনুলের বোন পরিচয় দিয়ে সিমার সাথে যোগাযোগ করে। তার ভাইয়ের চিকিৎসার জন্য তিন লক্ষ টাকা ব্যয় করায় সিমাকে ধন্যবাদ জানায় এবং টাকা ফিরিয়ে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। পরবর্তীতে আসামী জুয়েল আমিনুলের বোন পরিচয়ে সিমার সাথে যোগাযোগ করতে থাকে এবং একটা চাকুরীর ব্যবস্থা করে দেয়ার কথা বলে। চাকুরির জন্য ৭ লক্ষ টাকার প্রয়োজন বলে সিমাকে জানায়। তিন লক্ষ টাকা আমিনুলের পরিবারের পক্ষ থেকে দিবে অবশিষ্ট চার লক্ষ টাকা সিমাকে দিতে বলে। তার কথামত সিমা চাকুরির আশায় ৪ লক্ষ টাকা প্রদান করে। টাকা গ্রহণ করার পরে আসামী জুয়েল তার ব্যবহৃত ভূয়া তিনটি আইডি বন্ধ করে সিমার সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। আসামীর ব্যবহৃত তিনটি আইডি আলাদা আলাদা নামে হলেও সে নিজেই তিনটি চরিত্রে অভিনয় করে সিমার সাথে বিভিন্ন ভাবে প্রতারণা করে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা হাতিয়ে নেয়।
ভুক্তভোগী সিমা ও তার পরিবার বিষয়টি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মোঃ আবু কালাম সিদ্দিক মহোদয়ের নিকট মৌখিক ভাবে অভিযোগ করলে পুলিশ কমিশনার আসামী গ্রেফতারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি)কে নির্দেশ দেন।
পুলিশ কমিশনারের নির্দেশে রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার মোঃ আরেফিন জুয়েল এর সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোঃ আব্দুল্লাহ আল মাসুদ এর নেতৃত্বে পুলিশ পরিদর্শক মোঃ আবুল কালাম আজাদ এবং এসআই মোঃ আশরাফুল ইসলাম ও তার টিম ভূয়া ফেসবুক আইডি গুলো পর্যালোচনা করে আসামী সনাক্তে কাজ শুরু করেন।
পরবর্তীতে ১৩ অক্টোবর ২০২১ সকাল ৯ টায় ডিবি পুলিশের ঐ টিম গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ও আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় বোয়ালিয়া থানার মকবুল হালদার মোড় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে প্রতারক জুয়েল (৩০)কে আটক করে।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী ঘটনার সাথে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে এবং সে আরো জানায় তার আরো ৯ টি ভূয়া ফেসবুক আইডি আছে। সিমার কাছ থেকে প্রতারণার মাধ্যমে আত্মসাৎকৃত টাকা দিয়ে সে নিজ গ্রামে একটি গরুর খামার দিয়েছেন এবং জমি ক্রয় করে।
গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।