নারী দিবস ম্যারাথনে পাপিয়া চ্যাম্পিয়ন
‘নিরাপদ সমাজ, নিরাপদ নারী’-স্লোগানে অনুষ্ঠিত নারী দিবস রেগুলার ম্যারাথনে রেগুলার বাংলাদেশের পাপিয়া খাতুন চ্যাম্পিয়ন, হামিদা
ক্যারিয়ারে প্রথম ৫ উইকেট, সৈয়দ খালেদ আহমেদের ৯ টেস্টের ক্যারিয়ারের স্মরণীয়তম দিন। কিন্তু নিজের সাফল্য উদযাপন করার সুযোগ কোথায়, দলের যে যাচ্ছেতাই অবস্থা! তার ৫ উইকেট শিকারের রেশ মিলিয়ে যেতে সময় বেশি লাগেনি বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেট হারানোয়। খালেদেরও তাই মন ভালো নেই, তার মাইলফলক যে দলের খুব একটা কাজে দেয়নি!
এবারের ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর থেকে বাংলাদেশের সামান্য যা কিছু প্রাপ্তি, তা বলা যায় খালেদের বোলিং। অ্যান্টিগায় দলের পরাজয়ের টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। এবার সেন্ট লুসিয়ায় এক ইনিংসেই নিলেন ৫ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজে এই প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটের স্বাদ পেলেন বাংলাদেশের কোনো পেসার। পেসারদের আগের সেরা বোলিং ছিল ২০০৪ সালে, এই মাঠেই পেস বোলিং অলরাউন্ডার মুশফিকুর রহমানের ৬৫ রানে ৪ উইকেট। খালেদের এগিয়ে চলার আরেকটি প্রমাণ মিলল এই সফর ও এই টেস্ট থেকে। ক্যারিয়ারের প্রথম দুই টেস্টে উইকেটের দেখা পাননি তিনি, তৃতীয় টেস্টে পান প্রথম উইকেট। তিন টেস্ট শেষে বোলিং গড় ছিল ২৯১!
গত মার্চ-এপ্রিলে দক্ষিণ আফ্রিকা সফর থেকে উন্নতির ছাপ দেখা দেখা তার বোলিংয়ে। ডারবান টেস্টে প্রথম ইনিংসে ৯২ রানে নেন ৪ উইকেট। পরের টেস্টে পোর্ট এলিজাবেথে দুই ইনিংস মিলিয়ে নেন ৪ উইকেট। তার বোলিং বেশ নজর কাড়ে সেই সিরিজে। তবে দেশে ফিরে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে পারফরম্যান্স ছিল হতাশাজনক। দুই টেস্টে উইকেট নিতে পারেননি, এলোমেলো বোলিংয়ে রান দেন প্রচুর। ওই সিরিজ শেষে তার ক্যারিয়ার বোলিং গড় দাঁড়ায় ৮২.৪৪।
এই ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে আবার ঘুরে দাঁড়ালেন দারুণভাবে। গতপরশুর পারফরম্যান্সের পর তার বোলিং গড় এখন মোটামুটি ভদ্রস্থ, ৪৯.১৫। দিনের খেলা শেষে বিসিবির ভিডিও বার্তায় খালেদ জানালেন নিজের স্বস্তির কথা, ‘অনেক ভালো লাগছে যে ৫ উইকেট পেয়েছি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে। অনেক দিন ধরে চেষ্টা ছিল যে ৫ উইকেট কীভাবে নেওয়া যায়। আগেও একটা সুযোগ এসেছিল, মিস করে ফেলেছি। এটায় চেষ্টা ছিল যেন ৫ উইকেট হয়। খুব ভালো লাগছে। এটা ধরে রাখার চেষ্টা করব।’
খালেদের উইকেটের মধ্যে ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেঞ্চুরিয়ান কাইল মেয়ার্সের উইকেটও। গত বছর বাংলাদেশ সফরে টেস্ট অভিষেকে চতুর্থ ইনিংসে অসাধারণ এক ডাবল সেঞ্চুরিতে দলকে জেতানো মেয়ার্স এই ম্যাচে আবারও ভোগান্তিতে ফেলেন বাংলাদেশকে। তার ১৪৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস শেষ পর্যন্ত থামে খালেদের সেøায়ারে বিভ্রান্ত হয়ে ক্যাচ দিয়ে। এই উইকেটেই সবচেয়ে বেশি তৃপ্তি পেয়েছেন বলে জানালেন খালেদ, ‘প্রতিটি উইকেটই আমার জন্য ছিল স্পেশাল, প্রথমবার ৫ উইকেট পেয়েছি। বিশেষ করে মেয়ার্সের উইকেট ছিল অনেক কষ্টের ফল। গতকাল থেকে ওকে আউট করার চেষ্টা করেছিলাম। আজকে (পরশু) ওকে সেøায়ার বলে পরাস্ত করেছি, নিজের কাছে ভালো লেগেছে যে পরিকল্পনা করে আউট করতে পেরেছি।’
নিজের প্রাপ্তির দিনেও খালেদের মনে অস্বস্তির ছায়া দলের বাজে পারফরম্যান্সে। প্রথম ইনিংসে ১৭৪ রানে পিছিয়ে থাকা বাংলাদেশ এখনও ইনিংস হারের শঙ্কায়। তৃতীয় দিন শেষ করেছে তারা দ্বিতীয় ইনিংসে ৬ উইকেটে ১৩২ রান নিয়ে। বৃষ্টি কয়েক দফায় বাধা হয়ে না দাঁড়ালে তিন দিনেই হয়তো শেষ হয়ে যেত ম্যাচ। নিজের ভালো দিনে খালেদ তাই তাকিয়ে দলের ভালো দিনের দিকে। তার বিশ্বাস, সেই দিনটি আসবে দ্রুতই, ‘সব ক্রিকেটারের ইচ্ছা থাকে, তার মাইলফলক যেন ‘ইম্প্যাক্টফুল’ হয়, দলের লাভ হয়। টেস্ট ক্রিকেটে হয়তো আমাদের ভালো সময় যাচ্ছে না। তবে সামনে অনেক সময় আসবে, অনেক ভালোভাবে হবে। সবাই জানপ্রাণ দিয়ে চেষ্টা করছে, নিজেকে কীভাবে আরও ভালোভাবে মেলে ধরা যায়। সব বিভাগেই আমাদের উন্নতি করার জায়গা আছে, বোলিং বলেন বা ব্যাটিং-ফিল্ডিং। ম্যানেজমেন্ট আমাদেরকে নিয়ে অনেক কষ্ট করছেন। সবার আমাদের পেছনে কাজ করছেন। সবাই চেষ্টা করছে ভালো করা। ইনশাঅল্লাহ, সামনে ভালো সময় আসবে।’
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।