পশ্চিম তীরে সহিংসতা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকিস্বরূপ
জর্ডানের বাদশাহ আবদুল্লাহ মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিনের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এই বৈঠকে তিনি বলেছেন, ফিলিস্তিনের
আফগানিস্তানে তালেবান সরকারের স্বীকৃতি নিয়ে কঠোর অবস্থান নিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। তিনি বলেছেন, আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেতে হলে তালেবানকে কী কী শর্ত মানতে হবে জি-২০ সম্মেলন থেকে সে ব্যাপারে তাদের স্পষ্ট বার্তা দিতে হবে। মঙ্গলবার একটি ফরাসি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন তিনি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম রয়টার্স। ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেন, এই শর্তাবলীতে অবশ্যই নারীদের জন্য সমতা, বিদেশি মানবিক কার্যক্রমের প্রবেশাধিকার এবং ইসলামি সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সহযোগিতা না করার মতো বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত থাকতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির একটি মূল্য থাকা উচিত। আমাদের দিক থেকে যে বিষয়গুলোতে জোর দেওয়া হচ্ছে তার মধ্যে আফগান নারীদের মর্যাদা, নারী-পুরুষের সমতার মতো বিষয়গুলো থাকা উচিত। আমাদের পক্ষ থেকে এটি তাদের জন্য শর্ত হওয়া উচিত।’ এই মাসের শেষ দিকে রোমে জি-২০ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। বিষয়টি উল্লেখ করে ম্যাখোঁ বলেন, ‘আমরা আফগানিস্তান নিয়ে কথা বলবো। আমাদের অবশ্যই বলতে হবে। ইউরোপীয়, আমেরিকান, চীন, রাশিয়া, আফ্রিকার বড় শক্তি, এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগরীয় এবং ল্যাটিন আমেরিকা; একসঙ্গে আমাদের অবশ্যই একটি স্পষ্ট বার্তা থাকতে হবে যে, আমরা তালেবানদের স্বীকৃতির শর্ত নির্ধারণ করবো।’এর আগে গত মাসে তালেবান সরকারের সঙ্গে যে কোনও ধরনের সম্পর্ক থাকার কথা প্রত্যাখ্যান করে ফ্রান্স। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-ইভেস লে ড্রায়ান বলেন, আদতে এ ধরনের কোনও সম্পর্ক নেই। তিনি বলেন, তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি কিংবা তাদের সঙ্গে যে কোনও ধরনের সম্পর্ক রাখার বিষয়টি প্রত্যাখ্যান করছে ফ্রান্স। প্যারিস তাদের কাজ দেখতে চায়। অর্থনীতিতে তাদের একটা স্বস্তির জায়গায় যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে। তাদের আন্তর্জাতিক সম্পর্কেরও প্রয়োজন হবে। তবে এগুলো নির্ভর করতে তাদের ওপর। রয়টার্সের অপর এক খবরে বলা হয়, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেছেন, আলজেরিয়ার সাথে সম্প্রতি সৃষ্ট কূটনৈতিক উত্তেজনার শিগগিরই সমাপ্তি হবে। মঙ্গলবার ফ্রান্সের ইন্টার রেডিওর সাথে এক সাক্ষাতকারে এই মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি আমরা পরিস্থিতি শান্ত করতে পারবো কেননা আমি চিন্তা করি, অন্যের সাথে কথা বলা ও অগ্রগতি করাই উত্তম।’ এর আগে আলজেরিয়ার বিষয়ে ম্যাখোঁর ‘অযাচিত মন্তব্যের’ জেরে ফ্রান্স থেকে শনিবার নিজেদের রাষ্ট্রদূত প্রত্যাহার করে আলজিয়ার্স। পরে রোববার ফরাসি সামরিক বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধ করে দেয় দেশটি। গত বৃহস্পতিবার ফ্রান্সের দৈনিক লা মন্ডে এক প্রতিবেদনে জানায়, আলজেরিয়ার স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ফ্রান্সের পক্ষে যুদ্ধ করা আলজেরীয় নাগরিকদের বংশধরদের সাথে এক বৈঠকে আলজেরিয়া সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ। তিনি বলেন, আলজেরিয়া এক রাজনৈতিক-সামরিক ব্যবপস্থাপনায় শাসিত হচ্ছে এবং দেশটির আনুষ্ঠানিক ইতিহাস ‹সত্যের ভিত্তিতে নয় বরং ফ্রান্সের প্রতি ঘৃণার মনোভাব থেকে› সম্পূর্ণভাবে পুনর্লিখিত হয়েছে। পরে আলজেরিয়ার প্রেসিডেন্টের দফতর থেকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ফরাসি প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের নিন্দা জানানো হয়। এতে বলা হয়, ফরাসি প্রেসিডেন্টের এই মন্তব্যের মাধ্যমে সেই আলজেরীয়দের ‹অসহ্য অপমান› করা হয়েছে যারা ফ্রান্সের ঔপনিবেশকতার বিরুদ্ধে লড়াই করে নিহত হয়েছে। ফ্রান্স ১৮৩০ সাল থেকে ১৯৬২ পর্যন্ত টানা ১৩২ বছর আলজেরিয়ায় ঔপনিবেশিক শাসন চালায়। আলজেরিয়ার ওপর ফ্রান্সের দখলদারিত্ব বজায় রাখতে ফরাসিরা অন্তত ৫০ লাখ আলজেরীয়কে হত্যা করে। ১৯৫৪ থেকে আলজেরীয়দের টানা আট বছর স্বাধীনতা যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৬২ সালে ফ্রান্স আলজেরিয়া ত্যাগ করে। যুদ্ধে প্রায় ১৫ লাখ আলজেরীয় প্রাণ হারান। রয়টার্স।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।