Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

করোনাকালে মুটিয়ে যাওয়া বাচ্চা

| প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২১, ১২:০৪ এএম

প্রত্যেক বাবা-মা চান তার বাচ্চা যেন সুস্থ্য ও স্বাস্থ্যবান হয়। তবে মোটা-সোটা বাচ্চা মানেই যে স্বাস্থ্যবান এ কথা একেবারেই ভুল। বাচ্চাদের যদি অতিরিক্ত ওজন হয় তবে ভবিষ্যতে ডায়াবেটিসের মত জটিল অসুখ হবার সম্ভাবনাও থাকে।

বাচ্চাদের অতিরিক্ত ওজন হবার বিভিন্ন কারণ আছে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ ওভার ফিডিং। ওভার ফিডিং হছে বাচ্চাকে প্রয়োজনের তুলনায় জোর করে বেশী খাওয়ানো। আবার বেশী খেয়ে দেয়ে কম নড়াচড়া করাটাও একটা কারন। এই করোনাকালে স্কুল বন্ধ, বাসায় ডিভাইস নিয়ে ক্লাস করা। সারাদিন একটা ডিভাইস নিয়ে বসে থাকা। ফাস্ট ফুডে অভ্যস্ত হয়ে যাওযার কারনেও ওজন বাড়ছে। বাচ্চাদের ওজন বেড়ে যাবার আরেকটি কারণ হাইপোথাইরয়ডিজম। হাইপোথাইরয়ডিজমে থাইরয়েড হরমোন কম তৈরী হয়, যার ফলে বিপাক কমে যায় এবং ওজন বাড়তে শুরু করে। কিডনীর সমস্যার জন্যও বাচ্চার মুখ, হাত, পা ফুলে যায়। ফলে দেখতে অনেক মোটা লাগে এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখা যায়। বংশগত কারণেও কিন্তু অনেক বাচ্চা মোটা-সোটা হতে পারে। এছাড়া দেহে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদানের ঘাটাতি হলেও শরীরে পানি জমে বাচ্চাকে মোটা দেখাতে পারে।

বাচ্চার ওজন যদি স্বাভাবিক ওজনের ২০% বেশী হয় তবে বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি থাকে। এসব অসুখ শৈশব-কৈশোরে দেখা যেতে পারে। আবার ভবিষ্যতেও হতে পারে। ওভারওয়েট থেকে ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস, হার্টের অসুখ, ফুসফুসের অসুখ, অস্টিওআর্থ্রাইটিস, গলব্লাডার স্টোন বা পিত্তথলিতে পাথর, ফ্যাটি লিভার ডিজিজ ইত্যাদি হতে পারে। এছাড়া ওজন বেড়ে গেলে কাজের স্পৃহা কমে যায় এবং মানসিক হতাশার সৃষ্টি হয়। বাচ্চার ওজন বেড়ে গেলে অন্য বাচ্চারা তাকে নিয়ে হাসি-তামাশা করে বলে বাচ্চাদের বিভিন্ন মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত ওজন থেকে বাচ্চাকে বাঁচাতে হলে প্রথমেই বেশী খাওয়ানো বন্ধ করতে হবে। কারণ, বাচ্চার ওজন বেড়ে যাওয়ার প্রধান কারণ অতিরিক্ত খাওয়ানো। ছোট বয়স থেকেই নিয়ম মেনে খাওয়ানো উচিত। প্রায় সব বাচ্চাই চকলেট, কোল্ড ড্রিংকস, আইসক্রিম, বিস্কুট, চিপস পছন্দ করে। এগুলো বেশী দেওয়া উচিত নয়। বাচ্চাদের ফল ও শাক-সবজী বেশী দিতে হবে। খেলাধূলার প্রতি উৎসাহ দিতে হবে। নিজের কাজ নিজে করার জন্য বলতে হবে। কোন অসুখের কারণে ওজন বেড়ে গেলে তার চিকিৎসা করা উচিত।

সুস্থ বাচ্চা সবার কাম্য। তবে এর জন্য চেষ্টা করতে হবে। বাচ্চার খাবারের দিকে নজর রাখতে হবে। কারণ, মোটা-সোটা বাচ্চা ভবিষ্যতে নানা সমস্যার সৃষ্টি করবে। সবার চাওয়া একটাই, আমরা একটা সুস্থ্য জাতি হিসেবে বেড়ে উঠব।

ডাঃ মোঃ ফজলুল কবির পাভেল



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: করোনাকাল


আরও
আরও পড়ুন