পবিত্র লাইলাতুল বরাত
আজ দিবাগত রাত পবিত্র লাইলাতুল বরাত। পরম করুণাময় আল্লাহতায়ালা তার বান্দাদের গুনাহ মাফ, বিপদমুক্তি ও
ড্রেনে পড়ে মৃত্যু কারো কাম্য নয়। চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক সময়ে ড্রেনে পড়ে দু’টি তাজা প্রাণ ঝড়ে গেছে। মাসখানিক পূর্বে একজন ব্যবসায়ী চট্টগ্রামের মুরাদপুরে ড্রেনের পানিতে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন। সর্বশেষ একজন নারী শিক্ষার্থীর ড্রেনে পড়ে মৃত্যুর সংবাদ পত্রিকায় পড়লাম। বাংলাদেশে কোনো না কোনো জেলাতে এভাবে অসংখ্য জীবন ড্রেনে পড়ে মৃত্যু হচ্ছে। কাউকে পাওয়া যাচ্ছে আবার কাউকে পাওয়াই যাচ্ছে না। এটা মর্মান্তিক মৃত্যু। এসব মৃত্যু অস্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে মনে করলেও কিন্তু কেউ মেনে নিতে পারছি না। ড্রেনতো সেটা পানি নিষ্কাশনের জন্য, সেটার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটা কর্তৃপক্ষ আছে। তাহলে কেনো ড্রেনে পড়ে মানুষের মৃত্যু হবে? ড্রেন এসব পানি নিষ্কাশনের যে নিয়মনীতি রয়েছে তার কী যথাযথভাবে কর্তৃপক্ষ দেখছে? বাংলাদেশে অসংখ্য ড্রেন রয়েছে, যা মানুষের কল্যাণের জন্য। শহর, বাড়ি, নগর রক্ষার জন্য। এগুলো পরিবেশ সমাজ নগরকে সুরক্ষা দেবে। কিন্তু এসব সুরক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে পড়ে মানুষ কেন মৃত্যুবরণ করবে? নালা বা ড্রেনগুলোতো সমাজের প্রয়োজন। কিন্তু এসব নালা বা ড্রেনে মানুষ কেন ময়লা আবর্জনা ফেলে পানি চলাচলকে বাধাগ্রস্থ করছে। নালা-ড্রেন দখল করে একশ্রেণির মানুষ দোকান ঘর, মার্কেট তৈরি করছে। সেটাও দূষণীয়। আবার নালাতে আবর্জনা ফেলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্থ করাও দূষণীয় অন্যায় এবং অপরাধ। সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদ যারাই এসব কার্যক্রমের দেখভাল করবেন তাদেরতো দায়িত্ব আছেই। তাদের উচিত ড্রেন বা নালা রক্ষণাবেক্ষণে যথাযথ তদারকী করা। নালার ময়লা-আবর্জনা যথাসময়ে পরিচ্ছন্ন রাখা। প্রতিবন্ধকতা দূর করা। জনগণের চলাচলের জন্য ড্রেনকে সঠিকভাবে তৈরি করা, রক্ষা করা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে। তাহলে এসব সেবা প্রতিষ্ঠান কেন তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করছে না। দুর্ঘটনার মাধ্যমে কেউ যদি ড্রেনে পড়ে মৃত্যুবরণ করে তখন প্রতিষ্ঠানগুলো নড়ে চড়ে বসে। সেটা হবে কেন? যে মানুষগুলো প্রতিদিন এসবের কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে, তাদের জন্য একটু দুঃখ প্রকাশ করাই কি এর সমাধান? মোটেও না, সভ্য সমাজে এসব মানায় না। হাজার হাজার ড্রেন রয়েছে এবং এগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের জন্য কর্তৃপক্ষের হাজার কোটি টাকার প্রকল্প আছে। তাহলে ওইসব ড্রেনে মানুষ মারা যাবে কেন? প্রকল্পের বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রিতা, অহেতুক বিলম্ব সময় পার করে জনভোগান্তি মেনে নেয়া যায় না। সিটি কর্পোরেশন, সিডিএ, ওয়াসা সবগুলো সেবা সংস্থাকে সমন্বিতভাবে উন্নয়ন কর্মকান্ড যথাসময়ে শেষ করা চাই। সচেতন মহল ড্রেনে পড়ে অযাচিত মৃত্যু কামনা করে না। এভাবে যারা সাম্প্রতিক সময়ে মৃত্যুবরণ করেছে তাদের প্রতি গভীরভাবে সমবেদনা জ্ঞাপন করছি। পাশাপাশি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাদের ক্ষতিপূরণের দাবি জানাচ্ছি।
মাহমুুদুল হক আনসারী
সংগঠক, গবেষক, কলামিস্ট।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।