Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

নিউজিল্যান্ডকে লজ্জায় ডুবিয়ে বাংলাদেশের প্রথম

নিউজিল্যান্ড : ১৬.৫ ওভারে ৬০ বাংলাদেশ : ১৫ ওভারে ৬২/৩ ফল : বাংলাদেশ ৭ উইকেটে জয়ী

স্পোর্টস রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ সেপ্টেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

শুরুতেই যখন মেহেদী হাসান, নাসুম আহমেদ ও সাকিব আল হাসানের ঘূর্ণিতে নিউজিল্যান্ডের টপঅর্ডার কুপোকাত (৪ উইকেটে ৯ রান), তখনই চোখের সামনে ভেসে ওঠে টি-টোয়েন্টিতে কিউইদের সর্বনিম্ন রানের স্মৃতিটি। ২০১৪ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ব্ল্যাকক্যাপসরা করেছিল ৬০ রান। গতকালও এই ৬০ রানেই আটকে যায় টম ল্যাথামের দল। সেবার লঙ্কান স্পিনার রঙ্গণা হেরাথের বিষমাখা বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারেনি তারা। আর এবার সেই হেরাথের শিষ্যদের কাছে সেই একই লজ্জার সাক্ষী হল দলটি। তাতে বাংলাদেশের বিপক্ষে এই স্কোরটা তাদের যৌথভাবে সর্বনিম্ন স্কোরের রেকর্ডে লেখা হয়ে গেলো।

সে ম্যাচে হেরাথ নিয়েছিলেন ৫টি উইকেট। গতকাল হেরাথের ছাত্ররাও (মেহেদী, নাসুম, সাকিব) নিয়েছেন ৫ উইকেট। অবশ্য স্পিন বোলিং কোচ হেরাথের প্রশংসা করলে পেস বোলিং কোচ ওটিস গিবসনের যেন একটু অবমূল্যায়নই হয়। তার দুই ছাত্র মুস্তাফিজুর রহমান (৩টি) ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনেরও (২টি) অবদান সামান ৫টি উইকেট। দুই কোচের ছাত্রদের নৈপুণ্যে ৬০ রানের বেশি তোলার সাধ্য হয়নি কিউই ব্যাটসম্যানদের। পরে ব্যাট হাতে বাংলাদেশকে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি ৭ উইকেটে জিততে। জয়ের রাস্তাটা খুব সহজ হলেও তাৎপর্যটা অনেক বড়। কিন্তু কেন? গতকালই আপনারা জেনেছিলেন নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটে এখনও জয়হীন বাংলাদেশ। এখন সেই অধরা জয়ট ধরা দিয়েছে ১০ হারের পর। ৫ ম্যাচ সিরিজেও এগিয়ে গেল ১-০তে। তাই এ জয়ের সঙ্গে মিশে আছে ‘প্রথম’-এর আনন্দ। কথায় আছে না-‘প্রথম’ প্রেম কখনও ভোলার নয়। ক্রিকেটার ও ক্রিকেটভক্তদের কাছে ‘জয়’ ও ‘প্রেমে’র মধ্যে কি আদৌ কোন পার্থক্য আছে?

শের-ই-বাংলা স্টেডিয়ামে টসে হেরে গেলেও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের মন খারাপ হতে দেননি তার ব্রিগেডের সমৃদ্ধ বোলাররা। প্রথম ওভার থেকেই মিরপুরের ২২ গজ বুঝিয়ে দিয়েছিল তার চরিত্র। অস্ট্রেলিয়া সিরিজ থেকেও মন্থর ও টার্নিং উইকেটে আনকোরা নিউজিল্যান্ড দল বেশিদূর এগুতে পারবে না সেই আভাসই মিলছিল। এগোয়নিও। প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই আসে সাফল্য। অভিষিক্ত রাচিন রবীন্দ্র শেখ মেহেদীর আচমকা লাফানো বল বুঝতেই পারেননি। ক্যাচ তুলে দেন বোলারের হাতে।

এক ওভার বিরতির পর তৃতীয় ওভারে আরেক উইকেট। সাকিবের হুট করে নিচু হয়ে যাওয়া বল টেনে বোল্ড হন উইল ইয়ং। চতুর্থ ওভারে এসে নাসুম আহমেদ হানেন জোড়া আঘাত। সøগ সুইপ করার সাহস দেখিয়ে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ধরা দেন ডিপ মিড উইকেটে। দুই বল পরই টম ব্লান্ডেল নাসুমের সোজা বলে ভাঙে উইকেট। মাত্র ৯ রানেই পড়ে যায় নিউজিল্যান্ডের ৪ উইকেট। ধুঁকতে থাকা কিউইরা পাওয়ার প্লের ৬ ওভার ওই ৪ উইকেট হারিয়ে আনতে পারে মাত্র ১৭ রান।

এরপরই জুটি বাঁধেন দলের বড় দুই ভরসা টম ল্যাথাম আর হেনরি নিকোলস। উইকেটের ভাষা বুঝে নিয়ে এক-দুই করে আগাতে থাকেন তারা। থিতু হয়ে গিয়েছিল দুজন। জুটিটা বড় হওয়ার আভাস দিতেই ফের বিপদ। সাইফউদ্দিনের লেগ স্টাম্পের বাইরের বল ফ্লিকের মতো খেলতে গিয়ে টাইমিং করতে পারেননি কিউই অধিনায়ক। ২৫ বলে ১৮ করা ল্যাথামের ক্যাচ যায় স্কয়ার লেগে। ক্রিজে এসে অভিষিক্ত কোল ম্যাককনকি টিকেছেন মাত্র ৩ বল। সাকিবের বলে ক্যাচ দেন মুশফিকুর রহিমের হাতে। পরের ওভারে ভরসা হয়ে থাকা নিকোলস সাইফউদ্দিনের বলে ধরা দেন মিড অনে। ফিজের সেøায়ারে এজাজ প্যাটেল বোল্ড হওয়ার পর ডগ ব্রেসওয়েল ফেরেন ক্যাচ দিয়ে। তাতে ৫৫ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে বসে নিউজিল্যান্ড।

এরপর শেষ দুই ব্যাটসম্যান যোগ করতে পারেন আরও ৮ রান। ইনিংসটা মুড়ে দেন মুস্তাফিজই। মিড অন থেকে পেছন দিকে দৌড়ে জ্যাকব ডাফির দুর্দান্ত ক্যাচ নেন সাইফউদ্দিন। গুটিয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। টাইগারদের পক্ষে মুস্তাফিজ সর্বোচ্চ ৩টি উইকেট নেন। এছাড়া নাসুম, সাকিব, সাইফউদ্দিন নেন ২টি করে উইকেট। একটি উইকেট শিকার করেন মেহেদী।

মামুলি লক্ষ্য তাড়ায় অবশ্য শুরুটা ভালো ছিল না বাংলাদেশের। ১ রানে করে ম্যাককঞ্চির বলে আউট হয়ে যান মোহাম্মদ নাঈম। এরপর লিটন দাসও ব্যক্তিগত ১ রানেই ফিরে যান আইজাজ প্যাটেলের বলে। দলীয় সংগ্রহ তখন ২ উইকেটে ৭। তখন ক্রিজে সাকিব-মুশফিক জুটি। দারুণ খেলছিলেন এ দুই অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান। কিন্তু ব্যক্তিগত ২৫ রানে রাচিন রাভিন্দ্রর বলে ক্যাচআউটে ফেরেন সাকিব। এরপর মাহমুদউল্লাহ-মুশফিকের ব্যাটে জয় তুলে নিতে অবশ্য কোন কষ্ট হয়নি স্বাগতিকদের। মুশফিকের ১৬ ও মাহমুদউল্লাহর ১৪ রানে অপরাজিত ইনিংসে ৩০ বল হতে রেখেই ৭ উউইকেটের জয় তুলে নেয় লাল-সবুজেরা। প্যাটেল, ম্যাককঞ্চি ও রাভিন্দ্র একটি করে উইকেট লাভ করেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: উইকেট

১৬ জানুয়ারি, ২০২২
১৮ অক্টোবর, ২০২১

আরও
আরও পড়ুন
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ