রামগতিতে আ.লীগ নেতাকে বহিষ্কার
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চরআলগী ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় ইউনিয়ন আ.লীগের সাধারণ সম্পাদক সাহেদ আলী মনুকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। গত
খাল বিল নদী নালার দেশ বাংলাদেশ। কালের বিবর্তনে অনেক নদ-নদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে গেছে। মানুষ বেড়েছে, দখল হচ্ছে নদ-নদী। রাজনৈতিক ক্ষমতার ধাপটে দখল হচ্ছে সরকারি খাস ভূমি। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর দেশের খাল-বিল, নদী জলাশয় উদ্ধারের জন্য ব্যাপক পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। কিন্তু সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় সরকারি নদ-নদী, খাল-বিল, জলাশয় জবর দখল থেকে উদ্ধারে তেমন কোন লক্ষণ দেখা হচ্ছে না।
সুরমার নদীর একটি উপনদীর নাম বাসিয়া নদী। এই বাসিয়া নদী থেকে বিশ্বনাথ নতুন বাজারের মোড় হয়ে সোজা পশ্চিম দিকে মুফতির গাঁও, চৌধুরী গাঁও, গোয়ালগাঁও, মীরের চর, মীয়াজনের গাঁও, চরচন্ডি গ্রামের মধ্য দিয়ে প্রবাহমান চরচন্ডি নদীটি মাছুখালি হয়ে চাউলধনী হাওরের একপাশ দিয়ে টুকের বাজারের কাছে মাকুন্দা নদীতে মিলিত হয়েছে।
বাসিয়া নদীর মত চরচন্ডী নদীর যৌবন ছিল। ৯০ দশকের দিকে বাসিয়া ও চরচন্ডি নদী দিয়ে ছোট বড় নৌকা ও লঞ্চ চলাচল করত। প্রতিদিন সারি সারি পাল তোল নৌকা দেখা যেত। নৌকার গুনটানা ছিল অপরূপ এক দৃশ্য।
আশ্বিন ও কার্তিক মাসে চরচন্ডি নদীর তীরের মানুষ হরেক রকম জাল পলোসহ বিভিন্ন মাছ ধরার যন্ত্র দিয়ে দেশিয় প্রজাতির রুই কাতলা, বাউস, মৃগেল রাণী মাছ, রামা হতো। এই অঞ্চলের প্রবিণরা শুধু গল্প করছেন। নতুন প্রজন্মরা চরচন্ডি নদীর কাহিনি শুনে তা কেউ বিশ্বাস করতে পারছেন না। নদীটি প্রস্থ ছিল প্রায় ৫০/৬০ মিটার। লম্বা ছিল প্রায় ২০ কিলোমিটারের মতো। আশ্বিন কার্তিক মাসেও কয়েক ফুট জল থাকত। নদীর দুই তীরের জমিতে শীতকালিন তরি-তরকারি শাক-সবজি ও চৈত্র বৈশাখ মাসে ইরি ফসল এই নদীর পানি দিয়ে ফলানো হতো। কিন্তু গত ২০ বছরের ব্যবধানে নদীটি যেন কোথায় হারিয়ে গেল। চরচন্ডি নদী এখন আর খাল নয়, দুই দিকে ভরাট হয়ে গ্রামের ল্যাটিনের নালায় পরিনত হয়েছে। এক শ্রেণির লোক রান্না বান্না আবর্জনা ও পলিতিন ফেলে চরচন্ডি নদীকে ডাস্টবি করে রেখেছে। বিএনপির শাসননামলে কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসুচীর আওতায় নদীটির খনন কাজ শুরু হলে নদীর দুই তীরের ঘাস পরিস্কার করে দেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক রাজস্ব ও সহকারি কমিশনার ভুমির রেকর্ড পত্রে চরচন্ডি নদীর নামও মুছে গেছে। নদীটি উদ্ধার করা হলে বিশ্বনাথ, দৌলতপুর, দশঘর এ ৩টি ইউনিয়নের কয়েক হাজার কৃষকের জীবন মানের উন্নতি হবে এবং কৃষি ও মৎস উৎপাদনের ব্যাপক সাড়া জাগাবে।
দৌলতপুর ইউপি চেয়ারম্যার আমির আলীর বলেন, চরচন্ডি অনেক বড় একটি নদী ছিল, নদীটি বিলীন হওয়ায় এই অঞ্চলের কৃষি ক্ষেতে বিরাট প্রভাব পড়েছে। জরুরি ভিত্তিতে দখল উচ্ছেদ করে খনন না করলে কৃষি ক্ষেত বিলুপ্তি হয়ে যাবে। চরচন্ডি নদীর উৎপত্তিস্থলের বাসিন্দা হাজি সিতাব আলী জানান, চরচন্ডি ও বাসিয়া নদীর একটি মোড় ছিল। মানুষ নাম শুনলে ভয় পেত। এখানে অনেক নৌকা, বাঁশের ছাই আসলেই ডুবে যেত। দখল আর দুষনে বিলীন হয়ে এখন আর নদী নেই। একইভাবে বক্তব্য দিয়েছেন দশঘর ও দৌলতপুর দুই ইউনিয়ের শতাধিক কৃষক ও বয়স্ক লোকজন।
চরচন্ডি নদীর নাম ভুমি অফিসের রেকর্ড পত্রে আছে কিনা তা জানতে চাইলে উপজেলা ভুমি কর্মকর্তা কামরুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ভুমি অফিসের নাজির প্রশঞ্জিত ধরের কাছে পাটিয়ে দেন। নাজির প্রশঞ্জিত ধর এ প্রতিবেদককে জানান, চরচন্ডি নদী নামে কিছু নেই। চরচন্ডি খাল নামে একটি তথ্য কিছুদিন আগে জেলা প্রশাসকে দেয়া হয়েছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।