Inqilab Logo

সোমবার, ২০ মে ২০২৪, ০৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১১ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

পাথরঘাটায় মাদ্রাসা ছাত্রীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কিশোর গ্যাংয়ের হামলা

বরগুনা জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১৩ অক্টোবর, ২০২১, ১০:২৭ এএম

বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার হাড়িটানা ছালেহিয়া দাখিল মাদ্রাসার এক ছাত্রীকে উত্যক্তের প্রতিবাদ করায় কিশোর গ্যাং এর হামলার শিকার হয়েছে প্রতিবাদকারী তিন কিশোর। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের পাথরঘাটা-পদ্মা সড়কে এ ঘটনা ঘটে। '

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত সোমবার রাত ৮ টা থেকে ১১টা পর্যন্ত 'তুমি আর আমি' নামে একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে হামলার প্রস্তুতি নেয় স্থানীয় কিশোর গ্যাং সদস্য রাহাত, রাব্বি ও ইমরান। ওই ম্যাসেঞ্জার গ্রুপে রামদা ও লোহার পাইপ দিয়ে হামলার প্রস্তুতির ছবিও দেয় তারা।

উত্ত্যক্তকারীদের হামলায় আহতরা হলেন- পশ্চিম হাড়িটানা গ্রামের দুলাল মিয়ার ছেলে মো. রাকিব (১৫), মৃত খলিলুর রহমানের ছেলে জাকারিয়া (১৫) ও লাল মিয়া খানের ছেলে ইমরান (১৭)।
আহতদের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্থানীয় কিশোর গ্যাং সদস্য রাব্বি প্রেমের প্রস্তাব দেয়, তাতে রাজি না হওয়ায় ওই ছাত্রীকে রাব্বি পথেঘাটে উত্ত্যক্ত করতে থাকতো। সবশেষ গত সোমবার ওই ছাত্রী উত্ত্যক্তের শিকার হলে তার সহপাঠী রাকিব প্রতিবাদ করে। এরপর প্রতিবাদের জের ধরে ওই কিশোর গ্যাং সদস্যদের পরিচালিত ‘তুমি আর আমি’ নামে একটি ম্যাসেঞ্জার গ্রপে রাব্বি, রাহাত ও ইমরান রাকিবকে মারধরের পরিকল্পনা করে এবং রামদা ও লোহার পাইপ দিয়ে হামলা করা হবে জানিয়ে তার ছবি পোস্ট করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী মঙ্গলবার রাব্বি, রাহাত, ইমরানসহ ৬ থেকে ৭ জন বখাটে সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কোড়ালিয়া বাজার থেকে বাড়িতে যাওয়ার পথে হাড়িটানা আলমের দোকানের পুর্ব পাশে রাকিবকে লোহার পাইপ, মোটরসাইকেলের হাইড্রোলিক পাইপ এবং হকিস্টিক দিয়ে হামলা করে। এসময় রাকিবকে রক্ষা করতে আসলে জাকারিয়া ও ইমারনকেও পিটিয়ে আহত করা হয়। হামলায় জাকারিয়ার ডান হাত ভেঙ্গে যায় এবং রাকিব গুরুতর আহত হয়। পরে স্থানীয়রা এগিয়ে আসলে রামদা, হকিস্টিক ও লোহার পাইপ উচিয়ে বীরদর্পে স্থান থেকে চলে যায় ওই কিশোর গ্যাং সদস্যরা।

স্থানীয়রা জানান, রাহাত এর আগেও অনেকে মেয়েকে উত্ত্যক্ত করেছে। অনেক মেয়েকে জোর করে বাড়িতে নিয়ে যেত। তাছাড়া তার বাড়ির সামনে রাস্তার পাশে একটি কাঠের বেঞ্চ বসিয়ে প্রতিনিয়ত মাদক সেবন করে ওই রাহাত। প্রতিবাদ করলে মারধর করার হুমকি দেয়।

আহত রাকিব, ইমরাত ও জাকারিয়া জানান, বিভিন্ন সময় ওই ছাত্রীকে উত্ত্যক্ত করতো রাহাতসহ তার সহযোগিরা। রাস্তায় উঠলে ওই ছাত্রীর পিছু নিত রাহাত। আমরা এর প্রতিবাদ করি। যার জের ধরেই আমাদেরকে মারধর করেছে। আমরা তাদের ভয়ে এখন পর্যন্ত উন্নত চিকিৎসা নিতে যাওয়ার সাহস পাইনি।
অভিযুক্ত রাহাতের সাথে যোগাযোগ করতে বাড়িতে গেলে তাকে পাওয়া যায়নি। তবে রাহাতের বাবা সোহরাব হোসেন বলেন, আমার ছেলে বখাটে ছেলেদের সাথে মিশে মাদকাসক্ত হয়ে গেছে। ওকে আমি বারবার নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি।

পাথরঘাটা সার্কেল এএসপি তোফায়েল হোসেন সরকার সাংবাদিকদের বলেন, আমি ম্যাসেঞ্জার গ্রপের পরিকল্পনা দেখেছি। আমরা খোঁজ খবর নিচ্ছি। এ বিষয়ে অপরাধীরা কেউ ছাড় পাবেনা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: হামলা


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ