২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত মোটা হবেন ৪০০ কোটি মানুষ
২০৩৫ সালের মধ্যে মাত্রাতিরিক্ত ওজন বা মোটা হবেন বিশ্বের অর্ধেকেরও বেশি মানুষ। সংখ্যার বিচারে যা
করোনা মহামারীতে বিপর্যস্ত পুরো বিশ্ব। আবারো করোনার প্রভাব প্রকট হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা রোগী আর মৃত্যুর সংখ্যা। তাই রোগের চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধ করা ভালো। রোগ হলে রোগীর কষ্ট, চিকিৎসা, ওষুধ ইত্যাদিতে অনেক ঝামেলা পোহাতে হয়। আমাদের দেহের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৩৭ সেন্টিগ্রেড (সেলসিয়াস) তাপমাত্রা যখন এর চেয়ে বেশি হয়। তখন আমরা জ্বর বলি। জ্বর নিজে কোনো রোগ নয়, অন্য কোনো রোগের উপসর্গ মাত্র। উল্লেখ্য, ভাইরাস কিংবা ব্যাক্টেরিয়াজনিত সংক্রমণ হলে সাধারণত জ্বর হয়। জ্বর হলো একটা প্রতিরক্ষাব্যবস্থা যা শিশুকে সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সাহায্য করে। তবে জ্বর যে কারণেই হোক জ্বরের চিকিৎসা করা প্রয়োজন।
আমাদের পরিবারের বড়দের অসুখ-বিসুখ হলে খুব অসুবিধা হয় না। কিন্তু বাড়ির কোনো শিশু অসুস্থ হলে পরিবারে অশান্তি নেমে আসে। শিশুরা সুস্থ থাকলে পরিবারের সবাই সুখী থাকে। তাই শিশুস্বাস্থ্য সর্ম্পকে বাবা-মা ও বড়দের সচেতন থাকতে হয়। আজ আমার আলোচ্য হলো- হঠাৎ যদি শিশুর জ্বর আসে তাহলে করণীয় কি? চিকিৎসকরা বলেন, শিশুর হঠাৎ জ্বর হলে উদ্বিগ্ন হবেন না। বিচলিত হবেন না। ধীরে ধীরে অগ্রসর হোন। শিশুর ডায়রিয়া, ফুসফুস সংক্রমণ বা নিউমোনিয়া বা ম্যালেরিয়া হলে উদ্বিগ্ন হওয়া স্বাভাবিক। তবে চিকিৎসকের পরামর্শ পালন করলে সমস্যা মুক্ত হওয়া সম্ভব। ধৈর্য ধারণ করা প্রয়োজন। শিশুর জ্বর হলে মাথা পানি দিয়ে ধুয়ে দিন। সারা শরীর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দিন। চামচ দিয়ে পানি তরল খাবার মুখে দিন। পিপাসা থাকতে পারে। কপালে জলপট্টি দেয়া যেতে পারে। জ্বর বেশি থাকলে আইসব্যাগ মাথায় ধরা যায়। জ্বর যদি ওঠা-নামা বা হ্রাস বৃদ্ধি হয় তবে ২৪ ঘন্টা জ্বর ওঠা-নামার একটা রেকর্ড রাখুন। থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মাপা যায়। মেপে লিখে রাখলে চিকিৎকের জন্য সুবিধা হয়।
শিশু জ্বরে জ্ঞান হারালে বা কান্নাকাটি করলে যথাশিগগির কোনো ডাক্তার বা ক্লিনিকে নিয়ে যান। জ্বর যদি ১০১ ডিগ্রির বেশি হয় বা তার উপরে ওঠে তাহলে শিগগির ডাক্তার দেখান। ঘরে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ থাকরে খাওয়াতে পারেন। পরিমাণ জেনে নেবেন ডাক্তারের কাছ থেকে। তবে কারো কথামতো অ্যাসপিরিন খাওয়াবেন না। যদি ম্যালেরিয়া না হয়, তবে জ্বরের সময় খালি গায়ে খোলামেলা রাখুন। প্রাপ্ত বয়স্ক হলে পাতলা গেঞ্জি বা শার্ট পরাবেন। খালি গায়ে থাকলে জ্বর তাড়াতাড়ি নেমে যাবে। বার বার শরীর ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে দিতে হয়। বেশি তাপ উঠলে মাথায় আইস ব্যাগ রাখতে হবে। ঘরে ফ্যান থাকলে চালিয়ে দেয়া যায়। টেবিল ফ্যান থাকলে মাথার কাছে রাখলে ভালো লাগবে। শীতকালে ফ্যান চালানো যাবে না। গায়ে কাপড় বা চাদর দিতে হবে। ম্যালেরিয়া হলে লেপ-কাঁথা লাগতে পারে। আক্রান্ত শিশুকে লেবুর শরবত ও ডাবের পানি দিতে হবে। তবে বেশী গরম দুধ খাওয়ানো ঠিক হবে না। জিহ্বায় বরফের টুকরা ধরে রাখলে জ্বর কমে।
মনে রাখবেন, শিশুর জ্বর আসার সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তারের কাছে নেয়ার দরকার নেই। ২৪ ঘন্টা পর্যবেক্ষণ করুন। তবে হঠাৎ ১০৪ ডিগ্রি উঠে গেলে যথা শিগগির ডাক্তার দেখানো দরকার। অন্যথায় বার বার থার্মোমিটার দিয়ে জ্বর মেপে দেখতে হয়। স্বাভাবিক খাবার খেতে দিন। আল্লাহর রাসূল সা. বলেন, জ্বর হলো দোযখের আগুনের তাপ। কারো জ্বর হলে পুকুর ঘাটে বা টিউবওয়েলের নিচে বসিয়ে মাথায় পানি ঢালা দরকার। অবশ্য রোগী যদি প্রাপ্ত বয়স্ক হয়, গোসলও করানো যায়। গোসলের পর শরীর ভালো করে মুছে পাতলা জামা কাপড় পরিয়ে ঘুমাতে দিন। সুস্থ হয়ে যাবে। স্বাভাবিক খাওয়া দাওয়া চলবে।
ডা: মাও: লোকমান হেকিম
শিক্ষক-কলামিস্ট, মোবাইল: ০১৭১৬২৭০১২০।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।