Inqilab Logo

রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

আগের চেহারায় উত্তরের নদ-নদী

সীমানার ওপারে সুইস গেট বন্ধ পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা

মহসিন রাজু | প্রকাশের সময় : ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০১ এএম

এক-দেড়মাস আগেও ফারাক্কা-তিস্তা ব্যারেজের গেট খোলা ছিল। ফলে অবাধে পানি আসাতে টইটম্বুর ছিল এখনও বেঁচে থাকা উত্তরের ৫০টির মত নদনদী। যখনই নদীর প্রবাহ কমতে শুরু করেছে ওমনি বন্ধ ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেমমুখী নদনদীর সুইস গেট। ফলে পানির অভাবে শীর্ণকায় অবস্থায় ফিরছে পদ্মা, মহানন্দা, ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা, ধরলা, করতোয়া, বাঙালী, ফুলজোড়, ছোট যমুনা, দুধকুমার, ইছামতিসহ ঐতিহাসিকভাবে পরিচিত উত্তরের সব নদনদী।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের একাধিক সূত্রে জানা গেছে, ১৯৭৪ সালে ফারাক্কা বাঁধ ও পরে তিস্তা ব্যারেজ চালুর পর থেকে উত্তরাঞ্চলের পূর্ব ও ৫০টির মত ছোট ছোট শাখা নদী কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। এইভাবে নদনদীর বিলুপ্তির ফলে এবং চাষাবাদের জন্য ভূ-গর্ভস্থ পানির অপব্যবহারের ফলে উত্তরাঞ্চলের ভূমিগর্ভে পানির স্তর নামতে নামতে এখন বিপজ্জনক পর্যায়ে উপনিত হয়েছে। বিশেষ করে বরেন্দ্র অঞ্চলের অবস্থা খুবই ভয়াবহ বলে বিশেষজ্ঞ মহলের অভিমত।

বগুড়া অঞ্চলের একাধিক জেলে পরিবারের সাথে কথা বলে জানা যায়, উত্তরাঞ্চলে জেলে সম্প্রদায়ের কয়েক লাখ মানুষ নদ-নদী ও প্রাকৃতিক খাল ও বিলের মাছ আহরণ করে সেগুলো বিক্রি করে জীবন ধারণ করতো। ওই জেলেরা কোন কোন এলাকায় ধীবর, কৈবর্ত বা মাঝি সম্প্রদায় বলে পরিচিত ছিল। তবে ৮০’র দশকের পর থেকে এখন বিলুপ্ত প্রায় জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন।

বগুড়া, নাটোর ও পাবনার সীমান্ত ঘেঁষা বিশাল চলন বিলকে বলা হতো মাছের খনি। শুষ্ক মৌসুম শুরু হলে অর্থাৎ নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে চলনবিল এলাকায় হাজার টন শুটকি তৈরি হতো। চলনবিলের শুটকি পশ্চিমবঙ্গ আসামেও ছিল জনপ্রিয়। এখন এই পানির অভাবে শুটকি কেন্দ্রীক অর্থনীতির অস্তিত্বই আজ বিলীনের পথে।
নদী কমিশনের সাথে সংশ্লিষ্ট এবং স্থানীয় এক এনজিওর নির্বাহী জিয়াউর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী ও সুশীল সমাজের নীরবতা বিস্ময়কর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যাক্তিগত আগ্রহ সত্ত্বেও নদী দখল ও দূষণের ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসনের ভূমিকা প্রশ্নবিদ্ধ। এক্ষেত্রে সামাজিক সচেতনতারও অভাব রয়েছে বলে মনে করেন তিনি ।

বগুড়া ইতহাস গবেষণা পরিষদের সেক্রেটারি সৈয়দ ফজলে রাব্বি ডলারের মতে, উত্তরাঞ্চলের প্রত্যেকটি নদ ও নদীর উচ্ছল প্রবাহের সাথে জড়িত রয়েছে জীব বৈচিত্রের সম্পর্ক। স্বাভাবিক প্রবাহ না থাকলে নদ-নদীর সাথে হুমকির সাথে পড়ে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী। কমে যায় জমির উর্বরা শক্তি। ব্যহত হয় কৃষি উৎপাদন। তার মতে ভারতের পানি আগ্রাসনের কারণে সৃষ্ট পরিবেশ বিপর্যয়ের দায় এড়াতে পারবে না কেউই।



 

Show all comments
  • নাজনীন জাহান ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৭:০২ এএম says : 0
    ভারত আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র তাদের নিয়ে বাজে কথা বলা যাবে না!!!!
    Total Reply(0) Reply
  • সোয়েব আহমেদ ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৭:০২ এএম says : 0
    ভারতের মতো নিষ্ঠুর ও স্বার্থপর জাতি আর একটাও বিশ্বে খুজে পা্ওয়া যাবে ন
    Total Reply(0) Reply
  • হাদী উজ্জামান ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৭:০৩ এএম says : 0
    একটা স্বার্থপর আর নিচু মানসিকতার দেশ কোথাও নেই
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ নাজমুল ইসলাম ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৭:০৩ এএম says : 0
    ভারতের ন্যাংটা স্বার্থপরতার কারণে কোনো প্রতিবেশীর সাথে ভালো সম্পর্ক নেই।
    Total Reply(0) Reply
  • জীবন সালাম ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ৭:০৪ এএম says : 0
    এখণ আবার বণ্যা শুরু হোক দেখবেন আবার গেট খুলে দিছে...নোংরা দেশ কোথাকার।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ ফজলুল হক ১ অক্টোবর, ২০২১, ১১:৪৩ এএম says : 0
    বাংলাদেশের সীমানায় আরেকটি বাধ নির্মান করলে ভারতকে উচিত শিক্ষ্যা দেয়াযাবে
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ ফজলুল হক ১ অক্টোবর, ২০২১, ১১:৪৪ এএম says : 0
    বাংলাদেশের সীমানায় আরেকটি বাধ নির্মান করলে ভারতকে উচিত শিক্ষ্যা দেয়াযাবে
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নদ-নদী

১১ জানুয়ারি, ২০২২
৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ