Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ভবানীপুরে মমতা কত ভোটে জিতছেন জানা যাবে আজ

হার নিশ্চিত মানছে গেরুয়া শিবির

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ অক্টোবর, ২০২১, ১২:০৩ এএম

উপনির্বাচনে জেতা আসনেও জয় পাওয়া যে কঠিন, সে অভিজ্ঞতা রয়েছে বিজেপি-র। ২০১৯ সালে স্বয়ং দিলীপ ঘোষের ছাড়া খড়্গপুর সদর তৃণমূলের কাছে হারাতে হয়েছিল গেরুয়া শিবিরকে। আর ভবানীপুরে গত বিধানসভা নির্বাচনে তো বড় ব্যবধানে জিতেছে তৃণমূল। তার ওপর উপনির্বাচনে আবার প্রার্থী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোট পড়ার হারও সন্তোষজনক নয়। তাই জেতার আশা নয়, বরং কত ভোটের ব্যবধানে পরাজয় তার অঙ্কই কষছে বিজেপি শিবির। আজ ভবানীপুরের সঙ্গে নির্বাচনের ফল ঘোষণা হতে চলা শামসেরগঞ্জ কিংবা জঙ্গিপুর নিয়েও দল আশাবাদী নয়। কারণ মুর্শিদাবাদে না আছে সংগঠন, না ছিল হাওয়া। ফলে আজকের ফল যে ৩-০ হতে চলেছে তার জন্য অন্তত মানসিক ভাবে প্রস্তুত বিজেপি।

আর মমতার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রিয়ঙ্কা টিবরেওয়াল প্রচারপর্বে নিজেকে ‘লড়াকু’ হিসেবে তুলে ধরলেও ফল ঘোষণার আগের দিন একেবারেই চুপ। গণমাধ্যমকে বললেন, ‘আমি ফল নিয়ে ভাবছি না। যা হওয়ার হয়ে গেছে। এখন অন্য কাজে ব্যস্ত রয়েছি’। প্রিয়ঙ্কা ‘অন্য কাজ’-এ ব্যস্ত থাকলেও বিজেপি শিবিরের একাংশ হিসেব কষছেন পরাজয়ের ব্যবধান নিয়ে। রাজ্য নেতাদের প্রায় সকলেই মনে করছেন বিধানসভা নির্বাচনের তুলনায় উপনির্বাচনে জয়ের ব্যবধান বাড়িয়ে নেবে তৃণমূল। মমতা জিততে পারেন ৩০ থেকে ৪০ হাজার ভোটে।

ভোট প্রচারে যাই বলা হোক না কেন ভবানীপুর যে দলের জন্য কঠিন ঠাঁই, তা মানছেন রাজ্য নেতারা। এক শীর্ষ নেতার বক্তব্য, ‘আসলে উপনির্বাচন যখন রাজ্যের শাসন ক্ষমতায় কোনও পরিবর্তন আনতে পারবে না বলে বোঝা যায়, তখন সাধারণ ভোটাররা চিন্তা কম করেন। এমনকি ভোট দিতেও সে ভাবে আগ্রহ দেখান না। সেটা পরিসংখ্যানই বলে দেয়’।

এ বক্তব্য যে অনেকাংশেই ঠিক, তার উদাহরণ আগেই দেখিয়েছে ভবানীপুর। ২০১১ সালেও এ আসনে উপনির্বাচনে জিতেছিলেন মমতা। সেবার নির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী সুব্রত বক্সী যখন জিতেছিলেন, তখন এ আসনে ভোট পড়েছিল ১,৩৫,৭৪১টি। যা মোট ভোটারের ৬৩.৭৮ শতাংশ। পরে মুখ্যমন্ত্রী যখন উপনির্বাচনে প্রার্থী হলেন, তখন সেটা কমে হয়ে যায় ৯৫,০৬৪ অর্থাৎ ৪৪.৭৩ শতাংশ। মানে ১৯.০৪ শতাংশ কম। আবার ২০১৬ সালে মমতা যখন জিতলেন তখন ভোট পড়ে ১,৩৭,৪৭৫। মোট ভোটারের ৬৬.৮৩ শতাংশ। গত এপ্রিল মাসে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় যখন জিতলেন, তখন ভোট পড়েছিল ১,২৭,৫৩৬। মানে ৬১.৭৯ শতাংশ। আর এ বার পড়েছে ৫৭ শতাংশের একটু বেশি।

বিজেপি নেতারা মুখে না বললেও একান্ত আলোচনায় স্বীকার করছেন, প্রচারে উত্তাপ ছড়ানো গেলেও ভবানীপুরে ভোট করাতে পারেনি দল। বহুতলের বাংলাভাষী নন এমন বাসিন্দাদের ভোটের লাইনে দাঁড় করিয়ে জয় পেতে চেয়েছিল বিজেপি। কিন্তু সেটা সম্ভব হয়নি। এক শীর্ষ নেতার কথায়, ‘ভবানীপুর এলাকায় একটা বড় অংশের মুসলিম ভোটার রয়েছেন। তাঁদের ভোট ইভিএমবন্দি হলেও হিন্দু ভোটকে সেভাবে একত্রিত করা যায়নি। ফলে তৃণমূলের জয়ের ব্যবধান বাড়তে পারে। শোভনদেব জিতেছিলেন ২৮,৭১৯ ভোটে। এ বার মমতা তা টপকে যেতে পারেন’।

হার নিশ্চিত জেনেও রোববার কী বলা হবে, তার মহড়াও করে রেখেছে বিজেপি। ভোট গ্রহণের দিন থেকেই গেরুয়া শিবির বলতে শুরু করে, মুখ্যমন্ত্রীর জয় নিশ্চিত করতে কারচুপির আশ্রয় নিয়েছে তৃণমূল। অন্যদিকে, শাসকদল জয় নিশ্চিত বুঝতে পেরে লোকসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে সেøাগান তুলেছে, ‘বি ফর ভবানীপুর, বি ফর ভারত’। এর পাল্টা দিতে এক বিজেপি নেতা বলেন, ‘তৃণমূল ওটা বললে আমরাও ঠিক করে রেখেছি কী বলব। আমাদের সেøাগান হবে ‘বি ফর ভবানীপুর, বি ফর বাঁশদ্রোণী’। কারণ, ভবানীপুরে আমরা হাতেনাতে বাঁশদ্রোণী থেকে আসা ভুয়ো ভোটার ধরেছি’। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।



 

Show all comments
  • Rafiq Sumon ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪১ এএম says : 0
    পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় তৃণমূল কংগ্রেস এবং মমতা ব্যানার্জীকে অভিনন্দন। আশা করি, তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি এবং সীমান্ত হত্যা বন্ধে তৃণমূলের এই বিজয় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Imran Selim ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪১ এএম says : 0
    অসম্ভব কর্মঠ, তেজস্বী,সাহসী,এবং সৎ। সর্বোপরি অসাম্প্রদায়িক এবং সাধারণ জীবন যাপনে অভ্যস্থ। পরিস্কার ধর্মনিরপেক্ষ সর্বভারতীয় চরিত্র।
    Total Reply(0) Reply
  • Masud Miah ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪১ এএম says : 0
    আফসোস ভারতের প্রতিটি নির্বাচনই গনতান্ত্রিক উপায় হয় কিন্তু ওরা বাংলাদেশের নির্বাচন গুলো সঠিক পন্থায় হতে দেয়না বিশেষ কোন দলকে ওরা জেতাতে মরিয়া হয়ে থাকে
    Total Reply(0) Reply
  • শারমীন আলম আরজু ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪২ এএম says : 0
    অভিনন্দন নারী জাতির অহংকার পশ্চিমবঙ্গের মমতা বন্দ্রোপাধ্যায়কে টানা তৃতীয় বার বিজয়ী হওয়ার জন্য
    Total Reply(0) Reply
  • Rony Roy ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪৩ এএম says : 0
    রাজনীতিতে ভোটের খেলায় সংখ্যালঘু সম্প্রদায় হচ্ছে ট্রামকার্ড।আর এই কার্ডেই মমতার জয়লাভ..
    Total Reply(0) Reply
  • Hamidur Noyon ৩ অক্টোবর, ২০২১, ৩:৪৩ এএম says : 0
    মমতা ব্যানার্জী 'লড়াকু' ও 'প্রতিবাদী' ব্যক্তিত্বের অধিকারি একজন স্বাধীন বীর বাঙলী।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ভারত


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ