১৬ বছর আগে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের সামনে পুলিশ চেকপোস্টে আত্মঘাতী বোমা হামলায় নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জেএমবির নেতা মিজানুর রহমান ওরফে বোমারু মিজানকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই রায়ে আদালত জাবেদ ইকবাল নামে আরেক জঙ্গিকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন। গতকাল রোববার চট্টগ্রামের সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালের বিচারক বিশেষ জজ আব্দুল হালিম আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।

মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত বোমারু মিজান পলাতক। তিনি নিষিদ্ধ ঘোষিত জামা’আতুল মোজাহেদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) বোমা বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত জাবেদ ইকবাল জেএমবির চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমান্ডার ছিলেন। তিনি কারাগারে আছেন। রায় ঘোষণার সময় তাকে কারাগারে হাজির করা হয়।
বিগত ২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর সকালে চট্টগ্রাম আদালত ভবনের পুলিশ চেকপোস্টের সামনে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এতে ঘটনাস্থলে মারা যান পুলিশ কনস্টেবল রাজীব বড়ুয়া ও সীতাকুন্ড এলাকার ফুটবলার শাহাবুদ্দিন। আহত হন পুলিশ কনস্টেবল আবু রায়হান, সামসুল কবির, রফিকুল ইসলাম ও আবদুল মজিদসহ ১০ জন। পায়ে বোমা বেধে পুলিশ চেকপোস্টে ঝাঁপিয়ে পড়ে জঙ্গি হোসেন মাহমুদ ওরফে হোসেন আলী। তার দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এক পা অনেক উপরে গাছে ঝুলতে থাকে। দুই দিন পর চমেক হাসপাতালে মারা যান তিনি।
এ ঘটনায় কোতোয়ালী থানায় মামলা দায়েরের পর ২০০৬ সালের ১৮ মে পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। ওই বছরের ১৬ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগ গঠন করা হয়। আসামিদের মধ্যে জেএমবি প্রধান শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুল ইসলাম ওরফে বাংলা ভাই এবং আতাউর রহমান সানীর ভিন্ন মামলায় আগেই মৃত্যুদন্ড কার্যকর হয়েছে। এর ফলে তাদের বিচারিক কার্যক্রম থেকে বাদ দেওয়া হয়।
মোট ৩২ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতে এই রায় ঘোষণা করেন। জাবেদ ইকবাল তার কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়ায় আদালত মৃত্যুদন্ডের পরিবর্তে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছে বলে রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে। জেএমবির আঞ্চলিক কমান্ডার জাবেদ ইকবাল ওরফে মুহম্মদের সারাদেশে ৩০টির বেশি মামলায় প্রায় ৪০০ বছরের সাজা হয়েছে। আর বোমারু মিজানকে ২০১৪ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি আদালতে হাজির করার সময় ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রিজন ভ্যান থেকে ছিনতাই করে নেয় জঙ্গিরা। সেই থেকে পলাতক বোমারু মিজান।